শিশুর ডাউন সিনড্রম
এটা ক্রোমোজোমের একটি ত্রুটির কারনে হয়। ২১ নম্বর জোড় ক্রোমোজোমে একটি এক্স ক্রোমোজোম বেশী থাকায় এমনটি হয়ে থাকে, এর ফলে রোগীর দেহকোষে একটি বাড়তি Cromosome থাকে। এই সমস্যা নিয়ে জন্মানো শিশু জন্মের সময় থেকেই কিছুটা অস্বাভাবিক থাকে, জন্মের পর এদের হাত-পা একটু কম নড়াচড়া করে, হৃদপিন্ডে অস্বাভাবিক ছিদ্র থাকতে পারে। কিছুটা বড় হলে দেখা যায় এদের মুখাবয়ব অনেকটা মংগোলিয় প্রকৃতির – চ্যাপ্টা নাক, ছোটো চোখ, মাথার পেছনটা সমতল এবং সেই সাথে ছোটো কান দুটো একটু নিচের দিকে বসানো দেখেই চিকিৎসক বুঝতে পারেন শিশুটি ডাউন সিনড্রম এ ভুগছে।
এসকল শিশুর হাত-পা গুলো ছোটো ছোটো এবং হাত ও পায়ের পাতা গুলো বড় বড় হয়। বুদ্ধিমত্তাও এদের কিছুটা কম থাকে (IQ ৫০ এর কম হয়ে থাকে)।
সন্তান গর্ভে থাকা অবস্থায় Amniocentesis পরীক্ষাটি করালে বোঝা যায় সন্তানটি ডাউন সিনড্রম নিয়ে জন্মাবে কিনা। ক্যারিওটাইপিং (Karyotyping) পরীক্ষার মাধ্যমে ক্রোমোজোম পর্যবেক্ষন করে ডাউন সিনড্রম নিশ্চিত করা হয়।
চিকিৎসক রোগটি সম্পর্কে নিশ্চিত হলে অনেক সময়ই গর্ভবতী মাকে গর্ভপাত বা Abortion করানোর ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ডাউন সিন্ড্রম নিয়ে জন্মানো শিশুটির চিকিৎসার দ্বারা ভালো হয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এসকল রোগীর গড় আয়ুও বেশ কম। শিশুর জন্মগত হৃদরোগ থাকলে সেটির চিকিৎসা করাতে হবে। উন্নত বিশ্বে এসব শিশুদের জন্য ভিন্ন ধরনের স্কুল /শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এমন শিশুর মা-বাবা কে তাদের পরবর্তী সন্তান গ্রহনের ব্যাপারে সাবধান হওয়া উচিত এবং চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই কেবল আরেকটি সন্তান গ্রহনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা উচিত। যে সকল মায়ের প্রথম সন্তান গর্ভে আসার সময় তার বয়স ৩৫ বা তার উর্ধে থাকে তার সন্তানটির ডাউন সিনড্রম হবার সম্ভাবনা বেশী। এই ভাবে মায়ের বয়স বাড়ার সাথে সাথে সন্তানের ডাউন সিনড্রম হবার সম্ভাবনা বাড়তেই থাকে।