আপনার সন্তানকে মানুষ করার শুধু শিক্ষকের না, আপনারও

আধুনিক আর ডিজিটাল যুগের কিছু অতি আধুনিক বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের দামি স্কুল আর প্রাইভেট টিউটর এর কাছে ভর্তি করিয়েই নিজেদের দায়িত্ব শেষ বলে ভাবেন। বইয়ের মুখস্ত বিদ্যার পাশাপাশি সন্তানদের বাইরের জগৎ সম্পর্কে জানাতে হবে এটা তারা জানে কিন্তু সেই দায়িত্ব শুধু প্রাইভেট টিউটরের। উনাদের না। বাচ্চার লিখা সুন্দর না। লিখা সুন্দর করতে হবে। দায়িত্ব স্কুল আর প্রাইভেট টিউটর এর। উনাদের না!

প্রতিটা বাচ্চাকে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তুলতে চান প্রতিটি বাবা-মা। কিন্তু তারা এটা হয়তো একেবারেই ভুলে যান তাদের সন্তান কে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা কোন দামী স্কুল বা অনেক টাকা খরচ করে নিয়োগ করা প্রাইভেট টিউটরের একার দায়িত্বের মধ্যে পরে না।

বাবা-মা হলো একজন মানুষের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক। যেই বাচ্চাটা আপনাকে দেখে হাঁটতে শিখে, আপনি যেমন করে চলেন বলেন তেমন করে চলতে বলতে শিখে, আপনার প্রতিটি পদক্ষেপ লক্ষ্য করে, দিন-রাতের ২৪ ঘন্টার মধ্যে যে আপনার সাথে থাকে ১৭ থেকে ১৮ ঘন্টা সেতো আপনার থেকেই জীবনের আসল শিক্ষাটা পাবে। তা না আপনি আশায় থাকেন এক ঘন্টায় আপনার অনেক টাকায় নিয়োগ করা প্রাইভেট টিউটর আপনার বাচ্চাকে সব শিখিয়ে পড়িয়ে দিতে পারবে।

প্রাইভেট টিউটর বা স্কুলে বিনিময়ের মাধ্যমে আপনি আপনার সন্তানের জন্য শিক্ষা কিনে দিতে পারলেও যেই শিক্ষাটা আপনার দেয়ার কথা সেটা আপনাকেই দিতে হবে। সেই শিক্ষা প্রদানের কাজটা, নিজের ভাগের দায়িত্বটুকু অন্যের ভাগে দেয়ার চিন্তা না করে নিজে চেষ্টা করুন। ফলাফল টা ভালোই আসবে।

মনে রাখতে হবে দিনের ২৩ ঘন্টায় এক পড়া শিখে বাকী এক ঘন্টায় অন্য পড়া শিখতে চাইলে সেটা কখনোই সম্ভব হবে না। তাই সন্তান কে জীবনের প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হলে স্কুল আর অন্যান্য উপায় এর চেয়েও সবচেয়ে জরুরী হলো বাবা-মা থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা। বাবা-মায়ের থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা ভালো হলে সন্তান অবশ্যই প্রকৃত মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারবে।

অনুরোধ এতটুকুই স্কুল আর প্রাইভেট টিউটর এর উপর সম্পূর্ণ দায়িত্ব না দিয়ে নিজেরাও সন্তানদের সময় দিন, ভালো -খারাপ টুকু বুঝতে শিখান, বড়দের সম্মান করতে শিখান। দিনশেষে একতাই বল কথাটি মনে রাখুন। সবাই মিলে চেষ্টা করুন। ভালো মানুষ, বিবেকবান মানুষ অবশ্যই গড়ে উঠবে, জাগ্রত হবে মনুষ্যত্ব বোধ ইনশাআল্লাহ।

CLTD: Womenscorner

Sharing is caring!

Comments are closed.