শিশু কানে না শুনলে, চিকিৎসা কী? ডা. নাজমুল ইসলাম।

শিশুর কানে না শোনা বা বধির হওয়া একটি জটিল সমস্যা। তবে বর্তমানে অনেক আধুনিক চিকিৎসা রয়েছে যেগুলো শিশুকে পুরোপুরি স্বাভাবিক করতে পারে। আর আমাদের দেশেই রয়েছে এসব চিকিৎসা ব্যবস্থা।

ডা. নাজমুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের নাক কান ও গলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।

প্রশ্ন : কোনো শিশু যদি বধিরতায় আক্রান্ত হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে আমাদের দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা কী কী আছে?

উত্তর : বধিরতায় তো আমাদের শিশুরা আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছেই। আমাদের দেখতে হবে, তার বধিরতার পর্যায়, মাত্রাটা ঠিক কোন জায়গায় আছে।

কিছু কিছু বধিরতা আছে যেগুলো বিভিন্ন অসুখের কারণে হয়।  সেগুলো যদি সমাধানযোগ্য হয়, সমাধান করে দিতে হবে। যেমন : নাকের পেছনে ন্যাজোফ্যারিংস বলে একটি জায়গা আছে, সেখানে এডিনয়েড নামে লিম্ফোয়েড টিস্যু থাকে, সেই এডিনয়েড বড় হয়ে গেলে অনেক সময় কানের শোনার ক্ষেত্রে অসুবিধা হয়। সেটি যদি যথাযথ ব্যবস্থার মাধ্যমে অস্ত্রোপচার করে নেওয়া যায় বাচ্চাটা শুনতে পারে।

মধ্যকর্ণে পানি জমে গেল সেটি অস্ত্রোপচার করে পানি বের করে দিলে বাচ্চা শুনতে পারে। বাচ্চা শোনার ক্ষমতা আবার ফিরে পায়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় এসব ব্যবস্থা নিয়েও বাচ্চাকে স্বাভাবিক অবস্থায় আনা যাচ্ছে না। বেশ অনেকটা ক্ষতি হয়েছে যেটি অপূরণীয়। সেই ক্ষেত্রে তাকে কানে শোনার যন্ত্র দিয়ে দিতে হবে।

যারা একেবারেই শুনছে না বা যাদের শুনবার কোনো সুযোগ থাকে না তাদের জন্য বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ককলিয়ার ইমপ্লেন্ট প্রোগ্রাম চালু হয়েছে। এখানে তাদের কৃত্রিম একটি ককলিয়া বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই অস্ত্রোপচার বাংলাদেশে ইতিমধ্যে ১০০টির বেশি হয়েছে সাফল্য জনকভাবে।

এখানে স্পিচ থেরাপিস্টের কাছে পাঠাতে হয়, নাক কান ও গলা বিশেষজ্ঞদের দেখাতে হয়। সবাই মিলে একটি সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে, একটি দলগতভাবে কাজের মধ্য দিয়ে সেই বাচ্চাকে নতুন করে কথা বলতে শেখানো হয় এবং আমাদের সমাজের মূল শ্রোতে বাচ্চাটা চলে আসে। সেই ব্যবস্থাও এখন আমাদের দেশে আছে।

এখন যেটি প্রয়োজন সেটি হলো যথাযথ জায়গায় যাওয়া, রোগ নির্ণয় করা এবং রোগ নির্ণয় করার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া কার বেলায় কোনটি প্রযোজ্য। সঠিক জায়গায় যেতে হবে। সঠিক সময়ে যেতে হবে। আমরা যদি অনেক দেরি করে ফেলি তাহলে দেখা যাবে আমাদের মূল্যবান শিশুরা ভীষণ রকম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এখন আমরা যেহেতু জানি, বুঝি ও মিডিয়ার কল্যাণে সারা বাংলাদেশের মানুষ সহজেই বিষয়গুলো জেনে যেতে পারে, তাই চিকিৎসা করানোর ক্ষেত্রে সদিচ্ছাটাই বড়।

Source:ntv

Sharing is caring!

Comments are closed.