কোমল ত্বকে কেমন তেল?শিশুদের ত্বক নাজুক বলে শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় দ্রুতই তা ফেটে যায়। তাই ত্বকের সুরক্ষায় অনেক মায়েরই প্রথম পছন্দ তেল। কিন্তু…
শিশুদের ত্বক নাজুক বলে শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় দ্রুতই তা ফেটে যায়। তাই ত্বকের সুরক্ষায় অনেক মায়েরই প্রথম পছন্দ তেল।
কিন্তু কোন তেল বাচ্চার জন্য নিরাপদ কিংবা কখন তেল মাখা যাবে—এসব নিয়ে অনেকে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। শিশুর শরীরে কোন তেল উপযোগী এ বিষয়ে জানালেন শোভন মেকওভার স্কিন স্টুডিওর স্বত্বাধিকারী শোভন সাহা। ]
শীতের এই সময়টায় বড়দের পাশাপাশি শিশুদের ত্বকও শুষ্ক হয়ে পড়ে। এই সময় সোনামণির ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে দরকার বাড়তি যত্নের। অনেকে মনে করেন, শীতে শিশুদের শরীরে তেল মাখাতেই হবে। আবার সরিষার তেল গায়ে মেখে শিশুকে উঠানে সকালের মিষ্টি রোদে রাখার পরামর্শ দেন অনেকে। কেউ কেউ আবার ঠাণ্ডা লেগে গেলে তার বুকে-পিঠে তেল মালিশ করে থাকেন। কিন্তু শিশুর শরীরে তেল মাখানোর ব্যাপারে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। ডাক্তার যখন বলবেন, তখন থেকেই নবজাতকের শরীরে তেল মাখতে পারেন।
তবে তেল ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
কোন তেল
শুষ্কতা প্রতিরোধে ছোট্ট সোনামণির শরীরে তেল মাখতেই পারেন। তবে শিশুর শরীরে কখনোই অ্যারোমেটিক তেল লাগানো উচিত নয়। এই তেলে থাকা কেমিক্যাল শিশুর ক্ষতির কারণ হতে পারে।
এই তেলের পারফিউম ওর নার্ভ সিস্টেমে বিঘ্ন ঘটাতে পারে। এ ক্ষেত্রে অলিভ অয়েল হতে পারে ভালো সমাধান। এটা ত্বককে নরম করে। হালকা করে শিশুর ত্বকে অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন দ্রুত হয়। অলিভ অয়েল শিশুর শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
কখন তেল মাখবেন
শিশুর ত্বকে যে ধরনের তেলই ব্যবহার করেন না কেন, তেল দিলেই ত্বক আঠালো হয়ে যায়। ফলে সহজেই ধূলিকণা জমে। তাই বাইরে যাওয়ার সময় তেল মাখা উচিত নয়। তেল লাগানোর ভালো সময় হচ্ছে গোসলের পর। এ সময় ত্বকে সবচেয়ে বেশি জলীয় অংশ থাকে। আর এই জলীয় অংশকে অনেকক্ষণ ধরে রাখে তেল।
ঠাণ্ডা লেগে গেলে
বড়দের তুলনায় শিশুর ত্বক বেশ নাজুক। তাই ভালো কোনো কম্পানির বোতলজাত তেল ব্যবহার করা উচিত। এসব তেল রিফাইন্ড করা থাকে বলে অ্যালার্জির আশঙ্কা কম। স্বাভাবিক অবস্থায় শিশুর শরীরে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা ভালো। শিশুর ঠাণ্ডা লেগে সর্দি-কাশি হলে সরিষার তেল মাখা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে কালিজিরা ও রসুনের সঙ্গে সামান্য গরম সরিষার তেল আলতো করে ম্যাসাজ করলে ভালো। এতে শিশু সর্দি-কাশিতে আরাম পাবে।
ওর জন্য প্রসাধনী
শিশুদের উপযোগী প্রসাধনসামগ্রী শিশুর ত্বকে লাগানো উচিত। কারণ বড়দের প্রসাধনী শিশুদের ত্বকে মানিয়ে নিতে অসুবিধা হতে পারে। শুষ্ক আবহাওয়ায় লোশন ব্যবহার করতে পারেন। এটি শিশুর ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করবে। শিশুদের ত্বকের উপযোগী ভালো ব্র্যান্ডের লোশন কিনবেন। কেউ কেউ শিশুর পুরো শরীরেই পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করতে চান। এটাও ঠিক নয়। শুধু ঠোঁটে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করা ভালো। ওর কোমল ত্বকে প্রতিদিন সাবান দেওয়ার প্রয়োজন নেই। নিয়মিত গোসল করালেই ত্বক পরিষ্কার থাকবে। আর সাবান ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেছে নিন শিশুর ত্বকের উপযোগী সাবান। সাবানের ক্ষার যত কম তা শিশুর ত্বকের জন্য তত ভালো। শিশুর ত্বকে বড়দের সাবান না মাখাই ভালো।
খেয়াল করুন
* যাঁদের একজিমা আছে, তাঁদের অলিভ অয়েল ব্যবহার না করাই ভালো।
* শিশুর শরীরে কখনোই অ্যারোমেটিক তেল লাগানো উচিত নয়।
* একবারেই অধিক পরিমাণ তেল মাখার দরকার নেই। সামান্য তেল হালকা করে মাখাই ভালো।
source: kalerkantho