বাচ্চার হাত ও পায়ের যত্ন

বাচ্চা থেকে বুড়ো সকলেরই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা প্রয়োজন। আর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার প্রথম ও প্রধান শর্ত হলো হাত ও পায়ের সঠিক যত্ন নিশ্চিত করা। আর এ যত্ন শুরু হতে হবে শিশু অবস্থা থেকে।

শিশুর হাত পায়ের সঠিক পরিচর্যা নিশ্চিত করতে পারলে অনেক ধরনের রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

আর এসব দিক বিবেচনা করে বাবা ও মাকে কিছু অত্যাবশ্যকীয় করনীয় পালন করতে হয় যা শিশুদের হাত পায়ের যত্ন অনেকটাই নিশ্চিত করে।

বাচ্চার হাত ও পায়ের যত্নে করনীয়ঃ

১। নিয়মিত গোসল করানো
হাত ও পায়ের যত্নে গোসলের কোন বিকল্প নেই। বাচ্চাদের প্রতিদিন অবশ্যই একবার অন্তত ভালোভাবে সাবান বা বডি ওয়াশ দিয়ে গোসল করাতে হবে। গোসলের সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন হাত ও পা ভালভাবে পানি দিয়ে ধোয়া হয়া। নিয়মিত গোসল করানোর মাধ্যমে শিশুর ত্বক হবে মসৃণ। হাত ও পা থাকবে পরিষ্কার।

২। নিয়মিত নখ কাটা
অপরিষ্কার নখ শিশুদের জন্য এক প্রকার বিষের সমান। নখে থাকে অনেক ধরণের রোগের জীবাণু যা খাওয়ার মধ্য দিয়ে শিশুদের পেটের মধ্যে চলে যেতে পারে। তাই বাবা-মাকে শিশুদের নখের যত্নের প্রতি যথেষ্ট সজাগ থাকতে হবে। শিশুদের বাড়ন্ত নখ প্রতি নিয়ত কেটে দিতে হবে। যেহেতু শিশুরা নিজে নিজে নখ কাটতে পারবে না, তাই বাবা-মাকে এর যত্ন নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যাতে করে বাচ্চার নখ খুব বেশি লম্বা হতে না পারে এবং নখের ভেতর কোন রকম ময়লা আটকে না থাকে। শিশুরা সব সময় বিভিন্ন জিনিস নিয়ে খেলা করতে ভালবাসে। তাই নখের নিচে ময়লা আটকে থাকা কোন বিরল ঘটনা নয়। তাই শিশুর যত্নে বাচ্চার নিয়মিত নখ কেটে দেয়াই বাবা মায়ের জন্য সঠিক পরামর্শ।

৩। যে কোনো খাওয়ার আগে হাত ধোয়া
যে কোন কিছু খাওয়ার আগে ভালভাবে হাত ধোয়া একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। খাওয়ার সময় হাতের মধ্যে লুকিয়ে থাকা অনেক ধরণের জীবাণু আমাদের পেটের মধ্যে খুব সহজেই চলে যেতে পারে। তাই ছোটবেলা থেকেই শিশুদের খাওয়ার আগে ভালভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

৪। হাত ও পায়ে তেল বা বিভিন্ন ধরণের ক্রিম মালিশ করা
হাত ও পায়ের যত্নে বাজারে বিভিন্ন ধরণের তেল বা ক্রিম বা লোশন পাওয়া যায়। ভাল ব্র্যান্ড দেখে বাচ্চাদের উপযোগী পণ্য ব্যবহার করতে হবে। নিয়মিত তেল বা ক্রিম ব্যবহারে বিভিন্ন ধরণের জীবাণু থেকে হাত পায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।

৫। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে হাত পা ভালভাবে ধোয়া
রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে ভালভাবে হাত পা ধোঁয়া একটা অতিব গুরুত্বপূর্ণ একটা অভ্যাস। এতে করে শরীরের মধ্যে এক ধরণের শ্রান্তির ভাব আসে যা রাতে নিরবিচ্ছিন্ন ঘুমের সহায়ক।

৬। বেবি সোপ/শ্যাম্পু পানিতে হাত পা ভিজিয়ে রাখা
হাত ও পায়ের যত্নে সাবান বা শ্যাম্পু পানিতে হাত পা ভিজিয়ে রাখা খুব উপকারী। কিছুটা সময় এই মিশ্রণের পানিতে হাত পা ভিজিয়ে রাখলে হাত ও পায়ে লেগে থাকা ময়লা গুলো আস্তে আস্তে হালকা হতে থাকে। পরবর্তীতে হালকা গরম পানিতে ধুয়ে ফেললে পুরো শরীর খুব ফুরফুরে লাগে। তাই বাচ্চাদের ছোটবেলা থেকেই এই অভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা করা উচিৎ।

৭। ঋতুভেদে যত্ন
ঋতুভেদে হাত পায়ের যত্নের ধরণও কিছুটা পরিবর্তন হয়ে থাকে। যেমন শীতকালে হাত ও পা অনেকটাই রুক্ষ হয়ে যায়। এমন অবস্থায় হালকা গরম পানিতে হাত-পা ধুয়ে মইশ্চারাইজিং ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে করে হাত ও পায়ের শুকনো ভাব দূর হবে। অন্যদিকে গ্রীষ্মের দিনে বাচ্চাদের অনেক বেশি হাত পা ধোয়াতে হতে হয়। বিভিন্ন ঋতুতে ত্বকের অবস্থা বুঝে হাত-পায়ের যত্নের ধরণও কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে।

পরিশিষ্ট
শিশুর মনস্তাত্ত্বিক বিকাশে ছোটবেলা থেকেই বাচ্চার হাত-পায়ের যত্ন যে কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ সে ব্যাপারে আপনি কি যথাযথ ওয়াকিবহাল? হাত ও পায়ের যত্ন শিশুর রোগ প্রতিরোধে যে কতটুকু সাহায্য করে সে ব্যাপারে আপনি সচেতন তো ? শিশুর যত্নে বাবা-মাকে প্রথম এগিয়ে আসতে হয়। একজন আদর্শ পিতামাতার প্রধান দায়িত্ব শিশুর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা। আর হাত ও পায়ের সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে শিশুদের অনেক ধরনের রোগ বালাই থেকে দূরে রাখার বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলা ।

source: supermom

Sharing is caring!

Comments are closed.