আপনার সন্তান হোক আপনার বাধ্য

আমরা এ যুগের বাবা মায়েরা আমাদের সন্তানদের নিয়ে এত বেশী চিন্তিত থাকি বোধ করি এ চিন্তার ফলশ্রুতিতেই আমাদের সন্তানের উপরে আমাদের বিভিন্ন বাড়াবাড়ি আর অত্যাচার রোজ বেড়েই চলে এবং ছেলেমেয়েরা ও ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে একটা সময়ে আর আমাদের কোন কথাই শুনতে চায় না।

তাই কিভাবে আমাদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে আমাদের ছেলেমেয়েদের আমাদের বাধ্য রাখবো,চলুন জেনে নিই কিছু টিপস।

১. প্রথমেত তাদের পর্যাপ্ত সময় দিন।এর কোন বিকল্প নেই আসলে।আপনি যত বেশী আপনার ছেলেমেয়েদের সময় দিবেন তত বেশি ওরা আপনার কাছাকাছি থাকবে এবং আপনার কাছ থেকে ভালো কিছু শেখার সুযোগ পাবে।

২. তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন।যত ব্যস্তই থাকুন না কেন ছেলেমেয়েদের যে কোন কথা মনোযোগ দিয়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যত্ন সহকারে শুনবেন সবসময়। 

৩. যে কোন কিছু কেনাকাটা, খাওয়া দাওয়ায় এমনকি দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন খুটিনাটি বিষয়ে আপনার ছেলেমেয়েদের তাদের পছন্দ,অপছন্দ এবং মতামত প্রকাশ করার সুযোগ দিন।তাদের বুঝতে দিন যে তারা আপনার কাছে আসলেই কতটা প্রায়োরিটি পায়।

৪. কথায় কথায় যেখানে সেখানে তাদের সাথে চীৎকার চেচামেচি করবেন না।তিরস্কারপূর্ণ কোন ইঙ্গিত দিয়ে তাদের সাথে কিছু বলবেন না।কথায় কথায় এরকম বিরুপ প্রতিক্রিয়া আপনি যদি আপনার ছেলেমেয়েদের দেখান তাহলে তারা আর আপনাকে তাদের বন্ধু ভাববেনা,বরংচ প্রতিপক্ষ ভেবে দিনে দিনে আপনার বিপক্ষে শক্ত মনোভাব পালন করতে থাকবে।

৫. ছেলেমেয়েদের শরীর কখনো হাত দিবেন না।আপনি বড়,আপনার শক্তি বেশী তাই কথায় কথায় ছেলেমেয়েদের গায়ে হাত দেবার অভ্যাস থাকলে এমনিতেই একদিন ছেলেমেয়েদের থেকে আপনার দূরত্ব অনেক বেড়ে যাবে আর ছেলেমেয়েরা ও আপনার কোন কথাই আর শুনবেনা।

৬. ছেলেমেয়েদের সাথে এক কথা বারবার বলবেন না।যে কোন কথা একবার বলবেন এবং না শুনলে এমনভাবে সামান্য রিএক্ট করবেন যেন পরবর্তীতে কোন কথা একবার বললেই ওরা সেটার গুরুত্বটা বোঝে। 

৭. ছেলেমেয়েদের আত্নসন্মানের দিকে সবসময় খেয়াল রাখুন।অন্যকারো উপস্থিতিরে কখনো তাদের কে অপমানজনক কোন কথা বলবেন না।এতে তারা লজ্জিত হয় এবং নিজের মানসিক বিকাশ থেকে দুরে সরে আসে।

৮. যা আপনি পারবেন না,তাদের কখনো করতে বলবেন না।এতে ছেলেমেয়ের মনে দ্বিধার সৃষ্টি হয় এবং সহজেই আপনাকে ওদের ভুল বোঝার প্রবণতা বাড়ে।

৯. ছেলেমেয়েদের সাথে কখনো মিথ্যা কথা বলবেন না।যে অভ্যাস আপনি ওদের সামনে করবেন ন্যাচারালি ওরা ও সেটাই শিখবে এবং ভবিষ্যতে সেটাই করবে। তাই এমন কিছু ওদের সামনে আপনি করবেন না যেটা আসলে করাটাই অনুচিত।

১০. আপনার ছেলেমেয়েদের সকল প্রশ্নের উত্তর দিন।ছেলেমেয়েদেরা সারাক্ষণই একটার পর একটা প্রশ্ন করতেই থাকে, এটা ওদের শিশু সুলভ কৌতুহল। তাই তাদের সকল প্রশ্নের উত্তর আপনি অবশ্য দিবেন।

১১. জেনারেশন গ্যাপ মিটিয়ে ফেলুন।আপনারা হ্যান করেছেন ত্যান করেছেন তাই আপনার ছেলেমেয়েরা ও সেসব করবে,এই চিন্তা থেকে একেবারে বের হয়ে আসুন।এখন যুগ পাল্টেছে সময় ও আর আগের মত নেই, তাই আপনার এসব অমূলক চিন্তাগুলো জলদি বাদ দিন।

১২. পরিশেষে প্রতিদিন নিয়ম করে আপনি নিজেও ধর্মীয় চর্চা করুন,এবং আপনার ছেলেমেয়েদের ও পালন করতে উৎসাহ দিন।
উপরের সমস্ত চর্চা গুলি আপনার অভ্যাসে নিয়ে আসুন দেখবেন আপনার ছেলেমেয়ে আপনার কাছে কতটা লক্ষ্মী আর বাধ্য হয়ে গেছে।

ভালো থাকবেন, ভালো রাখবেন।
ধন্যবাদ।

CLTD: Womenscorner

Sharing is caring!

Comments are closed.