দুপুরের খাবার না খাওয়া শিশুদের জন্য মারাত্বক ক্ষতির যে দিক গুলো!
স্কুলপড়ুয়া ৪ হাজার ৮০০ জন শিশুর খাদ্যতালিকা ও পুষ্টি বিষয়ে এক গবেষণা পরিচালিত হয়। সুইজারল্যান্ডের নেসলে রিসার্চ সেন্টারের গবেষক অ্যালিসন এলড্রিজ বলেন, গোটা দিনের মধ্যে দুপুরের খাবার শিশুদের জন্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষ করে ফ্যাট-সল্যুবল ভিটামিন এ এবং ডি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ হাড় গঠনের জন্য অতি জরুরি। আর এর বেশিরভাগটাই আসে দুপুরের খাবার থেকে।
এর আগে বহু গবেষণায় পুষ্টি গ্রহণের পরিমাণ বা সকালের নাস্তা না খেলে কি অবস্থা হয় তা দেখার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু দেখা হয়নি, দুপুরের খাবার না খেলে শিশুর কি ঘটে। এলড্রিজ এবং তার সহকর্মীরা তাই দেখার চেষ্টা করেছেন।
একটি নির্দিষ্ট দিনে ৪-৮ বছর বয়সী শিশুদের ৭ শতাংশ, ৯-১৩ বছর বয়সী শিশুদের ১৬ শতাংশ এবং ১৪-১৮ বছর বয়সী শিশুদের ১৭ শতাংশকে দুপুরের খাবার দেওয়া হয়নি।
এদের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী শিশুরা ছুটির দিনটাতে দুপুরের খাবার খায় না। ৯-১৮ বছর বয়সীদের ৯ শতাংশ ছুটির দিন দুপুরের খাবার খায় না।
যে শিশুরা দুপুরের খাবার বাদ দেয় তাদের ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে-এর অভাব দেখা দেয়। খনিজেরও ঘাটতি চোখে পড়ে তাদের। আবার দুপুরের খাবার যারা খায়নি তারা অন্যদের তুলনায় কম প্রোটিন, ফাইবার এবং ফ্যাট গ্রহণ করে।
এলড্রিজ জানান, কেবলমাত্র দুপুরের খাবা না খেলে যে পরিমাণ পুষ্টির ঘাটতি দেখা গেছে তা সত্যিই অবাক করার মতো। সারা দিনে অন্যান্য বেলার খাবারেও এমনটা দেখা যায়নি। দীর্ঘমেয়াদে সুস্বাস্থ্যের জন্যে শিশুদের নিয়মিত দুপুরের খাবার খাওয়া জরুরি।
নিউ ইয়র্কে অবস্থিত মন্টিফিয়োরি মেডিক্যাল সিস্টেমের চিলড্রেনস হসপিটালের নিউট্রিশন অ্যান্ড কমিউনিটি আউটরিচ বিভাগের পরিচালক সান্দ্রা আরেভালো জানান, নিয়মিত ক্ষুধা লাগা এবং সুষ্ঠু বিপাকক্রিয়ার জন্যে মধ্যাহ্নভোজ অতি জরুরি।
স্কুলে শিশুরা সাধারণত দুপুরে খায় না এবং বহু সময় খালি পেটে থাকে। অনেকে আবার সকালে কিছু না খেয়ে স্কুলে যায় এবং বাড়ি ফিরে প্রথম খাবার খায়। এরা মারাত্মক পুষ্টিহীনতায় ভুগতে পারে।
তাই শিশুরা স্কুলে যাওয়ার আগে তাদের পুষ্টিকর দুপুরের খাবার প্রস্তুত করে দিতে হবে। এটা খাওয়ার অভ্যাসও গড়ে দিতে হবে। নয়তো অন্যান্য সময় যত খাবারাই খাওয়া হোক না কেন, পুষ্টির অভাব থেকেই যাবে।