আপনি কি বাচ্চার ক্ষতি করছেন? ডা. আবু সাঈদ শিমুল
ছোট শিশুকে নিয়ে আমাদের আনন্দের সীমা থাকে না। নতুন অতিথির আগমনে চারদিক যেন আলোকিত হয়। উন্মাদনারও যেন শেষ নেই।
কিন্তু আনন্দের আতিশয্যে অনেক সময় নিজের অজান্তে আমরা এমন কিছু করে বসি, যাতে শিশুর মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। নিচের আচরণগুলো থেকে মিলিয়ে নিন এসব ক্ষতিকর আচরণ আপনিও করেন কি না?
লাগামছাড়া সোহাগ নয়
বাচ্চাকে আদর না করে কি থাকা যায়! তবে লাগামছাড়া আদর যদি সোনামণির বিপদ ডেকে আনে, তা থেকে বিরত থাকতে হবে বৈকি। বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর অন্যতম কারণ ইনফেকশন।
তাই বাইরে থেকে এসে হাত-মুখ না ধুয়ে বাচ্চাকে কোলে নেওয়া বা চুমু দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। আগে জামা কাপড় পাল্টান, হাত-মুখ-ধুয়ে আসুন তারপর না হয় আদর করা যাবে। সোনামণি তো আছেই, ও তো আর পালিয়ে যাচ্ছে না!
জন্মের পর মধু কেন?
অনেকেই মনে করেন মধু বা চিনি খাওয়ালে শিশুর কথাও মিষ্টি হবে। এ ধারণা একেবারে ঠিক নয়। শিশুর জন্মের পর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন শাল দুধ। আর জন্মের পর শাল দুধ হলো শিশুর প্রথম টিকা। কারণ এতে আছে রোগ প্রতিরোধী উপাদান।
হাত ধরে ওঠানো বারণ
বাচ্চার ঘাড় শক্ত হতে তিন মাস সময় লাগে। তাই খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চাকে তুলে নেওয়ার সময় কখনো হাত ধরে ঝুলিয়ে যেন তোলা না হয়। ছোট্ট শিশুকে নিয়ে খেলার সময় ওকে এমনভাবে দুই হাতে ধরতে হবে, যেন হাত ছিটকে না পড়ে। হাত ছেড়ে শূন্যে খেলা করলে যে কোনো সময় বিপদ হতে পারে।
তীব্র বাজনায় শিশুর ক্ষতি
অনেকে শিশুকে হাসাতে তীব্র বাজনা ব্যবহার করেন। এতে শিশু হঠাৎ ভয় পেয়ে যেতে পারে, কানেরও ক্ষতি হতে পারে।
কাজল বা তিলক নয়
নজর না লাগার জন্য শিশুর কপালে ও চোখে তিলক বা কাজল দেন অনেকে। চোখের ইনফেকশনের জন্য দায়ী কাজল। তিলক দেওয়াও ঠিক নয়। এসবে শিশুর শ্বাসকষ্ট ও কাশি হতে পারে।
এটা কিন্তু ঠিক যে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ থেকেই ওপরের আচরণ বা কর্মকাণ্ডগুলো সবাই করে। তবে ক্ষতিকর দিক জানার পর পরবর্তীকালে আপনিও এসব থেকে বিরত থাকবেন নিশ্চয়।
লেখক : রেজিস্ট্রার, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল