গর্ভাবস্থায় কফি!

অনেক গর্ভবতী মা কফি খাবেন কিনা তা নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন। এই ব্যাপারে বিশেষজ্ঞগণ ভিন্নমত পোষণ করেন, যেহেতু কফির মুল উপাদান ক্যাফেইন ভ্রূণ বা ফিটাস (গর্ভের শিশুর অঙ্গ গঠন শুরু হওয়ার ধাপ) এর ক্ষতি করতে পারে এমন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তবে প্রায় সকল বিশেষজ্ঞগণ একমত যে গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের কফি গ্রহণের হার অনেকাংশে কমিয়ে দেওয়া উচিৎ।

কফি একটি ডাই-ইউরেটিক পানীয়। অর্থাৎ কফি গ্রহণে প্রস্রাবের উৎপাদন এবং প্রবণতা বেড়ে যায়। এর ফলে আপনাকে ঘন ঘন শৌচাগারে ছুটে যেতে হবে। এছাড়াও এটি শরীর থেকে ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য পুষ্টিগুণ চুষে নেয়। এভাবে এটি শরীরে পুষ্টিগুণের ভারসাম্য কিছুটা হলেও নষ্ট করে। তদুপরি কফির মুল উপাদান ক্যাফেইনের তেমন কোন উল্লেখযোগ্য পুষ্টিগুণ নেই। এটি আপনার মুড, ঘুমের নিয়মিত অভ্যাস এবং আয়রন শোষণের ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।

আপনার যদি ক্যাফেইন গ্রহণের দরকার হয় বা ইচ্ছা থাকে, তাহলে আপনি প্রয়োজনীয় ক্যাফেইন চা এবং অন্যান্য সফট-ড্রিংক থেকেই পেতে পারেন। কফিতে উচ্চমাত্রার ক্যাফেইন থাকে এবং তা অবশ্যই অপ্রয়োজনীয়, বিশেষ করে একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য। এমনকি, যদিও এখনো প্রমাণিত হয় নি, তবে প্রতিদিন ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন গ্রহণের সাথে গর্ভপাতের এবং প্রিম্যাচিউর শিশুর জন্মানোর সম্পর্ক পাওয়া গেছে।

আপনি কফিতে অভ্যস্ত হয়ে গেলে চট করেই কফি গ্রহণ ছেড়ে দিতে পারবেন না। তবে আপনি যেটা করতে পারবেন সেটা হচ্ছে ধীরে ধীরে কফি গ্রহণের মাত্রা কমিয়ে দেওয়া। যেমন আপনি যদি আগে দিনে দুই বেলা এক মগ করে দুইবার দুই মগ কফি পান করতেন, এখন দিনে দুই বেলা আধ মগ করে দুইবার এক মগ কফি পান করতে পারেন। এভাবে ক্রমাগত কফি পানের মাত্রা কমিয়ে আনতে পারেন। একসময় দুই বার কফি পান না করে এক বারেই অভ্যস্ত হয়ে উঠবেন। আপনি যদি এতটাই আসক্ত হয়ে পড়েন যে কফি গ্রহণের উপর আপনার কর্মদক্ষতা নির্ভর করে এবং পান না করলে যথেষ্ট শক্তি এবং উদ্যম পান না, তবে আপনি হালকা কিন্তু পুষ্টিকর খাবার কাজের ফাঁকে ফাঁকে অল্প করে খেতে পারেন। এছাড়া বিশুদ্ধ ফলের রস এবং অন্যান্য হার্বাল চা আপনাকে প্রয়োজনীয় শক্তি এবং উদ্যম সরবরাহ করবে। যদিও হার্বাল চা কোন ক্যাফেইন সরবরাহ করে না, তবে এটি অন্যগুলোর সাথে কাজ করে আপনাকে উদ্যম ও শক্তি সরবরাহ করবে।

Sharing is caring!

Comments are closed.