আপনার সন্তানকে যে কথাগুলো বলা উচিত!
পিতামাতার সাথে সন্তানের সম্পর্ক বন্ধুর মত হতে হয় যেন তাঁরা তাদের সব কথা একে অন্যের সাথে শেয়ার করতে পারে। যদি সন্তান পিতামাতার সাথে কথা বলতে লজ্জা পায় কিংবা পিতামাতার ব্যস্ততার জন্য যদি সন্তানকে সময় দিতে না পারেন, তাহলে সেটা সন্তানের জন্য মোটেই ভালো নয়। জীবনের গুরুত্ব পূর্ণ বিষয় গুলো সন্তানকে শেখানোর দায়িত্ব তাঁর পিতামাতার। শিশুর মন কাদা মাটির মত, তাই এই সময় সে যা শুনে এবং দেখে তা তাঁর মনে গেঁথে যায়। শিশুরা নিষ্পাপ ও সংবেদনশীল এবং ওদের স্নেহ ও মমতা দিয়ে বড় করতে হয়। পিতামাতার উচিৎ সন্তানকে পর্যাপ্ত সময় দেয়া। শব্দ অনেক বড় প্রভাবক। আপনার ছোট একটি বাক্যই তাকে আপনার প্রতি অনুগত হতে সাহায্য করবে, এর ফলে আপনি তাকে ভালো আচরণ শেখাতে পারবেন। আজ আমরা এমনই কিছু কথা জেনে নিই আসুন।
১। “সারা দিন তোমার কেমন কাটলো”?
সন্তানের প্রতিদিনের কাজের প্রতি পিতামাতার আগ্রহ প্রকাশ করা প্রয়োজন। সে যখন স্কুল থেকে ফিরবে অথবা রাতে খাওয়ার সময় আপনি তাঁকে আগ্রহ নিয়ে বলুন সারা দিন তোমার কেমন কাটলো? এতে সে বুঝবে যে আপনি তাঁর বিষয়ে অনেক আগ্রহী তখন সে আপনাকে সব কথা বলার আগ্রহ পাবে এবং বলবে যা শুনতে আপনারও খুব ভালো লাগবে।
২। “তুমি জয়ী হয়েছো”!
একটা উৎসাহদায়ক শব্দই আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিতে পারে বহুগুণ। যদি আপনার সন্তান কোন খেলায় জয়লাভ করে অথবা ছোট একটি ধাঁধাঁর সমাধান করতে পারে তাহলে তাকে বলুন তুমি জয়ী হয়েছো। এটা আপনার সন্তানকে সাফল্যের অনুভূতি দিবে যা তাকে জয়ী হওয়ার প্রেরণা যোগাবে।
৩। “আমি তোমাকে বিশ্বাস করি”
আপনি যখন এই কথাটি আপনার সন্তানকে বলবেন যে, ‘আমি তোমাকে বিশ্বাস করি’ তখন সে ও আপনাকে বিশ্বাস করা শুরু করবে। এর ফলে আপনার বিশ্বাসের অমর্যাদা হয় এমন কোন কাজ করতে সে অনেকবার ভাববে।
৪। “হাল ছেড়ে দিয়োনা”
‘হাল ছেড়ে দিয়োনা’ এই কথাটি বলে আপনি আপনার সন্তানকে ধৈর্যশীল হতে শেখাবেন। কোন কাজ একবার না পারলেই যেন সে হতাশ না হয়ে যায় এবং একটি কাজে বার বার চেষ্টা করেও যদি সে সফল হতে না পারে তাহলে কাজটি অন্য কোন পন্থায় করতে হবে, সেটা যেন সে চিন্তা করতে পারে এই বিষয়টি তাঁকে শিখাবে এই বাক্যটি।
৫। “না বলতে শেখান”
শিশু যখন বড় হতে থাকে তখন সে কী চায় এবং কী চায়না এই বিষয়ে যেন সিদ্ধান্ত নিতে পারে সেটা শেখাতে হবে। এতে করে আপনার সন্তান প্রফুল্ল থাকবে এবং মর্যাদা অনুভব করবে যার ফলে তার ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যতা তৈরি হবে। এর ফলে যদি কোন মানুষ তাকে জ্বালাতন করে সে তাদেরকে চিহ্নিত করতে পারবে। ভালমন্দের পার্থক্যটা যদি সে বুঝতে শেখে তাহলে সে ধরতে পারবে কোনটা তাঁর জন্য ভালো আর কোনটা তাঁর জন্য খারাপ এবং তাঁরা ঠিক পথে এগুচ্ছে কিনা এটা সব সময় খেয়াল রাখতে হবে বাবা মাকেই।
৬। “অন্যকে সাহায্য কর”
সামাজিক ও মানবিক আচরণ শেখানোর মূল দায়িত্ব ও বাবামায়ের। আপনার সন্তানকে বলুন অন্যের প্রয়োজনে সাহায্য করতে তাহলে সেও তাঁর প্রয়োজনে অন্যদের পাশে পাবে। অসহায় ও দুর্বল মানুষের পাশে দাড়াতে সেখান আপনার সন্তানকে। ভালো কাজের ভালো ফল এবং খারাপ কাজের খারাপ ফল মানুষকে ভোগ করতে হয় এই কথাটি তাকে বুঝিয়ে বলুন। এভাবেই সে মানবিকতা ও সামাজিকতার বিষয় গুলো বুঝতে ও শিখতে পারবে।
আপনি আপনার সন্তানকে যে বিষয় গুলো শিখাচ্ছেন সেই বিষয় গুলো আপনাকেও পালন করতে হবে না হলে আপনার প্রতি তাঁর আস্থা তৈরি হবেনা