বাচ্চাদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত দুটি খাবারের রেসিপি!
শহরের বাচ্চারা স্কুলে যাওয়ার আগে খাবার খেতেই চায় না।
তাই মায়েরা তাড়াহুড়ু করে বাচ্চাদের ব্যাগে বিভিন্ন ধরনের ফাস্ট ফুড বা জাঙ্কফুড দিয়ে থাকেন। স্কুল শেষে বা টিফিনের সময় (বিরতির সময়) বা স্কুল ছুটির পর বাচ্চারা বার্গার, ফুচকা, চটপটি, ভেলপুরি খেতে ব্যস্ত হয়ে পরে। মা-বাবাও অনায়াসে এসব হাতে তুলে দিচ্ছেন। একবারও ভাবেন না আদরের সন্তানকে খাওয়ার নামে এক প্রকার বিষ তুলে দিচ্ছেন।
আমাদের দেশে প্রায় সব স্কুল-কলেজের সামনেই রয়েছে ঝাঁলমুড়ি, চটপটি, ফুসকা, ভেলপুরি, বার্গারসহ নানা রকম মুখরোচক খাওয়ার দোকান। এসব স্কুল-কলেজে পড়ুয়া ছেলেমেদের খুবই পছন্দের খাবার। আর তারা তাদের দিনের প্রথম খাবারই শুরু করে এসব খাবার দিয়ে। অথচ এ ফুচকা, চটপটি বা
ভেলপুরি রাস্তার ধারের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বানানো হয়। সেই সঙ্গে চটপটি ও ফুসকায় মেশানো হয় রং। অভিভাবকরাও জানেন এর ক্ষতিকর দিক। কিন্তু শিশুরা বায়না ধরে বলেই খাওয়াতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। সঙ্গে রয়েছে কোমল পানীয় নামক রঙ্গীন পানি নামক এক প্রকার বিষ।
বলছেন, এসব খাবার খেয়ে শিশুরা পেটের পিড়াসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শুধু তাই নয় দীর্ঘ মেয়াদে কিডনির জটিল রোগ, লিভার সিরোসিস এমনকি ক্যান্সারও হতে পারে এসব খাবারের কারণে। তাই শিশুদের বাইরের খোলা খাবার না খাওয়াতে অভিভাবকদের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
বাইরের মুখরোচক খাবার সম্পর্কে পুষ্টি বিজ্ঞানী ও চিকিৎসক ডা. খুরশিদ জাহান জানান, ‘বাচ্চাদের স্কুলের টিফিনের বিষয়ে অভিভাবকদের আরও বেশি সচেতন হওয়া দরকার। তা না হলে আজকের শিশু দীর্ঘমেয়াদে ঝুঁকির মুখে পড়বে। তাই ঘরে তৈরি খাবারে শিশুদের অভ্যস্থ করতে হবে। কারণ রাস্তার পাশের খোলা খাবার বা ফাস্ট ফুড, মোড়ক জাত খাবার পেটের পিঁড়া তৈরি করে থাকে। এমনকি ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।’
তাই এসব ক্ষতিকর খাবার থেকে বাচ্চাদের খাদ্যাভ্যাসকে পরির্তন করতে ঘরে বানানো দুটি স্বাস্থ্যসম্মত নাস্তার রেসিপি এখানে তুলে দেওয়া হলো। রেসিপির প্রধান উপকরণ সবজি হলেও খেতে সুস্বাদু হবে। তাই বাচ্চারা খেতে আগ্রহী হবেন। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক ঘরে বসে কীভাবে মিক্সড সবজি রোল এবং পিজ্জা রোল বানাবেন?
মিক্সড সবজি রোল বানাবেন যেভাবে
উপকরণ: ময়দা এককাপ, একটি ডিম, গাজর, ফুল কপি, মটরশুটি, পেপে, বরবটি বা মৌসুমি অন্য কোনো সবজি হতে পারে। এর সঙ্গে পরিমাণ মতো লবণ, বিস্কুটের গুঁড়া, মাছ সিদ্ধ করে (কাঁটা বেঁছে) কিমার মত করে নিতে হবে। তবে আপনি চাইলে মাছের বিকল্প হিসেবে মাংসও নিতে পারেন।
বানানোর প্রক্রিয়াঃ
প্রথমে সবজিগুলো ভালোভাবে সিদ্ধ করে ব্লেন্ডারে পেস্ট বা বেটে নিতে হবে। তার পর এক কাপ সবজি পেস্ট এককাপ ময়দার সঙ্গে ডিমের কুসুম (সাদা অংশ রেখে দিবো) মেখে নিতে হবে। এই তরল খাদি অল্প অল্প করে প্রাইয়ে ফেলে রুটির মতো ছড়িয়ে দিতে হবে। পরে রুটির মধ্যে সিদ্ধ মাছ বা মাংসের কিমাসহ অন্য সব উপকরণ দিয়ে পাটিসাপটা পিঠার মত তৈরি করতে হবে। এখন ভেতরে মাছ বা মাংসের পুর দিয়ে রোলের মতো তৈরি করবেন। বানানো শেষে ডিমের সাদা অংশ ভালো করে গুটে রোলের ওপর প্রলেপ দিতে হবে তারপর বিস্কুটের গুঁড়া মেখে ১০ থেকে ১৫ মিনিট নরমাল ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। এর পর হালকা তেলে ব্রাউন করে ভেজে নিতে হবে। আর এভাবেই তৈরি হয়ে যাবে সুস্বাদু সবজি রোল।
পিজ্জা রোল বানাবেন যেভাবেঃ
উপকরণ: ময়দা দুই কাপ, টেবিল চামচের দুই কাপ লাল চিনি, গুঁড়া দুধ দুই টেবিল চামচ, তেল দুই টেবিল চামচ, ডিম একটা, মিহি কুচি সবজি এক কাপ, মাছ, মাংস এক কাপ, আধা চামস ইস্ট ও পরিমাণ মতো লবণ ও সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য মসলা।
বানানের প্রক্রিয়াঃ
প্রথমে সবজির সঙ্গে মাছ অথবা মাংসের কিমা মিশিয়ে নিতে হবে। এখন ডিমের কুসুম বাদ দিয়ে সবগুলো উপকরণ কুসুম গরম পানি দিয়ে একসঙ্গে মেখে হালকা তাপে রাখতে হবে। দেখবেন ৩০ মিনিটের মধ্যে এটি ফুলে যাবে। তার পর রুটি বানানোর মতো ছোট ছোট দলা বা খামি বানিয়ে নিবেন।
এবার খামি বা দলাকে একটু লম্বা করে বেলে নিবেন। তারপর ছুরি দিয়ে মাখে মাঝে আচড় দিয়ে নিতে হবে। এবার এ আচড়ের মাছে পুর দিয়ে বন্ধ করে উল্টিয়ে রাখবো। তার পর ডিমের কুসুম এটার ওপর মেখে বা ব্রাশ করে নিন। তারপর ফ্রাইপেনে বা ওভেনে ঢাকনা দিয়ে অল্প আচে ১৫ মিনিট রাখবো। এ ভাবেই তৈরি করতে পারেন সুস্বাদু পিজ্জা রোল।