শিশু অসুস্থ থাকা অবস্থায় টিকা দেওয়া যায় কি না, কোনো কারণে তারিখ পেরিয়ে গেলে কি করতে হবে? সময়মতো টিকা না নিলে কি হতে পারে?

শিশুর জন্মের এক বছরের মধ্যে আবশ্যক যে টিকাগুলোর সম্পূর্ণ কোর্স শেষ করতে হয় সেগুলো হচ্ছেঃ বিসিজি (যক্ষ্মা), পোলিও, ডিপিটি (ডিপথেরিয়া-হুপিংকাশি-ধনুষ্টঙ্কার), হেপাটাইটিস বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি, হাম, নিউমোকক্কাল-জনিত নিউমোনিয়া, রুবেলা টিকা। এ ছাড়া রয়েছে টাইফয়েড, বসন্তসহ অন্যান্য কিছু টিকা, যা বাধ্যতামূলক নয়। . সময়সূচি অনুযায়ী সব টিকা নিলে শিশু ওপরে লেখা রোগগুলো থেকে রক্ষা পাবে। সময়মতো টিকা না নিলে মারাত্মক সংক্রামক রোগগুলোর বিরুদ্ধে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি না-ও হতে পারে।

এতে শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। এমনকি অনেক সময় মৃত্যুর ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। . ছোটখাটো অসুস্থতা যেমন জ্বর, বমি, ডায়রিয়া ইত্যাদি কারণে টিকাদান স্থগিত করার কারণ নেই। মারাত্মক অসুস্থ শিশু, খিঁচুনি হচ্ছে এমন শিশু এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল যেমন কেমোথেরাপি গ্রহণকারী বা এইচআইভি আক্রান্ত শিশুকে টিকা না দেওয়াই উচিত। যেসব শিশুর স্নায়ুরোগ আছে, তাদের ডিপিটি না দিয়ে ডিটি দেওয়াই ভালো। . টিকাদান সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ > একই টিকার দুটি ডোজের মধ্যে কমপক্ষে ২৮ দিনের বিরতি থাকা উচিত।

২৮ দিনের আগেই একই টিকার ২য় ডোজ গ্রহণ করলেও তা প্রথম ডোজ হিসেবেই গণ্য হবে। > একই দিনে একাধিক টিকা দেওয়াতে কোনো সমস্যা নেই। > কোনো কারণে তারিখ পার হয়ে গেলে পোলিও, ডিপিটি, হেপাটাইটিস বি তারিখের অনেক > পরে এমনকি এক বছর পরে দিতেও সমস্যা নেই। > পোলিও টিকা মুখে খেতে হয় বলে ওই সময়ে ডায়রিয়া থাকলে শিডিউলের ডোজ খাওয়ানোর পরও ২৮ দিন বিরতিতে একটি অতিরিক্ত ডোজ খাওয়ানো হয়।

> বিসিজি টিকা দেওয়ার এক মাসের মধ্যে টিকার স্থানে ঘা হওয়ার কথা। ঘা হলে ভয়ের কিছু নেই। বরং না হলে পুনরায় টিকা দিতে হয়। > ৯ মাস বয়সের আগে হামের মতো র‍্যাশ হয়ে থাকলেও যথাসময়ে মানে নয় মাস পূর্ণ হলেই হামের টিকা দেবেন। > টিকা দেওয়ার পর অনেক সময় জ্বর আসতে পারে। এতে ভয়ের কিছু নেই। অনেক জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। . লেখকঃ আল-আমিন মৃধা সহযোগী অধ্যাপক , শিশু বিভাগ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

Sharing is caring!

Comments are closed.