করোনা ভাইরাস লকডাউন : মায়েদের জন্য রইল কিছু ওয়ার্ক ফ্রম হোম টিপস্

করোনা আতঙ্কে দুর্বিষহ জনজীবন। অফিস, স্কুল, পার্ক, শপিং মল এবং সিনেমা হল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। পরিবর্তন হয়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়। অফিস যাওয়ার পরিবর্তে কাজ করতে হচ্ছে বাড়ি থেকেই অর্থাৎ ওয়ার্ক ফ্রম হোম। বাচ্চাদের স্কুল যাওয়া বন্ধ হয়েছে, পড়াশোনা হচ্ছে অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে।

যাবতীয় কাজ শেষ করতে হচ্ছে বাড়িতে থেকেই। ফলে একঘেয়েমি এসেছে রোজকার জীবনে। চার দেওয়াল ছাড়া দ্বিতীয় কোনও জায়গা নেই। চাকুরীরত মায়েদের ক্ষেত্রে লকডাউনের এই সময়টা সত্যিই খুব কষ্টকর। কারণ, তাদের পক্ষে নিজের ঘর সামলে, বাচ্চাকে সামাল দিয়ে তারপর অফিসের কাজ করা খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আজ আমরা সেই সকল মায়েদের জন্য বোল্ডস্কাই এর পক্ষ থেকে সহজে কাজ করা এবং সুস্থ থাকার কয়েকটি টিপস্ দেব। দেখে নিন কোন পদ্ধতিতে ওয়ার্ক ফ্রম হোম সহজেই করতে পারবেন।

১) একটি রুটিন মাফিক চলুন ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত পুরো সময়ের জন্য একটি নির্ধারিত কর্মসূচি তৈরি করুন। সময় অনুযায়ী সেই সকল কাজ করার চেষ্টা করুন। বাচ্চাকে ঘুম থেকে তোলার পর তাকে যত্ন নিতে হয় মায়েদের।

কারণ, সন্তান তার মায়ের কাছে সবসময় থাকতে চায়। তাই তাদের একটি কাজ দিয়ে আপনি আপনার অফিসের কাজ করতে শুরু করুন। করোনা ভাইরাস লকডাউন : এইসময় পিতা-মাতার ভূমিকা সঠিকভাবে পালন করুন, দেখে নিন কিছু টিপস্

২) আরামদায়ক কাজের জায়গা তৈরি করুন আপনি যেহেতু অফিসে কাজ করছেন না তার অর্থ এই নয় যে, আপনার বাড়িতে সঠিকভাবে অফিসের কাজ করতে পারবেন না। তাই আপনি আপনার কাজের জন্য এমন একটি জায়গা তৈরি করুন যা আপনার মনোযোগ, শক্তি এবং আত্মবিশ্বাসকে উন্নত করতে সহায়তা করবে। ফলে, নিজের কাজ এবং বাচ্চাকে সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যায় পড়তে হবে না। ৩) বাচ্চাদের বিনোদন দিন বাচ্চার পছন্দের খেলনা, বই বা অন্যান্য কিছু জিনিস তার হাতে তুলে দিল।

এটি তাদের পড়া, লেখা ও জ্ঞান অর্জনের দক্ষতা উন্নত করতে সহায়তা করবে এবং আপনাকে আপনার অফিসের কাজে নিযুক্ত রাখতে সহায়তা করবে। আপনার তৈরি কাজের জায়গার কাছাকাছি বাচ্চাদের ক্রিয়া-কলাপ এর জন্য একটি জায়গা তৈরি করুন এবং তাদের বোঝানোর চেষ্টা করুন ওই নির্দিষ্ট জায়গাটি তাদের জায়গা। এতে বাচ্চা আপনার কাছে বারবার আসবে না। ৪) বিরতি নিন কাজের মাঝে বিরতি নেওয়া আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ৯০ শতাংশ কর্মরত মানুষ মনে করেন মধ্যাহ্নভোজের বিরতি তাদের মধ্যে সতেজতাকে ফিরিয়ে আনে। কিন্তু, বাড়িতে কাজ করার ক্ষেত্রে এই একটি মাত্র বিরতি বাদ দিয়ে আরও কয়েকটি বিরতি নেওয়া জরুরি। বিশেষত যখন আপনার বাচ্চা আপনার কাছে থাকে। বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য কমপক্ষে ১০ মিনিট বিরতি নিন। এই বিরতিটি আপনার সহকর্মীদের জানিয়ে রাখুন। একজন মা হিসেবে আপনি যে সবকিছু সমানতালে করে যাচ্ছেন এবং আপনি আপনার কাজে নিবেদিত আছেন তা বাকিদের জেনে রাখা প্রয়োজন। কারণ, ভবিষ্যতে যেন আপনার কাজের উপর এটি প্রভাব না ফেলে।

৫) বাড়ির বাকি সদস্যের সঙ্গে কাজ ভাগ করুন যদি আপনাকে এবং আপনার সঙ্গীকে ওয়ার্ক ফ্রম হোম করতে হয় তবে বাচ্চার যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনারা উভয়েই কিছু সময় ভাগ করে নিতে পারেন।

বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত থাকলে বাচ্চার যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের দায়িত্ব দিন। এতে আপনারা উভয়ই সঠিকভাবে কাজ করতে সক্ষম হবেন। এসব পদ্ধতি মেনে চলার পাশাপাশি আপনার সুস্থ থাকাটা অত্যন্ত প্রয়োজন।

তাই সুস্থ থাকতে যে নিয়মগুলো মেনে চলবেন দেখে নিন। ১) বসে কাজ করার সময় চেয়ার থেকে টেবিলের উচ্চতা যেন একটু বেশি থাকে, যাতে আপনি কোমর এবং ঘাড় সোজা রেখে কাজ করতে পারেন। এতে শরীরের ব্যথা, কোমর ও ঘাড়ের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ২) শুয়ে কিংবা হেলান দিয়ে দীর্ঘক্ষণ কাজ করবেন না। ৩) কাজ করার মাঝে বিরতি নিন এবং বাচ্চাদের সময় দিন। শিশুদের জন্য বিপজ্জনক কিছু পণ্য, যা প্রত্যেক পিতা-মাতার এড়ানো উচিত ৪) কাজ করার মাঝে সঠিক সময়ে নিজে খাবার খান এবং বাচ্চাদেরও সঠিক সময়ে খাওয়ান। ৫) এই সময়ে শরীরকে সুস্থ রাখতে প্রয়োজন মাফিক জল পান করুন এবং বাচ্চাকে পান করান। ৬) কাজ করার পর ফিজিক্যাল স্ট্রেস ও মেন্টাল স্ট্রেস থেকে মুক্তি পেতে বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়েই কিছু যোগাসন অভ্যাস করুন। এতে উভয়েই সুস্থ থাকবেন।
boldsky

Sharing is caring!

Comments are closed.