দুই বাচ্চার মধ্যে ঝামেলা লেগেই থাকে? জেনে নিন কী করবেন
ভাই-বোনের মধ্যে প্রায়ই পারস্পরিক প্রতিযোগিতা দেখা যায়। যে কোনও সম্পর্কেই অল্পবিস্তর প্রতিযোগিতা থাকে। যেমন পড়াশোনা বা খেলাধুলোয় একে অপরের থেকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রতিটি ভাই-বোনই প্রতিযোগিতা করে। এমনকি খাওয়া-দাওয়া, ওঠা-বসা, পোশাক-পরিচ্ছদের মতো সমস্ত ছোটখাটো বিষয়েও প্রতিযোগিতা দেখা দিয়ে থাকে। কিন্তু বাচ্চাদের মধ্যে এত বেশি প্রতিযোগিতাও ক্ষতিকর। কারণ এ কারণে ভাই-বোনের মধ্যে ঝগড়া-লড়াই বেঁধে যায়। অন্যকে হেনস্থা করে, ছোট করার প্রবণতা ত্যাগ করেন না এরা। বড় হয়েও তাদের মধ্যে এই মানসিকতা থেকে যায়। তাই অল্প বয়স থেকেই তাদের এমন মনোভব দূর করতে হবে। জেনে নিন বাচ্চাদের অত্যধিক প্রতিযোগী মনোভাব কী ভাবে দূর করবেন—
একে অপরের সঙ্গে তুলনা করবেন না
বাচ্চারা যা দেখে বা অনুভব করে, তেমনই তাদের আচরণে প্রকাশ পায়। তাই অভিভাবকদের কখনও নিজের দুই সন্তানের মধ্যে তুলনা করতে নেই। অভিভাবক যদি সব সময় দুই সন্তানের মধ্যে তুলনা করে যান, তা হলে সন্তানও নিজের ভাই বা বোনকে হেনস্থা করবে বা ছোট করার চেষ্টা করবে। তাই তাদের প্রশংসা করলেও, কখনও তুলনা করবেন না।
কোনও বিষয় স্পষ্টতা বজায় রাখতে সেখান
কোনও বিষয়ের প্রতি বাচ্চাদের স্পষ্ট ধারণা থাকার প্রবণতাকে উৎসাহিত করুন। তাদের বোঝান যে, ভাই বা বোনের পড়াশোনায় দুর্বল হওয়ার অর্থ এই নয় যে তারা পড়াশোনায় ভালো না। বরং পড়াশোনার পরিবর্তে তারা খেলাধুলোয় পারদর্শী। কোনও একটি জিনিসকে কেন্দ্র করে পরস্পরের মধ্যে তুলনা করবেন না। বরং তাদের একটি দুর্বলতার পরিবর্তে অপর গুণ খুঁজে বার করুন। এমনকি দুর্বলতার সময়ে পরস্পরের সঙ্গে থাকতে উৎসাহিত করুন।
সীমা নির্ধারণ করে দিন
সমস্ত ভাই-বোনই হাসি-ঠাট্টা, আবার একে অপরকে বিরক্ত করে থাকে। এতে কোনও সমস্যা নেই। তবে কোনও হাসি-ঠাট্টা বা মজা যাতে সীমা না-ছাড়িয়ে যায়, সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। হাসি-ঠাট্টার কারণে কোনও সন্তান কষ্ট পেলে, তাতে হাসাহাসি করা উচিত নয়। বরং উভয় পক্ষকেই বুঝিয়ে দিন যাতে, এমন ঠাট্টা-তামাশা কখনও কেউ না করে।
বাচ্চার আবেগ বোঝার চেষ্টা করুন
মা-বাবা সন্তানের আবেগ বোঝার চেষ্টা না-করলে অথবা বাচ্চারা যদি অনুভব করে যে, পরিবারের সদস্যরা তাদের গুরুত্ব দেয় না, তখনই তারা নিজেকে অপরের থেকে শ্রেষ্ঠ দেখানোর চেষ্টা করে। তাই এমন পরিস্থিতি এড়িয়ে যাওয়ার জন্য তাদের মনোভব বোঝার চেষ্টা করুন। দুই সন্তানের মধ্যে এক রকম ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি।
দুই সন্তানকেই পরস্পরের গুণ দেখান
বাচ্চা কোনও ভুল বা দোষ করলে, তার জন্য তাদের বকাবকি না-করে তাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা প্রতিভার জন্য প্রশংসা করুন। দুই সন্তানের মধ্যে কোনও একজন পরীক্ষা অপরের তুলনায় কম নম্বর পেতে পারে। সে ক্ষেত্রে তার দোষ-ত্রুটি ধরার পরিবর্তে লুকিয়ে থাকা গুণগুলি স্মরণ করান ও পুরনো কাজের জন্য প্রশংসা করে ভবিষ্যতে ভালো ফলাফল লাভের জন্য উৎসাহিত করুন।
cl:eisamay