দিনের ঘুম: শিশুদের মেধাবী করতে সাহায্য করে
দিনে ঘুম পাড়লে শিশুদের মেধার বিকাশ ঘটে। এমন তথ্য দিয়েছেন গবেষকরা। সামপ্রতিক সময়ে এ বিষয়ে গবেষণা চালানো হয়।
শিশুদের দুপুরের ঘুমের অভ্যাস করা খুব ভালো। যতক্ষণ ঘুমাতে পারে ততই ভালো। মনে রাখবেন দুপুরের পরে আপনার শিশুর এ ঘুমটা ওর মেধা ও স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য চমৎকার কাজ করে। বিশেষ করে যেসব শিশু এখনও স্কুলে যাওয়া শুরু করেনি, তাদের জন্য এ ঘুম খুবই দরকারি। ব্যাপারটা জানা গেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। বিবিসি ও দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের উদ্ধৃতি দিয়ে দৈনিক সমকাল এ খবর দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস আমহার্স্টের গবেষকরা দেখেছেন, স্কুলে যাওয়ার আগে বাসায় শিশুদের শিক্ষণের যে প্রক্রিয়াটা মা-বাবার কাছ থেকে শুরু হয়, তা ভালোভাবে মাথায় ধারণ করতে হলে বিকেলের ঘুমটা তাদের চাই-ই। মনোবিজ্ঞানী রেবেকা স্পেন্সার এবং তার সহগবেষক দুই ছাত্রী ক্যাসি ডুক্লোস ও লরা কার্ডজায়েল বলেন, তাদের গবেষণার প্রতিপাদ্য হলো- দুপুরের পরে কমপক্ষে এক ঘণ্টা ঘুম শিশুদের প্রাথমিক শিখন ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তি সংগঠনে দারুণ কার্যকর।
খবরে বলা হয়েছে পশ্চিম ম্যাসাচুসেটসের এখনও স্কুল যাওয়া শুরু করেনি, এমন ৪০ শিশুর ওপর গবেষণা চালিয়েছেন রেবেকা স্পেন্সার। গবেষণার ফল উপস্থাপন করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এটার ওপর আমরাই প্রথম গবেষণা করেছি। আমরাই দেখিয়েছি, দুপুরের পরের ঘুমটা একটা বাচ্চার জন্য কোনো কিছু দ্রুত শেখা এবং তা মনে রাখার জন্য কতটা জরুরি।’
ওই গবেষণার অংশ হিসেবে শিশুদের সকাল বেলাটায় কিছু জিনিস শেখানো হয়। এটা ছিল অনেকটা ‘মনে রাখা-মনে রাখা’ খেলার মতো। এতে শিশুদের কিছু ছবি দেখানো হয়। তারপর বলা হয়,
এগুলোর মধ্যে কী ধরনের পার্থক্য আছে এবং সেগুলো ঠিক কোথায়, তা মনে রাখতে। অংশগ্রহণকারী শিশুদের দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এক ভাগ দিনের বেলায় ঘুমানোর সুযোগ পাওয়া আর বাকিদের দিনে ঘুমাতে দেওয়া হয়নি। যারা ঘুমিয়েছে, তাদের কমপক্ষে ৭৭ মিনিট ঘুমানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছে। রাতের বেলা অবশ্য তাদের স্বাভাবিক ঘুমই ঘুমাতে দেওয়া হয়। রাতের ঘুম তাদের পারফরম্যান্সের ওপর কোনো প্রভাব ফেলেছে কি-না।
গবেষণায় দেখা গেছে, বেশির ভাগ বিষয় ভুলে যাওয়াদের মধ্যে আগের দিন বিকেলে ঘুমোয়নি, এমন শিশুর সংখ্যাই বেশি। তাদের মধ্যে ৩৫ ভাগই ঠিকঠাক মতো মনে রাখতে পারেনি। আর যারা দিনের বেলা ঘুমিয়েছে, তাদের মধ্যে ঠিকঠাক মনে রাখতে পেরেছে এর সংখ্যা ৭৫ শতাংশ। সমপ্রতি ন্যাশনাল একাডেমী অব সায়েন্স সাময়িকী প্রসিডিংসে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণার ফল।
আর তাই গবেষকরা মত দিয়েছেন শিশুদের দিনের বেলায় ঘুম পাড়ানোর জন্য। নিয়মিত ঘুম পাড়লে শিশুদের মেধার বিকাশ যেমন ঘটবে, তেমনি সুস্থ্য সুন্দর জীবন যাপনে অভ্যস্ত হবে- এমনটাই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।