এক বছরের ছোট বাচ্চাদের কেন বাহিরের দুধ খাওয়াবেন না?
গরুর দুধের কৌটা বা প্যাকেটের নিচের কোনায় ছোট্ করে লেখা থাকে “এক বছরের নিচের শিশুর জন্য প্রযোজ্য নয়”।
কিন্তু কখনো কি আমরা বুঝতে চেষ্টা করেছি যে কেন কথাটি লেখা থাকে? এক বছরের নিচের বয়সি বাচ্চাদের বাহিরের দুধ খাওয়ালে তাদের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। মায়ের বুকের দুধের উপকারিতা ও বাহিরের দুধের বিভিন্ন ক্ষতিকর দিক সমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলো।
মায়ের বুকের দুধের উপকারিতাঃ
মায়ের বুকের দুধেই সদ্য ভূমিষ্ঠ বাচ্চার পূর্ণ সুষম খাবার রয়েছে । এতে খাদ্যের সবকয়টি উপাদান যেমন শর্করা, আমিষ, স্নেহ, ভিটামিন, মিনারেল এর সঠিক সংমিশ্রণ থাকে। তাই শিশুর পুস্টির জন্য বাড়তি কোন উৎসের আর দরকার হয়না। এছাড়া মায়ের বুকের দুধ পান করালে মা এবং সন্তানের মধ্যে গভীর ভালবাসার বন্ধন তৈরি হয়। নিয়মিত বুকের দুধ পান করালে ঐ মায়ের স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও অনেক কমে যায়।
বাহিরের দুধ বা কৌটার দুধের ক্ষতিকর দিকসমূহ:
- ১। বাহিরের দুধ খেলে বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় ফলেব সে বিভিন্ন ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগে আক্রান্ত হয় বেশী।
- ২। যে বাচ্চারা বাহিরের দুধ খায় তাদের প্রাপ্ত বাচ্চাদের দেহ স্থূলকায় এবং বিভিন্ন অ্যালার্জি জনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশী থাকে।
৩। বাহিরের দুধে সোডিয়ামের পরিমাণ বেশী থাকে। এর কারণে বাচ্চার পেটে গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে পেট ব্যথা, বমি সহ বিভিন্ন ধরনের জটিলতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
- ৪। বাচ্চাকে বাহিরের দুধ খাওয়ালে বাচ্চার পাশাপাশি মায়ের নিজেরও অনেক ক্ষতি হতে পারে। জন্মের পর বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ালে প্রসব পরবর্তী রক্তপাত, জরায়ুর পূর্বাবস্থায় ফিরে যাওয়া ব্যাহত হতে পারে। এছাড়া তার ব্রেস্ট ও ওভারিয়ান ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যেতে পারে।
৫। মায়ের বুকের দুধ বাচ্চার জন্য অনেক সহজলভ্য। অন্য দিকে বাজারে প্রাপ্ত দুধের দাম অনেক বেশী হওয়ায় বাড়তি খরচের বোঝা বহনের ঝমেলাতো আছেই।
- ৬। স্তন্যপানকারী মায়ের সাথে বাচ্চার একটা আত্মিক বন্ধন তৈরি হয়। বাহিরের দুধ খাওয়ালে এই দুর্লভ স্নেহের বন্ধনের ঘাটতি ঘটে।
শিশুর নিকট মায়ের দুধের বিকল্প নেই। বাহিরের দুধ খাওয়ানোর কিছু উপকারী দিক থাকলেও ক্ষতির পরিমাণ তার থেকে বহুগুণ বেশি।
তাই বাচ্চা এবং মায়ের সুস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য বাহিরের দুধ পরিহার করাই ভালো ।
Source: daktarbhai