শিশুর কম উচ্চতা নিয়ে চিন্তিত? খাদ্য তালিকায় আনুন এই খাবারগুলি
সন্তানের উচ্চতা ঠিকমতো না বাড়লে সব বাবা মায়েরই তা নিয়ে চিন্তা হয়। পুষ্টিতে ঘাটতি থেকে গেলে উচ্চতা ঠিকমতো বাড়তে চায় না। জেনে নিন সন্তানের উচ্চতা বাড়ানোর জন্য তাদের খাদ্যতালিকায় কোন কোন খাবার অবশ্যই রাখা জরুরি।
শারীরিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর উপাদান না-পেলে শিশুদের দৈর্ঘ্যও বাড়ে না। পুষ্টিকর উপাদানের অভাবে শরীরে যে শুধুমাত্র রোগ দানা বাঁধে তাই নয়, বরং তাদের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধিও ব্যহত হয়। এ ক্ষেত্রে ছোটবেলা থেকেই তাদের খাদ্যতালিকায় এমন কিছু শাকসবজি ও খাদ্য বস্তু অন্তর্ভূক্ত করা উচিত, যা তাদের সামগ্রিক বিকাশে সাহায্য করবে।
সোয়াবিন
এতেও প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে, যা বাচ্চাদের কোষ ও হাড় গঠনে সাহায্য করে। এর ফলে বাচ্চারা লম্বা হতে পারে।
দুধ ও দুগ্ধজাত উপাদান
দুধে সবচেয়ে বেশি ক্যালশিয়াম থাকে, যা হাড় মজবুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়াও প্রোটিনেরও উল্লেখযোগ্য উৎস দুধ। কোষ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে প্রোটিন। তাই বাচ্চাদের প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ পান করানো উচিত। দুধ ছাড়াও, পনির, দই, চিজে ভিটামিন এ, বি, ডি এবং ই-র পাশাপাশি প্রোটিন, ক্যালশিয়ামে সমৃদ্ধ। এ সমস্ত উপাদান বাচ্চাদের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধিতে সহায়ক।
মাংস
হাড় ও মাংসপেশী বৃদ্ধি এবং মজবুত করতে উপযোগী ভূমিকা পালন করে মাংস। প্রোটিন ও নানান পুষ্টিকর উপাদানে সমৃদ্ধ মাংস, যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বাচ্চাদের দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে থাকে।
সবুজ শাকসবজি
মেথি, পালক, বাধাকপির মতো পাতাযুক্ত সবজি ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ক্যালশিয়াম, আয়রন ম্যাগ্নেশিয়ামে ভরপুর। এটি শরীরে পুষ্টিকর উপাদানের জোগানের পাশাপাশি বাচ্চাদের উচ্চতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে।
স্যালমন মাছ
এই মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড বর্তমান। হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে ওমেগা ৩। তার পাশাপাশি শারীরিক বিকাশেও এটি উপকারী। বিশেষজ্ঞদের মতে ওমেগা ৩ হাড় মজবুত করার জন্য জরুরি। আবার বাচ্চাদের ঘুমের সমস্যাও দূর করে এটি। তাই বাচ্চাদের খাদ্য তালিকায় স্যালমন মাছ অন্তর্ভূক্ত করা উচিত।
ডিম
প্রোটিনে সমৃদ্ধ ডিমকে আবার নিউট্রিশনের পাওয়ার হাউসও বলা হয়। একটি সমীক্ষা অনুযায়ী প্রতিদিন দুটি করে ডিম খেলে বাচ্চাদের দৈর্ঘ্য বাড়ানো যায়। ডিমের হলুদ অংশে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট বর্তমান, যা বাচ্চাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটিয়ে থাকে।
গোটা অন্ন
এতে নানান ধরনের মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টস থাকে, যা শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সাহায্য করে। গোটা অন্ন খেলে ক্যালশিয়াম, ভিটামিন, কপার, ম্যাগনিজ, জিঙ্ক ও আয়রনে মতো পুষ্টিকর উপাদানের জোগান পাওয়া যায়। গোটা অন্ন সরাসরি বাচ্চাদের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে থাকে।
লাল আলু
ভিটামিন এ-তে সমৃদ্ধ লাল আলু হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। এতে দ্রাব্য ও অদ্রাব্য ফ্যাট বর্তমান, যা পাচন তন্ত্রকে সুস্থ রাখে। পাশাপাশি অন্ত্রে ভালো ব্যাক্টিরিয়া গড়ে তুলতেও সাহায্য করে। ভিটামিন সি, ম্যাগনিজ, ভিটামিন বি৬, পটাশিয়ামের ভালো উৎস লাল আলু। এটি বাচ্চাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সাহায্য করে থাকে।
আমলকি
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ আমলকিও বাচ্চাদের উচ্চতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখার পাশাপাশি মস্তিষ্ককে তীক্ষ্ণ করে আমলকি।
ওটস
ওটসে ভিটামিন বি, ই, পটাশিয়াম ও জিঙ্ক থাকে। এটি বাচ্চাদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য লাভজনক। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা বাচ্চাদের পাচন তন্ত্রকে সঠিক রাখে। পাশাপাশি এতে উপস্থিত প্রোটিন বাচ্চাদের উচ্চতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
আমন্ড
ভিটামিন, মিনারেল-সহ নানান পুষ্টিকর উপাদানে সমৃদ্ধ আমন্ডও বাচ্চাদের উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। এতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার, ম্যাগনিজ, ম্যাগনেশিয়াম এবং ভিটামিন ই থাকে। এটি বাচ্চাদের হাড় মজবুত করে।
বেরি
রাস্পবেরি, ব্ল্যাকবেরি, ব্লুবেরি ও স্ট্রবেরিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। কলা মেরামতি করতে ও বাচ্চাদের দৈর্ঘ্য বাড়াতে সাহায্য করে এগুলি।
ডাল
প্রোটিন ও ফাইবারে সমৃদ্ধ ডাল। এতে আবার ফ্যাট কম থাকে। বাড়ন্ত বাচ্চাদের শারীরিক গঠনের জন্য এগুলি অত্যন্ত জরুরি। তাই প্রতিদিন বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের ডাল খাওয়াবেন।
cl: eisamay