আপনার বাচ্চা কি কিছু মনে রাখতে পারেছ না? তার স্মৃতিশক্তি বাড়াতে কী কী করবেন?
শিশুর প্রথম শেখা সবসময়ই তার বাবা মায়ের কাছে খুব স্মরণীয় হয়। তার প্রতিটি চলন, শেখানো কথা বলা এসবই বাবা মাকে আনন্দিত করে। একইসঙ্গে ছোট্ট বলেই সে অনেকসময় ভুলে যায় শেখানো কথাটা। বাবা মাকে বারবার ধরিয়ে দিতে হয় কথাগুলো। কিভাবে বাড়ানো যায় শিশুর স্মৃতিশক্তি? কিভাবে তার শেখার পদ্ধতিকে করে তোলা যায় উন্নত যাতে সে মনে রাখতে পারে তার প্রথম শেখা ছোট ছোট কথাগুলো অথবা ছোট ছোট ঘটনা। এই নিয়ে কিন্তু দেশবিদেশে অনেক সাইকোলজিস্টরা অনেক পরামর্শও দেন।
১। গান বা ছড়ায় শেখান: শিশুরা সুর, লয় , ছন্দ এসবের প্রতি খুব সেনসিটিভ হয়। তাই সহজেই এগুলোর সঙ্গে একাত্ম হয়ে পড়ে। ফলে শিশুকে কিছু শব্দ,পশুপাখি বা কথা শেখানোর সময় চেষ্টা করুন ছড়া বা গানের মাধ্যমে শেখানোর। ছড়ার ছন্দের জন্য যেকোনও শেখানো জিনিস শিশুর মনে রাখতে সুবিধা হয়। এমনকি যখন পরে তার স্মৃতি থেকে তাকে মনে করানোর জন্য আপনি কিছুটা বলে দেবেন, ছন্দের জোরেই ও বাকিটা মনে করে বলতে পারবে। একইভাবে গানের ক্ষেত্রেও সুর ও তালের সঙ্গে সঙ্গে কথাগুলো ধীরে ধীরে হৃদয়ঙ্গম হয়। পরে যখন তার স্মৃতির পরীক্ষা নেওয়া হয় দেখা যায় সে গানের সুরেই কথাগুলো বলার চেষ্টা করছে।
২। আশেপাশে শান্ত রাখুন: যখন শিশুকে কোনও শব্দ বা কথা শেখাবেন তখন আশেপাশে যাতে আওয়াজ বা গোলযোগ না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। আশেপাশে আওয়াজ হলে শিশু কৌতুহলবশত সেদিকেই মন দিয়ে ফেলে। তাই আপনার শেখানো জিনিস সে মন দিয়ে শুনতে পারে না।
৩। মজার মাধ্যমে শেখান: অনেকে মনে করেন মজা করলে শিশু সেইটি মন দিয়ে শেখে না, শুধু মজা হিসেবেই তা নেয়। কথাটা ঠিক নয়, মজার মাধ্যমে শিশুকে শেখালে সে শেখানো জিনিস বেশি সময় ধরে মনে রাখে। পরে যখন তার স্মৃতির পরীক্ষা নেওয়া হয়, তখন একই মজাটি করলেই সে নিজে থেকে শেখানো জিনিসটি বলে বা করে।
৪। বারবার বলুন : যে জিনিসটি শেখাতে চাইছেন তা একবার বললেই হবে না। চার থেকে ছয় মাসের শিশুর পক্ষে একবার শুনে বা দেখে কোনকিছু মনে রাখা একরকম অসম্ভব। তাই যা শেখাবেন তা বারবার করে শেখান বা বলুন বা করে দেখান প্রতিদিন নিয়মিত করলে দেখবেন একদিঞ না শিশু নিজে থেকেই তা করতে আরম্ভ করেছে। এইভাবে বারবার শেখালে শিশু সহজে শেখানো জিনিস ভোলে না।
৫। ভিসুয়ালি শেখান : চেষ্টা করুন শিশুকে কোনও শব্দ ভিসুয়ালি শেখানোর। যেমন কাউ বা ডাক এই পশুপাখির নাম চেনানোর সময় টিভি বা বইতে থাকা ছবি একইসঙ্গে দেখিয়ে দিন। একইভাবে অআকখ শেখানোর সময় প্রতিটি অক্ষরের ছবি দেখান।
দেখার ফলে ওদের মস্তিষ্ক কথাগুলো শোনার পাশাপাশি ইমেজটাও রেকর্ড করে নেয়। এতে শিশুর শেখা জিনিসটির স্মৃতি বজায় থাকে অনেকদিন।
৬। হাসিমুখে শেখান : ইমোশনের এফেক্ট কিন্তু সবসময় আপনার শিশুর মধ্যে প্রতিফলিত হয়। আপনি যখন একটি শব্দ বা গান বা পশুপাখি শিশুকে শেখাতে বা চেনাতে যান, সেসময় যদি আপনার মুখে হাসি না থাকে তবে শিশুর শেখর ইচ্ছা কিন্তু কমে যাবে। আপনার মুখে হাসি শিশুর মধ্যে পজিটিভ আগ্ৰহ তৈরী হয় যা থেকে সে শেখার চেষ্টা করে ও শেখা জিনিস মনে রাখতে পারে। যে শব্দ বা কথা শিশু পজিটিভনেস নিয়ে শিখবে না তা কিন্তু সে মনে রাখবে না বেশিদিন।