বাচ্চার মাথার ত্বক ও চুলের যত্ন
শিশুর মাথার ত্বক এবং চুল খুবই সংবেদনশীল। তাই বাবা মার শিশুর যত্নে বাচ্চার মাথার ত্বক ও চুলের প্রতি যথেষ্ট যত্নশীল হতে হবে। শিশুর চুল সম্পর্কে অনেক ধরনের ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত আছে। তাই বাচ্চার মাথার ত্বক ও চুলের যত্নে কুসংস্কার বাদ দিয়ে আজকের টিপসগুলো ফলো করুন।
১) গোসলের সময়
শিশুর মাথার ত্বক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য গোসলের কোন বিকল্প নেই। শিশুকে হালকা গরম পানিতে গোসল করালেও মাথা ধোয়ানোর সময় স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি ব্যবহার করতে হবে। শিশুর মাথায় খুশকি হলে তা ভালো হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত শিশুর চুলে তেল দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
শিশুর মাথায় পানি ঢালতে হবে আস্তে আস্তে আর আঙ্গুল দিয়ে শিশুর চুল আঁচড়ানোর মত করে শিশুর মাথার ত্বক পরিষ্কার করে দিতে হবে।
২) শিশুর হেয়ার স্টাইল
বাবা মায়ের শিশুর চুল আঁচড়ানোর দিকে ভালভাবে খেয়াল রাখতে হবে। গরমে শিশুর হেয়ার স্টাইল এমন হওয়া উচিৎ, যাতে শিশুদের জন্য আরামদায়ক হয়। হেয়ার স্টাইলের জন্য শিশুদের পছন্দের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। শিশুরা যে হেয়ার স্টাইলে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে এমন কাটই দেওয়া ভালো। এছাড়া শিশুর মুখের গঠন ও আকৃতির ওপর ভিত্তি করে হেয়ার স্টাইল দেওয়া যেতে পারে।
৩) শ্যাম্পু করা
ছোট শিশুরা সবসময় খেলাধুলা আর দোড়াদোড়িতে মেতে থাকে। তখন শিশুর চুলে বাইরের ধুলাবালি লেগে যায় খুব বেশি। চুলের সৌন্দর্য বজায় রাখতে প্রতিদিন চুল ভালভাবে শিশুদের উপযোগী শ্যাম্পু দিয়ে ধুতে হবে। কারণ বড়দের শ্যাম্পুতে ব্যবহৃত উপাদান বাচ্চাদের জন্য সহনশীল নয়। বাচ্চাদের চুলে প্রতিদিন শ্যাম্পু করার প্রয়োজন নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সপ্তাহে একদিন শ্যাম্পু করানোই যথেষ্ট।
৪) তেলের ব্যবহার
শিশুদের তেলের ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাড়তি যত্ন নিতে হবে। সব ধরনের তেল শিশুদের জন্য উপযোগী নয়। বাচ্চাদের মাথার ত্বকে এক্সট্রা ভার্জিন গ্রেড নারকেল তেল অল্প পরিমাণে ব্যবহার করতে পারেন। তবে বাচ্চার মাথায় সরিষার তেল ব্যবহার করা উচিৎ নয়।
৫) গরমে শিশুর চুলের যত্ন
গরমের আবহাওয়াতে শিশুরা সবচাইতে বেশি সমসার সম্মুখীন হয়ে থাকে। অতিরিক্ত গরমের কারনে শিশুর মাথায় ঘাম হতে থাকে। এই ঘাম ঠিক সময় মুছে না দিলে শিশুর ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে। ফলে সর্দি, কাশি শিশুদের লেগেই থাকে। তাই গরমকালে শিশুদের জন্য চায় বাড়তি যত্ন। অতিরিক্ত গরমে চুলের ত্বকে খুশকি বা ঘামাচি দেখা দিতে পারে। তাই শিশুকে দিনে অন্তত একবার চুল ধুয়ে দিতে হবে। গরমের দিনে চুল ছোট করে কেটে দিতে হবে। গরমে চুল যতটা সম্ভব ছোট রাখাই ভাল।
ht: 500;”>৬) শীতে চুলের যত্ন
শীতে বাচ্চাদের চুলের যত্ন অন্য কোন ঋতুর চাইতে খানিকটা আলাদা। শীতে বাচ্চাদের ঘন ঘন গোসল করানো যায় না। তবে দিনে একবার অন্তত বাচ্চাদের গোসল করাতে পারলে ভাল ফল পাওয়া যায়। শীতে চুল একটু বড় থাকে বলে বাচ্চাদের মাঝে মাঝে শ্যাম্পু করাতে হবে। আবার শীতকালে অতিরিক্ত ধুলোবালির কারনে শিশুর চুলের ক্ষতির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। গোসলের পর বাচ্চাকে নিয়ে হালকা রোদে বসতে পারলে মাথার চুল ভালভাবে শুকিয়ে যায়।
৭) ডাক্তারের পরামর্শ
শিশুদের চুলের ও মাথার ত্বকের যত্নে বাবা মার সবসময় অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। বাচ্চাদের জন্য সাবান, শ্যাম্পু ও তেল ব্যবহারের আগে শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারলে ভালো। এছাড়াও শিশুর চুলে চুলকানি বা র্যাশ হলে সাথে সাথে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। তেল বা শ্যাম্পুতে সমস্যা হলে এগুলোর ব্যবহার বন্ধ করে দিতে হবে।
পরিশিষ্ট
প্রতিটি বাবা মায়ের উচিৎ শিশুর সারা শরীরের যত্নের পাশাপাশি মাথার ত্বক ও চুলের উপযুক্ত যত্ন নেয়া। এর ফলে বাচ্চার মধ্যে অস্বস্তি ভাব কমে আসে। বাচ্চা আরও অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে যা বাচ্চার বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে। চুলের যত্নে প্রয়োজনীয় করনীয়গুলো বাবা মার সঠিকভাবে মেনে চলা উচিৎ। চুলের সঠিক পরিচর্যা সারা শরীরের পরিচর্যাকে আরও অনেক বেশি ফলপ্রসূ করে তোলে।