শিশুর হাড় শক্ত করার খাবার

দেহের কাঠামো গঠিত হয় অস্থি বা কঙ্কাল দিয়ে। যা বহন করে সমগ্র মানব শরীরকে। শিশুর হাড়ের গঠনে, ক্যালসিয়াম, ফসফেট, ম্যাগনেসিয়াম তো লাগেই কিন্তু ক্যালসিয়াম যেন ভালোভাবে শরীরে প্রবেশ করতে পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি ও দরকার। তাই শিশুর হাড়ের বৃদ্ধিতে ও হাড়কে শক্ত করার জন্য পরিমিত খাবারের সাথে সাথে পর্যাপ্ত সূর্যের আলোর প্রয়োজন রয়েছে।

সূর্যের আলো শিশুর দেহের চামড়ায় পরে তারপর লিভার ও কিডনিতে ভিটামিন ডি তে পরিণত হয় যা আমাদের শরীর থেকে ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে। সূর্যের আলো ও ক্যালসিয়ামের অভাবে শিশুর রিকেটস নামক এক প্রকার রোগ হয়, যাতে বাচ্চার হাড় বেঁকে হাত ও বুকের গিরা ফুলে যায়। ঘন ঘন কাশি হয়। কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো হাড় ক্ষয়ে সহায়তা করে আবার কিছু খাবার সাহায্য করে গঠনে।

হাড় ক্ষয়কারী খাবার

প্রথমে বলতে হয় অতিরিক্ত লবণ গ্রহণের কথা। রান্না খাবার ছাড়া আর কোন ভাবে অতিরিক্ত লবন খাওয়া চলবে না। চিপস, বিভিন্ন ফাস্টফুড, কাঁচা খাবারে বা সালাদে মেশানো লবণ খুব খারাপ। এগুলো বন্ধ করুন। লবণ বা সোডিয়াম ক্লোরাইড দেহ থেকে ক্যালসিয়াম বের করে দিয়ে হাড়কে করে ফেলে দুর্বল।

বাচ্চাদের পছন্দের জিনিস সফট ড্রিংকস হাড়ের জন্য ক্ষতিকর। এগুলো সুপ্তভাবে হাড়কে ক্ষয় করে যাচ্ছে। এসব ড্রিংকস এ ফসফরিক অ্যাসিড যা মুত্রের মাধ্যমে ক্যালসিয়াম বের করে দেয়, ফলাফলঃ অস্থি ক্ষয়।

ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারঃ

ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ শাক হলঃ লালশাক, কচুশাক, পালংশাক ও মেথিশাক।

ক্যালসিয়ামে ভরপুর সবজি

কাচা কলা, বিট, কচুরলতি, কচু, কচুরমুখী, কলার মোচা, শজনে ডাটা, মটরশুটি, বাধাকপি, পেয়াজ, রসুন,সূর্যের তাপে শুকানো টমেটো, শালগম, ঢেড়স, মিষ্টি আলু, লেটুসপাতা, ধনেপাতা, ওল, মিষ্টি কুমড়া, শিম, চালকুমড়া, মুলা, বরবটি করলা।

ক্যালসিয়ামে পূর্ন ফল

পিয়ারস, পেয়ারা, কাঠবাদা্ম, কাজুবাদাম, কমলা লেবু, তরমুজ, জলপাই, আপেল, খেজুর , চালতা ,কলা ,আনারস, আঙ্গুর , আঁতা, পেঁপে, ডুমুর, কাঁঠাল, নাশপাতি, মালটা, বড় বাতাবি, লেবু, আখরোট, আলু বোখারা, লিচু, আম, জাম, ও স্ট্রবেরি।

যেসব খাবারে রয়েছে ক্যালসিয়াম

গরু ছাগলের দুধ, ডিম, মাখন, পনির,ইয়োগার্ট,  দই, ছানার মিষ্টি, জলপাইয়ের তেল, কড লিভার অয়েল, কলিজা, গরু, খাসি,  ও মুরগির মাংস।

ক্যালসিয়ামের পূর্ন মাছ

ছোট মাছের কাঁটা রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম। আর মাছের মধ্যে মলা, ঢেলা, কাচকি, মাগুর, শিং ও কোরাল। ওষুধ ছাড়া সংরক্ষণ কৃত মাছের শুটকি, সামুদ্রিক মাছের মধ্যে টুনা,স্যামন, ক্যাভয়ার, সারভিন, ম্যাককেরেল  ইত্যাদি।

 

কিছু পরিচিত খাবারে ক্যালসিয়াম এর পরিমাণ দেয়া হলোঃ

  • গরুর তরল দুধ ১২০ মিলি গ্রাম ক্যালসিয়াম ১০০ গ্রামে
  • গরুর দুধের ১৪৯ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ১০০ গ্রামে
  • পনির ৭৯০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ১০০ গ্রাম
  • শুকনা খেজুর ১২০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ১০০ গ্রাম
  • মিষ্টি কুমড়ার ফুল ১২০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ১০০ গ্রাম

ডাটা ২৬০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ১০০ গ্রাম

  • সিম ২১০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ১০০ গ্রাম
  • ঢেড়স ১১৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ১০০ গ্রাম
  • পুইশাক১৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ১০০ গ্রামে
  • কচু শাক ১৫৪০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ১০০ গ্রাম
  • পালংক শাক ৯৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ১০০ গ্রামে

ডাঃ আবু সাঈদ শিমুল।

Sharing is caring!

Comments are closed.