শিশুদের প্রাতঃরাশের 15 টি সেরা রেসিপি

শুধুমাত্র প্রাতঃরাশের একটি নতুন রেসিপির মুখোমুখি নিজেকে খুঁজে পাওয়ার জন্য যথেষ্ট আশ্চর্যজনক ভাবে শিশুর এক গুচ্ছ বাঁধার মধ্য দিয়ে আপনি এটি তৈরী করেছেন!প্রাতঃরাশের জন্য আপনি কি পুরানো সেই একই জিনিস বারবার তৈরী করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন অথবা ভাবছেন যে আপনি যা রান্না করছেন তাতে বাচ্চাটি বিরক্ত হয়ে উঠছে?বেশ,আপনার ছোট্ট সোনাটি পূর্বেও খাবারের ব্যাপারে খুঁতখুঁতে প্রমাণিত হয়েছে এবং সেটিই সে চালিয়ে যেতে থাকবে এমনকি এই নতুন শক্ত বা আধা–শক্ত খাবারের মত জিনিসগুলিতেও,যেগুলির অভিজ্ঞতা তার হতে থাকছে।
ভাগ্যক্রমে আপনার জন্য,আমরা গবেষণা করেছি এবং এক বছর বয়সী শিশুদের জন্য প্রাতঃরাশের সেরা রেসিপিগুলির একটি সম্পূর্ণ তালিকা সঙ্কলনের জন্য সবচেয়ে সেরা এবং সুস্বাদু রেসিপিগুলি তন্ন তন্ন করে অনুসন্ধান করেছি।এগুলি পিউরি থেকে শুরু করে আধা শক্ত এবং এমনকি শক্ত টুকরোগুলির পরিসর অবধি ব্যাপ্ত যা ব্যস্তবাগীশ শিশুদের স্বাদের সহিত মানানসই এবং এমনকি তাদের পুষ্টি চাহিদাগুলিও পূরণ করে।আদর্শ প্রাতঃরাশ হল মুখরোচক এবং পুষ্টিতে পূর্ণ উভয়ের সমন্বয়।

শিশুদের জন্য প্রাতঃরাশের গুরুত্ব
“দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আহার হল প্রাতঃরাশ“-এই প্রাচীন প্রবাদটি কি শিশুদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য?ঠিক,এটি প্রযজ্য!দিনের প্রথম আহারটি তাদের প্রয়োজন হয় নিজেদের উত্তোলন করতে এবং চালনা করার জন্য।আপনার ছোট্ট শিশুটির দিনের এই প্রথম আহারটির প্রয়োজন হয় তার দেহের বিপাক প্রক্রিয়াগুলি বৃদ্ধির দ্বারা তাকে চনমনে করে তোলার জন্য।ঘুম থেকে ওঠার পর আপনি কি কিছুটা অবসন্নবোধ করেন না? এবং সম্পূর্ণ অনুভূতি ফিরে পাওয়ার উপযোগী একটি প্রাতঃরাশ অথবা প্রথম এক কাপ কফির প্রয়োজন হয় না?ঠিক,শিশুদের ক্ষেত্রেও তাই!ভারতীয় প্রকৃতিতে সমস্ত শিশুর প্রাতঃরাশের ধারণা এমনকি শিশুর প্রাতঃরাশের রেসিপিগুলির বিকল্পকটিও কিছু পুষ্টি,কিছু স্বাদ এবং সম্পূর্ণরূপে মুখরোচকতা সরবরাহ করে।
একটি স্বাস্থ্যকর প্রাতঃরাশের অভ্যাস দিয়ে শুরু করে আপনার সন্তানকে তার মধ্যেই চালনা করলে তা তার জীবনযাপনের মাধ্যমে সারাজীবনের একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা বজায় রাখবে।তাদের খাওয়ার প্রতি উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে আপনার জন্য একটি পরামর্শ হল আপনি তাকে পরিবারের সকলের সাথে একসাথে খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করুন,যাতে সে তার চারপাশের সকলের প্রাতঃরাশ করার ক্রিয়াটি দেখতে পায় এবং নিজেও সেটি চেষ্টা করার জন উৎসাহিত হয়।যখন আপনি তাকে নিজে নিজে খাওয়াতে শেখান বিশেষ করে সেই সময়ের জন্য এটি ভীষণ কার্যকর।

মনে রাখবেন খুব শীঘ্রই শক্ত খাবারগুলিকে খাওয়ানোর জন্য চাপ দেবেন না তবে প্রকৃত শক্ত খাবারগুলি দৃশ্যকল্পে আসার পূর্বে ধীরে ধীরে স্তন দুধ থেকে সরে এসে ফরমূলায়,আবার সেটি থেকে পিউরি এবং সেটি থেকে আধা শক্ত–আধা নরম পিউরিগুলি শিশুকে খাওয়ানোর বিষয়টি পরিচালনা করতে হবে।আপনার সন্তানের সাথে মাংস এবং ডিমের পরিচয় করানোর চিন্তা করার পূর্বে আপনার ডাক্তারবাবুর অনুমতি নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করুন।
শিশুদের জন্য প্রাতঃরাশ তৈরীর 15 টি সহজ রেসিপি

শিশুর জন্য রান্না করা একটি মজাদার বিষয় তবে তা বিভিন্ন ধরনের স্বাদ ও খাদ্যগত প্রয়োজনীয়তা এবং এমনকি মায়ের প্রয়োজনীয়তার উপযোগী হওয়া উচিত।ভারতীয় থেকে মহাদেশীয় এবং তা থেকে আবার কুকিজগুলি পর্যন্ত বৃহৎ পরিসরে প্রাতঃরাশের বিভিন্ন রেসিপিগুলির বিষয়ে এখানে উল্লেখ করা হল,কে জানে আপনার ছোট্ট ছেলে বা মেয়েটি কোনটি পছন্দ করে বসবে।সবগুলিই বানাবার চেষ্টা করুন!দেখে নিন এখানে শিশুদের প্রাতঃরাশের জন্য দুর্দান্ত কোন 15 টি রেসিপি দেওয়া হল এবং কীভাবে প্রস্তুত করা হল।

১. একাধিক সবজির পিউরি
একটি ভাল প্রাচীন অতুলনীয় পিউরি দিয়ে শুরু করুন যেটি বেশ কয়েক জোড়া দুর্দান্ত পুষ্টিকর খাদ্য উপাদানের সহিত শিশুর পছন্দসই সবজিগুলির একত্রিকরণের দ্বারা তৈরী করা যেতে পারে।এই কম জনপ্রিয় বিকল্পগুলির সহিত মজাদার সমন্বয় যেকোনও শিশুর অতীতকে হরণ করে নতুন বর্তমান এনে দেবে।
উপকরণ

• আলু
• কড়াইশুঁটি
• গাজর
• আপনার পছন্দ মত যেকোনও সবজি
• জল
কীভাবে তৈরী করবেন
• সবজিগুলি বাছাই করুন।
• এবার সেগুলিকে ঘনকাকারে কাটুন।
• নরম না হওয়া পর্যন্ত সবজিগুলিকে একটি প্রেসার কুকারে সেদ্ধ করুন।
• একটি ব্লেন্ডারের মধ্যে সব্জির টুকরোগুলি এবং তার সেদ্ধ জলটি ঢালুন।
• প্রয়োজন মত জল যোগ করুন।
• এবার ব্লেন্ড করে একটি মসৃন পিউরি বানিয়ে নিন।

২. কলা এবং ভাতের পুডিং
পুডিং কেবল প্রাপ্তবয়স্কদের কাছেই মুখরোচক নয় এটি শিশুদের কাছেও অত্যন্ত প্রিয়।এটি পাচন তন্ত্রের জন্য ভাল এবং আপনার সন্তানকে সম্পূর্ণ করে রাখে ও সারাদিনের জন্য তার প্রয়োজনীয় প্রচুর পরিমাণে শক্তির যোগান দেয়।এই সুস্বাদু, পুষ্টিকর মিশ্রণটি গ্রাস করা মাত্রই যেকোনও খুঁতখুঁতে শিশু খাদকের মুখেই হাসি ফুটে উঠবে।

উপকরণ
• 1 কাপ চাল বা চিঁড়ে
• 1 কাপ কুঁচানো কলা
• 3 কাপ জল
• 1 কাপ ফরমূলা বা কৌটার দুধ
কীভাবে তৈরী করবেন

• কোনও রকম শক্ত দানা থাকবে না এমনভাবে চাল অথবা চিঁড়েকে ফুটিয়ে রান্না করে নরম এবং কাদা কাদা করে নিন।
• এর সাথে কুঁচানো কলাগুলি যোগ করুন।
• এবার এর সাথে আবার ফরমূলা বা কৌটার দুধও যোগ করুন।
• সব একসাথে 2-3 মিনিটের জন্য রান্না করুন।
• মিশ্রণটিকে ভালভাবে নাড়তে থাকুন যাতে কলা এবং ভাত ভালভাবে একসাথে মিশ্রিত হয়ে যায়।
• প্রত্যাশিত ঘনত্বে আনতে এর সাথে জল যোগ করুন।
• আরও অতিরিক্ত 3-4 মিনিট ধরে রান্না করুন।
• শিশুকে খাওয়ানোর পূর্বে ঠাণ্ডা করে নিন।

৩. সুজির উপমা
ভারতীয় পোরিজ বা পুডিং–এর এই বিকল্প রূপটি তন্তুতে পরিপূর্ণ এবং বেশ সুস্বাদু। আপনি এমনকি আবার এই সুস্বাদু খাদ্যপদটির সহিত আপনার আবেগকে ছড়িয়ে দিয়ে য়াপনার সনাকে একজন ভোজন রসিকও করে তুলতে পারেন।এটি চিবানো সহজ এবং আপনার সন্তানকে তার প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দেবে এবং এতে প্রচুর পরিমাণে মিষ্টি স্বাদ থাকে।
উপকরণ

• 1/2 কাপ সুজি
• 1/2 চা–চামচ ঘি
• 1/2 চা–চামচ আমন্ড বা কাজু বাদাম গুঁড়ো
• 1 কাপ জল
• 1 টি খেজুরের পিউরি(বীজ ছাড়িয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কাটুন এবং সামাণ্য জল দিয়ে মিক্সচার গ্রাইন্ডারে পিউরি বানিয়ে নিন)
কীভাবে তৈরী করবেন
• একটি কড়াইয়ের মধ্যে ঘি নিয়ে গরম করুন
• সেই ঘিয়ের উপর সুজি ঢেলে দিয়ে সমানে নেড়ে–চেড়ে সেটিকে ভেজে নিন।
• সুজিটি সামান্য ভাজা হলে তার মধ্যে জল ঢালুন।
• মিষ্টি স্বাদ আনতে এর সাথে খেজুরের পিউরিটিকে যোগ করুন।
• কোনও রকম দলা পাকানো এড়াতে সমানে নাড়তে থাকুন।
• আপনি যদি চান এর সাথে বাদাম গুঁড়ো যোগ করতে পারেন(অ্যালার্জির কথা মাথায় রেখে আপনার ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে নেবেন)।
• এটিকে আপনার প্রার্থিত ঘনত্বে নিয়ে আসুন।রান্না করার সময় এটিকে কিছুটা পাতলা রাখা নিশ্চিত করুন কারণ ঠাণ্ডা হওয়ার সাথে সাথে এটি ঘন হয়ে যাবে।

৪. সবজির খিচুড়ি
এই অতুলনীয় ভারতীয় জনপ্রিয় রেসিপিটি প্রায় বেশিরভাগ বয়সের দ্বারাই ভীষণ পছন্দসই একটি খাদ্য হিসেবে বিবেচিত এবং মায়েদের স্বাস্থ্যের জন্যও এটি একটি সহজ,স্বাস্থ্যকর ও দ্রুত কার্যকর বিকল্প।আপনি এটিকে নিজের ইচ্ছেমত সুস্বাদু এবং বাচ্চার প্রয়োজন মত গাঢ় করে তৈরী করতে পারেন।

উপকরণ
• বড় 1 চামচ মুগ ডাল(ভালভাবে ধুয়ে জলের মধ্যে আধ ঘন্টার জন্য ভিজিয়ে রাখতে হবে)
• বড় 1 চামচ চাল(ভালভাবে ধুয়ে জলের মধ্যে আধ ঘন্টার জন্য ভিজিয়ে রাখতে হবে)
• আলু,গাজর,টমেটো,বীনস,কড়াইশুঁটি এবং আপনার পছন্দসই যেকোনও সবজি
• এক চিমটে হলুদ গুঁড়ো
কীভাবে তৈরী করবেন

• সমস্ত সবজিগুলির খোসা ছাড়িয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে ভালভাবে ধুয়ে নিন।
• 1 কাপ জলের সাথে সবকিছু প্রেসার কুকারের মধ্যে রান্না করতে হবে।
• 3-4 টি সিটি দিয়ে রান্না করুন।
• আপনার প্রত্যাশা মত এর সাথে গরম জল যোগ করে পাতলা করে নিন।
• একটি চামচের সাহায্যে ভালভাবে চটকে নিন।
• একবার ঠাণ্ডা হয়ে গেলে আপনার সোনাকে খাওয়ান।

৫. মশলার সহিত সবজি খিচুড়ি
অপেক্ষাকৃত কিছুটা বড় বাচ্চাদের জন্য এই একই ধ্রুপদী ভারতীয় জনপ্রিয় খাদ্যটি একটি চটকদারীতা নিয়ে আসে।এই প্রিয় থালাটির মধ্যে এখন আরও বেশি করে ভারতীয় মশলার ছোঁয়া রয়েছে যাতে আপনি শিশুর ডায়েটের সহিত ভারতীয় ধারায় শিশুদের রেসিপিগুলির পরিচয় করাতে পারেন।
উপকরণ

• 1/2 কাপ চাল
• 1/2 কাপ মুগ ডাল(সবুজ গোটা মুগ)
• ভালভাবে ধোওয়া এবং ছোট ছোট টুকরো করে কাটা 1 কাপ নানা ধরনের সবজি (গাজর,আলু,কিছু কড়াইশুঁটি,বীনস ইত্যাদি)
• 1 চা–চামচ ঘি
• এক চিমটে হলুদ গুঁড়ো
• 1/2 চা–চামচ গোটা জিরে
• ধনে পাতা কুঁচি
কীভাবে তৈরী করবেন
• চাল এবং ডালকে ভালভাবে পরিষ্কার করে বেছে ধুয়ে নিন।
• এবার চাল এবং ডালকে আধ ঘন্টার জন জলের মধ্যে ভিজিয়ে রাখুন।
• প্রেসার কুকারের মধ্যে কিছুটা ঘি নিয়ে গরম করুন।
• ঘিয়ের ধোঁয়া উঠলে তার মধ্যে গোটা জিরের ফোড়ন দিন।
• এবার এর সাথে চাল এবং ডাল যোগ করুন।
• সামাণ্য নেড়েচেড়ে সাঁতলে নিন।
• এর সাথে সবজির টুকরোগুলি যোগ করুন।
• তার উপর এক চিমটে হলুদ গুঁড়ো ছড়িয়ে দিন।
• এবার এর সাথে জল যোগ করে প্রেসারের ঢাকনা আটকে 3-4 টি সিটি দিয়ে ভালভাবে রান্না করে নিন।
• একটি চমচের সাহায্যে খিচুড়িটিকে সামাণ্য পিষে নিন।
• ঠাণ্ডা হলে সেটিকে আপনার বাচ্চাকে খাওয়ান।

৬. মিষ্টি ন্যাশপাতি এবং দারুচিনি ভাতের মণ্ড
বহু মা এবং তাদের সন্তানেরা এই চমৎকার ডিশটির স্বাদ নিয়াছে,এবং এমনকি কিছু বাবাদের মুখ থেকেও আমরা শুনেছি ছোট থেকে 12 মাস বয়সী বাচ্চাদের জন্য এই সহজপাচ্য,মজাদার রেসিপিটির গুণাগুন সম্পর্কে।

উপকরণ
• 1/2 কাপ সেদ্ধ চাল
• 2 টি তাজা ন্যাশপাতি
• 2 কাপ জল
• 3/4 কাপ ঘনীভূত দুধ
• ভ্যানিলা দানা অথবা নির্যাস
• স্বাদের জন্য এক চিমটে দারুচিনি
কীভাবে তৈরী করবেন

• একটি বাটির মধ্যে চাল এবং ভ্যানিলা রাখুন
• 2 কাপ জলের মধ্যে সেগুলিকে ফুটান
• ন্যাশপাতির খোসা ছাড়িয়ে সেটিকে বীজমুক্ত করে নিয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কাটুন
• ভাতটি যখন প্রায় নরম হয়ে আসবে তখন তার সাথে এগুলি যোগ করুন।
• ভাতটি রান্না হয়ে গেলে এবং ন্যাশপাতির টুকরোগুলি নরম হয়ে গেলে এর সাথে ঘনীভূত দুধটি যোগ করুন।
• স্বাদের জন্য দারুচিনি গুঁড়ো মেশান।
• প্রয়োজন হলে ব্লেন্ডারের মধ্যে মিশ্রণটিকে ঢেলে নিয়ে ব্লেন্ড করে পিউরি বানিয়ে নিন।

৭. কলা এবং খুবানির পুডিং
এই জব্বর মুখরোচক ডিশটি দুটি জনপ্রিয় উপাদানের সমন্বয়ে পোরিজ বা পুডিং–এর গুণাগুনের সহিত প্রস্তুত যা যেকোনও শিশুর মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলবে।
উপকরণ

• 1/2 কাপ রোলড ওটস
• 2 কাপ জল
• 100 গ্রাম সালফার বিহীন শুকনো খুবানি
• 1 টি চটকানো কলা
কীভাবে তৈরী করবেন
• 1 অথবা 2 ঘন্টার জন্য অথবা সারা রাত ধরে খুবানিগুলি জলে ভিজিয়ে রাখুন।
• এবার সেগুলিকে ফুটিয়ে খুব নরম করে নিন।
• একটি কাঁটা চামচের সাহায্যে সেটিকে পিষে মসৃণ করে নিয়ে এক পাশে সরিয়ে রাখুন।
• একটি পাত্রের মধ্যে ওট এবং জল নিন।
• ওটটি নরম না হয়ে যাওয়া পর্যন্ত রান্না করুন এবং মাঝেমধ্যে নাড়তে থাকুন।
• এবার এর সাথে চটকানো কলা এবং খুবানি যোগ করুন।
• ভালভাবে মিশ্রিত না হওয়া পর্যন্ত আরও কয়েক মিনিটের জন্য পুনরায় রান্না করে নিন।

৮. আপেল ও ডালিমের রস
হ্যাঁ,ফলের রসগুলিও প্রাতঃরাশের মেনুতে বেশ ভালভাবেই অন্তর্ভূক্ত।বিশেষ এই রসটি কতকগুলি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,ফলিক অ্যাসিড এবং আয়রণে পরিপূর্ণ।এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং যেকোনও ব্যস্তবাগীশ ছোট্ট ব্যক্তিকে শান্ত করার সময় তাকে পরিপূর্ণ করে তোলে।

উপকরণ
• 3 টি বড় মাপের ডালিম
• 2 টি বড় মাপের আপেল
• 1 টি ছোট লেবু
• 1/8 চা–চামচ লবণ
• প্রয়োজনমত জল
কীভাবে তৈরী করবেন

• ফলগুলিকে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন।
• আপেলের খোসা ছাড়িয়ে সেগুলিকে ঘনকাকারে কেটে নিন।
• ডালিমের দানাগুলিকে ছাড়িয়ে এক পাশে রাখুন
• একটি ব্লেন্ডারের মধ্যে পরিমিত জলের সাথে ফলগুলি রেখে চাপা দিয়ে দিন
• এবার সেগুলিকে ব্লেন্ড করে একটি মসৃণ পিউরি তৈরী করে নিন।এটি আবার একটি জুসার ব্যবহার করেও করে নিতে পারেন।
• এবার ভালভাবে ছেঁকে নিন।
• আপনার আদরের ছোট্টটিকে তাজা তাজা পরিবেশন করুন।

৯. কলার ফালির প্যানকেক
বাস্তবিকই খাবার ব্যাপারে খুঁতখুঁতে শিশুটিও প্যানকেকের ব্যাপারে বাধা দেবে না,বিশেষত এই মজাদার প্রস্তুতিটি তার আগের চেয়েও খাওয়ার ইচ্ছেটিকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।
উপকরণ

• 1/2 কাপ প্যানকেকের ব্যাটার (রেডিমেড মিশ্রণ থেকে অথবা প্রয়োজনীয় উপকরণ দ্বারা প্রস্তুত করুন)
• 1/4 ভাগ কলা
• 1/3 কাপ হিমায়িত ডার্ক চেরি অথবা ব্লুবেরি
• 1/3 কাপ সাদা দই
কীভাবে তৈরী করবেন
• একটি চাটুর উপর সামাণ্য তেল বা মাখনের প্রলেপ দিয়ে সেটিকে গরমে বসান,এবার তার উপর বড় 2 চামচ প্যান কেকের ব্যাটার ছড়িয়ে দিন।
• এর উপরে পাতলা করে কাটা কলার টুকরোগুলিকে দিয়ে দিন
• এবার আবার আরও 2 চামচ প্যান কেকের ব্যাটার কলার টুকরোগুলির উপর ছড়িয়ে দিন
• প্যানকেকের একদম উপরের স্তরটিতে বুদবুদ কেটে ফুলতে শুরু না করা পর্যন্ত রান্না করুন।
• পুরো প্যানকেকটিই সম্পূর্ণরুপে রান্না না হওয়া পর্যন্ত সেটিকে রান্না করতে থাকুন।
• এবার আপনার বাচ্চার জন্য খুবানিকে ছোট ছোট সরু ফালি করে কাটুন এবং চেরি অথবা ব্লুবেরিগুলিকে হিমায়িত অবস্থা থেকে গলিয়ে নিন।
• প্রতিটি প্যানকেকের উপর এক দলা করে সাদা দই ছড়িয়ে দিয়ে তার উপর এক চামচ পূর্ণ করে ফলের কুঁচি ছড়িয়ে দিয়ে তারপর পরিবেশন করুন।

১০. ব্লুবেরি মাফিন সিরিয়াল
এখানে কোন ধরনের ইন্দ্রিয়টি বেশি কার্যকর হবে বলে মনে হয়?শিশুরা বেরিগুলি এবং এর সকল মিষ্টি উপাদানগুলিকেই ভালবাসে,এবং এটি হল এমনই একটি স্বাস্থ্যকর ও মুখরোচক প্রস্তুতি যেটি ব্যবহারের প্রলোভন অভিভাবকদের অবশ্যই হবে।

উপকরণ
• 1/2 কলা
• 1/2 কাপ ব্লুবেরি(তাজা অথবা হিমায়িত করে রাখা)
• বড় 4 চামচ জৈব হোল গ্রেইন ইনফ্যান্ট সিরিয়াল
• বড় 4 চামচ জৈব ভ্যানিলা দই
• 1 চা–চামচ সাধারণ মধু
কীভাবে তৈরী করবেন

• কলাটিকে চটকে অথবা ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন।
• এর সাথে দই যোগ করুন
• সিরিয়াল বা শস্যদানাগুলি এর সাথে ছড়িয়ে দিন
• ভালভাবে মিশ্রিত করুন এবং প্রয়োজন হলে আরও কিছুটা দই মিশিয়ে একটি মসৃণ সামঞ্জস্যে তৈরী করুন।
• এবার এর উপর ব্লুবেরিগুলি ছড়িয়ে দিন ও তার উপর কিছুটা মধু ঢেলে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলুন(মধুর ব্যবহার করুন শুধুমাত্র তখনই যখন আপনার বাচ্চার বয়স অন্ততপক্ষে এক বছর অতিক্রম করে যাবে এবং আপনার ডাক্তারবাবুর সাথে কথা বলার পরে কারণ যেহেতু শিশুদের দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে মারাত্মক করে তুলতে পারে এধরণের স্পোর এর মধ্যে থাকতে পারে।

১১. ব্রেকফাস্ট কুকিজ
তবে প্রাতঃরাশের জন্য কুকিজ?শুনতে কিছুটা উন্মাদের মত লাগলেও এর মধ্যে সবকিছু থাকায় এগুলি খুব ভালভাবে কাজ করে তাই যেকোনভাবেই আপনার সন্তানের এগুলিকে খাওয়া উচিত।সাবধানতার কথাটি হল এগুলি তুলনামূলক কিছুটা বড় শিশুদের জন্য যারা শক্ত খাবার খাওয়া শুরু করে ফেলেছে।
উপকরণ

• 3 টি কলা
• 1/4 কাপ জলপাই তেল
• 1/2 কাপ কাজু বাদামের মাখন অথবা পিনাট বাটার (বাদামজনিত অ্যালার্জির ব্যাপারে সচেতন থাকবেন)
• 2 কাপ ওট
• 1 চা–চামচ বেকিং সোডা
• 1 চা–চামচ আদা গুঁড়ো
• 1 চা–চামচ দারুচিনি গুঁড়ো
• 1 চা–চামচ মিষ্টি ছাড়া ভ্যানিলা এসেন্স
• বড় 4 চামচ র‍্যাস্পবেরি চিয়া জ্যাম
কীভাবে তৈরী করবেন
• ওভেনটিকে আগে থেকে 160 ডিগ্রী তাপমাত্রায় গরম করে রাখুন
• একটি ব্লেন্ডারের মধ্যে কলার সাথে তেল এবং বাদামের মাখন যোগ করুন।
• সেটি মসৃণ এবং চটচটে না হওয়া পর্যন্ত ব্লেন্ড করুন
• একটি বাটির মধ্যে বাকি সকল উপকরণগুলিকে একত্রিত করুন(চিয়া জ্যামটি ছাড়া)
• এর মধ্যে এবার কলার মিশ্রণটিকে ঢালুন
• ভালভাবে নাড়তে থাকুন যাতে ওট এবং কলার মিশ্রণটি সম্পূর্ণরূপে একত্রে মিশ্রিত হয় তা নিশ্চিত করুন
• সামাণ্য তেলের প্রলেপ লাগানো বেকিং ট্রে বা নন–স্টিক ম্যাটের উপর বড় এক চামচ পূর্ণ করে মিশ্রণটিকে দলা আকারে পুঞ্জিভূত করুন।
• প্রতিটি দলার মাঝে সামাণ্য করে ফাঁক রাখুন
• ঠিক মত প্রস্তুত হয়েছে কিনা তা বুঝতে প্রতিটি কুকিজের উপরের দিকে মাঝের কেন্দ্রটিতে চামচের পিছনের অংশটির সাহায্যে চাপ দিয়ে দেখে নিন।
• এক চা–চামচ করে রাস্পবেরি চিয়া জ্যাম প্রতিটি কুকিজের মাঝে দিন
• এবার সেগুলিকে 12-15 মিনিটের জন্য বেক করুন
• এই 12 মিনিট ধরে সেগুলি নজরে রাখুন যাতে সেগুলি ছোট্টটির মুখের পক্ষে খুব বেশি শক্ত না হয়ে যায়
• ওভেন থেকে বের করে এনে ঠাণ্ডা করে আপনার সোনাকে তার মুখরোচক কুকিজগুলি পরিবেশন করুন।

১২. রাতারাতি চিয়া ওটে সমৃদ্ধ বাটি
এক বাটি গোলাপী মিষ্টি–বাচ্চা কি সেটিতে বাঁধা দেবে?এই জব্বর বাটিটি তার কাছে রেখে দিলে নিশ্চিতভাবে সে এটি আরও বেশি চাইতে থাকবে এবং আপনাকে তার চামচিটিকে প্রতি সময় এবং এমনকি তখনও ছিনিয়ে অথবা চুপিসারে হরণ করে নিতে হবে।

উপকরণ
• 85 গ্রাম ওট
• 85 গ্রাম দুধ
• 85 গ্রাম গ্রীক দই
• বড় 2 চামচ চিয়া বীজ
• 1/4 চা–চামচ আসল ভ্যানিলা গুঁড়ো
• 100 গ্রাম তাজা অথবা হিমায়িত রাস্পবেরি
• স্বাদের জন্য মধু(শুধুমাত্র একটু বড় বাচ্চাদের জন্য এবং ডাক্তারের পরামর্শের পর)
কীভাবে তৈরী করবেন
• মধু বাদে বাকি সকল উপকরণগুলিকে একটি ব্লেন্ডারের মধ্যে রাখুন
• 1-2 মিনিটের জন্য সেগুলিকে ব্লেন্ড করে মসৃণ করে নিন।
• এর স্বাদ চেখে দেখে প্রয়োজন মত মধু যোগ করুন।
• প্রাতঃরাশের বাটিতে মিশ্রণটিকে ঢেলে নিয়ে সেটিকে সারা রাতের জন্য ফ্রীজের মধ্যে রাখুন।
• পরদিন সকালে এটিকে ঠিক এভাবেই খেতে দিতে পারেন অথবা এর উপর কিছু তাজা বেরি,বাদাম অথবা গ্রানোলা ছড়িয়ে তা পরিবেশন করতে পারেন।

১৩. চাল গুঁড়ো এবং সবজির মন্ড
শিশুদের মুখরোচক স্টাটার খাদ্যে ফিরে যাওয়া যাক,এই মন্ডটি হল ক্ষুধার্থ শিশুর জন্য একটি দ্রুত সমাধান এবং ভীষণ স্বাস্থ্যকর একটি বিকল্প।সম্ভাব্য সকল বিকল্পগুলি একত্রিত করুন এবং এই সুস্বাদু খাবারটিকে প্রস্তুত করতে আপনার প্রায় কনও সময়ই লাগবে না বলা যায়।
উপকরণ
• 2 কাপ চাল গুঁড়ো
• 1 কাপ ঝিরিঝিরি করে কুঁচানো গাজর এবং কড়াইশুঁটি
• 3 কাপ জল
কীভাবে তৈরী করবেন
• একটি রান্নার বাসনে চাল গুঁড়োর সাথে জল মিশান
• মিশ্রণটিকে 5-7 মিনিট ধরে রান্না করুন এবং সমানে নাড়তে থাকুন যাতে কোনওরকম দলা না পাকিয়ে যায়।
• জলের সাথে চাল গুঁড়ো ভালভাবে মিশ্রিত হয়ে নরম না হওয়া পর্যন্ত রান্নাটি করতে থাকুন।
• গ্যাসের আঁচ কমিয়ে দিয়ে মিশ্রণটিকে ধীরে ধীরে রান্না করুন।
• গাজর এবং কড়াইশুঁটিকে নরম না হওয়া অবধি পৃথকভাবে সেদ্ধ করে নিন।
• সেগুলি সেদ্ধ হয়ে গেলে সবজি সেদ্ধ জলটির সহিত সবজিগুলিকে একত্রে ব্লেন্ড করে পাতলা করে নিন।
• এবার এই সবজি পিউরিটিকে চাল গুঁড়ো এবং জলের মিশ্রণটির সহিত যোগ করুন।
• সমগ্র মিশ্রণটি ভালভাবে মিশিয়ে নিতে কিছুক্ষণের জন্য ফুটিয়ে নিন।
• আপনার খাবার একদম প্রস্তুত!শুধু বাচ্চাকে পরিবেশনের আগে ঠাণ্ডা করে নিন।

১৪. আম এবং ভাতের পুডিং
এটি মা এবং বাবার নৈশভোজের জন্য শুনতে বেশ ভাল তাই নয় কি?এই সামাণ্য সংমিশ্রণটি আবার মা–বাবার মধ্যে বেশ প্রিয় পছন্দ হওয়ার অপর আরেকটি কারণ হল তাদের সন্তানদের ক্ষেত্রেও এটি একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্পের সন্ধান দেয়।
উপকরণ
• 1 কাপ ঘনকাকারে কাটা আমের ফালি
• 2 কাপ চাল
• 3-4 কাপ জল
• 1 কাপ ফরমূলা অথবা এক্সপ্রেসড দুধ(ঐচ্ছিক)
কীভাবে তৈরী করবেন
• জলের মধ্যে চালগুলি ফোটান
• আমের টুকরোগুলি দিয়ে আলাদা ভাবে পিউরি বানিয়ে নিন
• চালগুলি একবার ফুটতে শুরু করলে,গ্যাসের আঁচ কমিয়ে দিয়ে সেটিকে 4-5 মিনিটের জন্য রান্না করে নিন।
• এবার সাথে আমের পিউরি এবং ইচ্ছে হলে ফরমূলা অথবা এক্সপ্রেসড দুধ যোগ করুন।
• মিশ্রণটিকে 2-3 মিনিট ধরে সমানে নাড়তে নাড়তে রান্না করুন।
• ঠাণ্ডা হওয়ার পর সেটিকে পরিবেশন করুন।

১৫. সুজির হালুয়া
আপনার সন্তানের সাথে পরিচয় করানোর অপর একটি দুর্দান্ত ভারতীয় বিকল্প এটি, এবং আমরা গ্যারেন্টি দিতে পারি যে আপনার সন্তান এই হালুয়ার প্রেমে পড়ে যাবে।সকল ভারতীয় মিষ্টিগুলির মধ্যেই হালুয়ার এই সমৃদ্ধ মিষ্টতা গর্বের অধিকারী।
উপকরণ
• 1/2 কাপ সুজি
• 1/2 চা–চামচ ঘি
• 1/2 চা–চামচ কাজু/আমন্ড বাদাম গুঁড়ো(ঐচ্ছিক)
• 1 কাপ জল
• 1 টি খেজুরের পিউরি
কীভাবে তৈরী করবেন
• একটি কড়াইয়ে ঘি গরম করুন
• ঐ ঘিয়ের মধ্যে সুজি ঢেলে সেটিকে ভাজুন এবং সমানে নাড়তে থাকুন তা না হলে সেটি পুড়ে যেতে পারে।
• ভাজা হয়ে গেলে এর সাথে জল যোগ করুন
• এতে মিষ্টতা আনতে এর সাথে খেজুরের পিউরি মেশান
• কোনও রকম দলা পাকানো এড়াতে সমানে নাড়তে থাকুন
• বাদাম গুঁড়োগুলি যোগ করুন(ঐচ্ছিক এবং বাদামজনিত অ্যালার্জির ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন)
• এটিকে আপনার কাঙ্খিত ঘনত্বে নিয়ে আসুন এবং রান্নার সময় এটিকে কিছুটা পাতলা রাখুন কারণ ঠাণ্ডা হওয়ার সাথে সাথে এটি ক্রমশ জমাট বেঁধে ঘন হয়ে যাবে।
• মোটামুটি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে আপনার ছোট্ট ব্যক্তিটির মুখে আনন্দের সাথে তুলে দিন।

এই রেসিপিগুলি কেবল ব্যাপক পরিসরে বিস্তৃত রেসিপিগুলির মধ্যে শিশুদের জন্য মা–বাবার রন্ধন সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা বাড়ানো শুরু করার কিছু কৌশল মাত্র।এর সাথে 5-তারা এবং জটিল কিছু সংযোজন করার প্রয়োজন নেই,তবে এটি আবশ্যিকভাবেই কিছু পুষ্টিকর এবং স্বাদযুক্ত হবে সেটি খেয়াল রাখবেন।

CLTD: banglaparenting

Sharing is caring!

Comments are closed.