গর্ভাবস্তায় এমন কিছু অভ্যাস এবং খাদ্য বর্জন করতে হবে

আপনি কি মা হতে চলেছেন? হ্যাঁ! এই খবর জীবনে কেমন যেন পরিবর্তন এনে দেয়। তাই না? শরীরের ভিতর একটি ছোট্ট প্রাণ ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছে, এটা ভাবলেই কেমন যেন একটা শিহরণ জাগে। মনে রাখতে হবে, সেই ছোট্ট প্রাণটির বেড়ে ওঠা যেমন আনন্দের, তেমনই সে সুস্থ অবস্থায় ভূমিষ্ঠ হোক, এটাও কিন্তু আমাদের দায়িত্ব।

তাই গর্ভাবস্তায় এমন কিছু অভ্যাস বা খাদ্য বর্জন করতে হবে, যা আপনার এবং আপনার গর্ভের সন্তানের জন্য একদমই ভালো নয়। গর্ভাবস্তায় বেশ মুখরোচক কিছু খেতে ইচ্ছা করে তাই না? তাই বলে ফাস্টফুড যেমন খাওয়া উচিত নয়, তেমনি উচিত নয় অর্ধসেদ্ধ বা প্রায় কাঁচা মাংস খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করা। কারণ এই ধরণের খাবারে এমন কিছু জীবাণু এবং পরজীবী থাকে, যা খালি চোখে দেখা সম্ভব নয়। অথচ সেগুলি শরীরের ভিতরে মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে থাকে। তবে শুধুমাত্র কাঁচা মাংস নয়, গর্ভবতী এবং গর্ভধারণ দুই ক্ষেত্রেই মারাত্মক ক্ষতি করে বিড়ালও। লোমে ঢাকা আদুরে এই প্রাণীটি আমাদের শরীরের জন্য মোটেই ভালো নয়। টক্সোপ্লাজমা গনডাই নামক একধরণের পরজীবী গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে খুবই ক্ষতিকারক। কাঁচা মাংস ভাবি মায়েদের জন্য ক্ষতিকারক কেন? ঠিক মতো রান্না না হওয়া মাংসে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা মা এবং বাচ্চার শরীরে কুপ্রভাব ফেলে থাকে। প্রসঙ্গত, একই ধরনের ক্ষতি করে বিড়ালও। কিভাবে বিড়াল ভাবি মায়ের ক্ষতি করে?

টক্সোপ্লাজমা গনডাই এই ধরণের পরজীবী অপরিণত শিশুর জন্মের জন্য দায়ী। পরীক্ষায় জানা গেছে অর্ধসেদ্ধ মাংস এবং বিড়ালের বর্জ্য পদার্থে টক্সোপ্লাজমা উপস্থিত থাকে। বাড়িতে ব্যবহৃত বাসন পত্র ইত্যাদিতে এর থেকে টক্সোপ্লাজমা সংক্রমণের আশঙ্কা বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়। আর কি ধরণের ক্ষতি করতে পারে এই পরজীবী? টক্সোপ্লাজমা গর্ভপাতের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও গর্ভস্থ শিশুর জন্মগতি নানা সমস্যা যেমন, মস্তিষ্ক বা স্নায়ুর রোগ এবং চোখের নানারকম সমস্যা সৃষ্টি করে। এরা কি প্রাপ্ত বয়স্কদেরও ক্ষতি করতে পারে? সাধারণত গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে সংক্রমণের আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে। আর প্রাপ্ত বয়স্কদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকার জন্য টক্সোপ্লাজমার সংক্রমণ এবং তার উপসর্গ খুব কমই চোখে পরে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে জ্বর এবং গায়ে ব্যাথা দেখা দিতে পারে।

টক্সোপ্লাজমা সংক্রমণের উপসর্গ এই সংক্রমণের নানা উপসর্গের মধ্যে জ্বর, মাথা ব্যাথা, খিদের অভাব, ঘাড়ের ব্যাথা, গলা বসে যাওয়া, সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা, সারা গায়ে ফুসকুড়ি, বমি বমি ভাব, কানে এবং তলপেটে ব্যাথা অন্যতম। টক্সোপ্লাজমা সম্পর্কিত আরও কিছু তথ্য টক্সোপ্লাজমা একটি আণুবীক্ষণিক এককোষী পরজীবী এবং প্রটোজোয়া গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। এটি শরীরের কোষের মধ্যে সংক্রমিত হয়। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক মানুষ এই পরজীবীদের বহন করে। এমনকি বিড়ালও এর বাহক। এরা কি মস্তিষ্কের ক্ষতি করে? মানুষের ব্যবহারগত পরিবর্তনের জন্য টক্সোপ্লাজমা সংক্রমণ দায়ি বলে মনে করা হয়। যদিও প্রামাণ্য সমীক্ষার অভাব আছে। বলা হয় যে এরা মস্তিষ্কের ক্ষতি করে এবং আক্রান্তকে অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ করে তোলে। এমনকি মনে করা হয়, এই ধরণের পরজীবী কিছু ক্ষেত্রে স্কিৎজোফ্রেনিয়া হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে।

Source:tinystep

Sharing is caring!

Comments are closed.