শিশুর জন্য গরুর দুধ, না মহিষের দুধ কোনটা বেশি ভাল?

একজন ছোট শিশুর জন্য সবচেয়ে সেরা জিনিস হল তার মায়ের বুকের দুধ। তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এখনও বিকাশের পর্যায়ে থাকার কারণে তার হজম করার পক্ষে সবচেয়ে ভাল তার মায়ের দুধ। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (WHO) একটি শিশুর চূড়ান্ত পুষ্টি হিসাবে তার মায়ের দুধের পরামর্শ দিয়ে থাকে। যাইহোক, যদি কোনও কারণের জন্য স্তন পান করানো সম্ভব না হয় অথবা শিশুর দুধের চাহিদা মেটানো সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে শিশু এক বছর পূর্ণ করার পর তাকে গরু কিম্বা মহিষের দুধ দেওয়া যেতে পারে।

অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে শিশুর জন্য গরুর দুধ বেশি উপকারী, না মহিষের দুধ বেশি উপকারী! তাদের জন্য এই আর্টিকেল। বিস্তারিত পড়ুন – 

ফ্যাট বা স্নেহ পদার্থ : মহিষের দুধের থেকে গরুর দুধের মধ্যে স্নেহ পদার্থ কম পরিমাণে থাকে। সুতরাং গরুর দুধের ঘনত্ব মহিষের দুধের ঘনত্বের থেকে পাতলা হয়। আপনার ১ বছর বয়সী বাচ্চার জন্য মহিষের থেকে গরুর দুধ হজম করা সহজ হবে।

প্রোটিন : গরুর দুধের তুলনায় মহিষের দুধে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি থাকে (মোটামুটি প্রায় 11% বেশি)। এই উচ্চ পর্যায়ের প্রোটিন উপাদান দেহে অপেক্ষাকৃত বেশি তাপ প্রতিরোধী আর তা ছোট শিশুদের পক্ষে হজম করাও শক্ত। অতএব বাচ্চাদের পেটের পক্ষে গরুর দুধ তুলনামূলকভাবে শীতল। এর পরেও যদি আপনি আপনার বাচ্চাকে মহিষের দুধ খাওয়াতে চান, তবে তা খুবই অল্প পরিমাণে দিন।

ক্যালসিয়াম : মহিষের দুধ ক্যালসিয়ামের একটি অতি সমৃদ্ধ উৎস যা হাড়ের বিকাশের জন্য অপরিহার্য। বাচ্চাদের ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয় তাদের সার্বিক বৃদ্ধি এবং শক্তি ও উচ্চতা বিকাশের জন্য। সুতরাং ক্যালসিয়ামের একটা ভাল উৎস হিসেবে মহিষের দুধ এক বছরের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য ভাল।

তাপন মূল্য : মহিষের দুধের সাথে তুলনায় গরুর দুধে কম ক্যালোরি থাকে– সুতরাং এক বছরের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য মোষের দুধ সমৃদ্ধ হতে পারে।

ঘনত্ব : গরুর দুধের মধ্যে মহিষের দুধের তুলনায় জলীয় পরিমাণ বেশি থাকে। সুতরাং এক্ষেত্রে গরুর দুধ খাওয়া উপকারি হয়ে উঠতে পারে যেহেতু এটি আপনার বাচ্চাকে হাইড্রেট রাখতে পারে।

ব্যবহারের মেয়াদ : উচ্চ পারক্সিডেস ক্রিয়ার কারণে মহিষের দুধকে বেশীদিন ধরে প্রাকৃতিকভাবে সংরক্ষণ করা যেতে পারে, যদিও গরুর দুধ আদর্শগতভাবে 1-2 দিনের মধ্যে খেয়ে ফেলা উচিত।

প্রতিটি শিশুর হজম ক্ষমতাও পৃথক হয়ে থাকে। শিশুদের জন্য মহিষের দুধকে পছন্দ করা যেতে পারে। এটি স্নেহ পদার্থ, প্রোটিন, ক্যালসিয়ামে সমৃদ্ধ এবং এর তাপনমূল্যটি উচ্চ হওয়ার কারণে, যা এটিকে গরুর দুধের থেকে আরও বেশি উপকারি করে তুলেছে। তবে একজন শিশুর পক্ষে এটা হজম করাটা মুশকিলের হতে পারে। গরুর দুধ হজম করা সহজ এবং তা বাচ্চাদের আরও বেশি হাইড্রেট রাখে। একজন মা হিসেবে আপনি দু ধরণের দুধই অল্প মাত্রায় দেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন, আর দেখুন কোনটা আপনার বাচ্চার সহ্য হয় ও তার জন্য বেশি উপযুক্ত হয়।

CLTD: Womenscorner

Sharing is caring!

Comments are closed.