শিশুর আচরণ কোনটা স্বাভাবিক আর কোনটা না তা নিয়ে কনফিউজড? তাহলে পড়ুন এই আর্টিকেল
এই নিয়ে আপনারা দুজনেই আছেন মহা চিন্তায়। সব সময় মাথার মধ্যে শুধু একটা চিন্তাই ঘুর ঘুর করে“আমার বাবুটা কি স্বাভাবিক?” তবে সত্যি কথা হল, আপনি যেমন আপনার বাবুকে নিয়ে চিন্তিত। আপনার আসে পাশে যত মা আছে প্রত্যেকের সাথে যদি আপনার কথা বলার সুযোগ হয় তাহলে এক এক ধরনের সমস্যার কথা শুনবেন।প্রত্যেকে তাদের বাবুর কোন না কোন বিহেভিয়ার নিয়ে কনফিউজড।
আপনার সন্তানের আচরণ সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়। সে অনেক দ্রুত নতুন নতুন দক্ষতা অর্জন করে এবং সাথে সাথে তার আচার-আচরণেরও পরিবর্তন আসতে শুরু করে। এই আর্টিকেলে ৬ মাস থেকে ২৩ মাস পর্যন্ত আপনার বাবুর আচরণ কেমন হওয়া উচিৎ সে বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে। আর অবশ্যই ১২ মাস বয়সের বাচ্চার আচরণ আর ২০ মাস বয়সের বাচ্চার আচরণ কখনই একই হবে না। এই জন্য আর্টিকেলকে দুই ভাবে ভাগ করা হয়েছে।
- ১ম গ্রুপঃ বাচ্চার বয়স ৬ সপ্তাহ – ১২ মাস
- ২য় গ্রুপঃ বাচ্চার বয়স ১৩ মাস– ২৩ মাস
১ম গ্রুপঃ
- নিজেস্ব স্বত্বাঃনিজের মত করে সবে মাত্র ভাবা শুরু করবে। নিজস্ব একটা ছন্দ এবং কৌশল থাকবে।
- পরিবর্তনঃখুব দ্রুত তার মধ্যে পরিবর্তন আসবে। তার অনুভূতি, দেখা, শোনা, স্পর্শ, হাসি, কিছু স্বাদের পরিবর্তন আসবে।
- সামাজিকঃ মায়ের কোল তার কাছে সব থেকে নিরাপদ মনে করা শুরু করবে।অপরিচিত কোন মানুষের কাছ থেকে দূরে দূরে থাকবে। যে সব মানুষ তার সব সময় আসে পাশে থাকে তাদের প্রতি এক ধরনের বিশ্বাস তৈরি হবে।
- সাড়া দেয়াঃআপনার সাথে কথা বলার জন্য চেষ্টা করবে। মুখ, হাত এবং ইঙ্গিত দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন সে আসলে কি বুঝাতে চায়। আধ আধ কথা বলেও আপনাকে বোঝনোর চেষ্টা করবে। কখন যদি দেখেন বাচ্চা কোন শব্দের বিপরীতে সাড়া দেয় না অথবা পাশে অনেক জোরে কোন আওয়াজ হল কিন্তু সে নিশ্চিন্তে ঘুমায় আছে তাহলে ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
- উত্তরের আশা করবেঃতার দরকারি জিনিস গুলো নিজে নিজে খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে।নিজে কোন কথা বলার চেষ্টা করলে আপনার কাছ থেকে তার উত্তর আশা করবে।
- প্রকাশঃতার ভাল লাগা খারাপ লাগা গুলো কান্না, হাসি, মুখের ভঙ্গি এবং শরীরের হাত পা নেড়ে বোঝানোর চেষ্টা করবে।
- বিশেষ মানুষঃকোন এক বিশেষ মানুষের প্রতি তার আকর্ষণ অনেক বেশি থাকতে পারে। আপনি হয়ত অনেক ব্যস্ত একজন মা, এই জন্য একজন কে তাকে দেখা শোনার করার জন্য রেখে দিলেন। পরে দেখবেন, আপনার বাচ্চা আপনার থেকেও তাকে বেশি বিশ্বাস করা শুরু করছে। তার সাথে থাকতে তার ভাল লাগে। আপনার কাছে আসলে কান্না কাটি শুরু করবে।
- ঘুম ভাঙ্গার পরঃহঠাৎ হয়ত কোন কারণ ছাড়াই ঘুম থেকে উঠে পড়তে পারে এবং কান্না কাটি শুরু করে দিতে পারে। এইটা স্বাভাবিক চিন্তা করার কিছু নেই।
- খাওয়াঃআপনার বাচ্চা হয়ত প্রথম দিকে বুকের দুধ খাওয়াতে ঝামেলা হতে পারে এই জন্য আপনি বোতল ব্যবহার করতে পারেন। এইটা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু, যদি দেখেন আপনার বাচ্চা সত্যিই কিছু খেতে চায় না বরং খাওয়াতে চেষ্টা করলে কান্নাকাটি শুরু করে তাহলে চিন্তার বিষয়।
উপরের কোন কিছু যদি আপনার বাচ্চার মধ্যে দেখা যায়, তাহলে চিন্তা করার কিছু নেই। তবে, এর বাইরে কোন কিছু দেখা দিলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
২য় গ্রুপঃ
- একটু বেশি মনোযোগীঃআগের থেকে এখন আপনার বাচ্চা একটু বেশি মনোযোগী হয়ে উঠবে। তার কোন বিশেষ সংকেত, আওয়াজ যদি কেউ করে তার সাথে থাকার চেষ্টা করবে।
- ভাল মন্দঃকোনটা ভাল মন্দ, কোনটা খারাপ বুঝতে শুরু করবে। এই জন্য কখনই এই বয়সী বাচ্চাদের সামনে কোন প্রকারের ঝগড়া করা থেকে বিরত থাকুন। এই গুলো তাদের মনের উপর অনেক খারাপ প্রভাব ফেলে। আপনাদের ঝগড়া হয়ত আপনাদের দুজনের প্রতি তার খারাপ ধারণা চলে আসতে পারে।
- একটু দ্রুত কন্টাক্টঃএর আগে আপনি কোন কথা বললে সে একটু দেরিতে উত্তর দিত। এখন আগের থেকে একটু দ্রুত উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবে। শরীর এবং চোখের মাধ্যমে সে অনেক দ্রুত আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে যা তার আগে ছিল না।
- ভিন্নতাঃবিভিন্ন ধরনের রং, গঠন, শব্দ শুনেই বোঝার চেষ্টা করবে কোনটা কি জিনিস। যেমন সে আপনাকে কয়েক বার যদি দেখে আপনি সেল ফোন কারো সাথে কথা বলছেন তখন সে সেল ফোন নিয়ে কথা বলার ভান করতে পারে।
- স্পেশালঃকোন স্পেশাল মানুষের সাথে বেশি সময় কাটাতে চাওয়া। যেমন তার বাবা তাকে প্রত্যেকদিন সন্ধ্যা বেলায় চকলেট কিনে নিয়ে আসে। সে সন্ধার সময় বাবার জন্য অপেক্ষা করা শুরু করবে। তবে যদি বাসায় থাকে তাহলে বলার চেষ্টা করবে তার চকলেট কই।
- নির্ভরতাঃতার কখন কি লাগবে এইটা যে ভাল ভাবে বুঝতে পারবে চেষ্টা করবে তার সাথে সাথে থাকার জন্য।
- ঘুম এবং খাওয়াঃএকটা সময় ছিল যখন তার ঘুম এবং খাওয়ার কোন রুটিন ছিল না। কিন্তু, এখন সে আর অনিয়মিত নয়। দেখবেন আপনার মতই দিনে তিন বার খাওয়া, মাঝে মাঝে স্ন্যাকস এবং রাতে ঘুম। কখনও যদি দেখেন খাওয়াতে অরুচি অথবা ঠিক মত ঘুমাতে চায় না, তাহলে ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
উপরের বিষয় গুলো স্বাভাবিক। সুতরাং, উপরের কোন আচরণ যদি আপনার বাচ্চার মধ্যে দেখেন তাহলে চিন্তা করার কিছু নেই। এর ব্যাতিক্রম দেখলে ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। আর বাচ্চার সাথে সময় দিন। সব সময় মনে রাখবেন, আপনি আপনার বাচ্চার সব থেকে ভাল বন্ধু।