লকডাউনে বাচ্চা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন? দেখে নিন দুষ্টু বাচ্চাকে শান্ত করার কিছু উপায়

করোনার কবলে পড়ে মানুষ আজ গৃহবন্দী। দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেল প্রায় দুই মাস।

অফিস, স্কুল-কলেজ, শপিং মল, পার্ক ইত্যাদি সমস্ত কিছুই বন্ধ। যার ফলে বেশি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে তার বাবা-মায়েদের ক্ষেত্রে। ডানপিটে সন্তানকে সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন বাবা-মায়েরা। COVID-19 এর দৌলতে বাড়ির চার দেওয়ালই হয়ে উঠেছে মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী। বাড়ি থেকেই অফিসের কাজ, অনলাইনে পড়াশুনা, অনলাইনে শপিং করা, এমনকি অনলাইনে ওষুধপত্র, বাজারহাট ইত্যাদি সেরে নেওয়া এখন অভ্যেসে পরিণত হয়ে গেছে।

বাইরে বেরিয়ে একটু আমোদ-প্রমোদ করার সুযোগটুকুও হারিয়েছি আমরা। করোনা ভাইরাসের কারণে বন্ধ হয়েছে বাচ্চাদের খেলাধুলা, হৈ-হুল্লোড়। সারাদিন বাবা মায়ের চোখের সামনে বসে থাকতে হচ্ছে তাদের। কথার অবাধ্য হলেই জুটছে চোখ রাঙানি। অন্যদিকে আবার সন্তানদের দুষ্টুমির ঠিকমতো অফিস ও বাড়ির কাজ করে উঠতে পারছেন না বাবা-মায়েরা। যার ফলে অশান্তি লেগেই থাকছে বাড়িতে, নষ্ট হচ্ছে বাড়ির পরিবেশ। সুতরাং এই লকডাউনে আপনি যদি আপনার সন্তানকে সামাল দিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন, তবে বোল্ডস্কাই এর পক্ষ থেকে সন্তানকে সামাল দেওয়ার জন্য রইল কিছু টিপস্,

যার মাধ্যমে অনায়াসেই আপনার সন্তানকে বশে আনতে পারবেন এবং বাড়ির পরিবেশকে ঠিক রাখতে পারবেন। দেখে নিন টিপসগুলি – ১) বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরুন সন্তানকে আদর ও ভালোবাসা দিয়ে বুঝিয়ে দিন বর্তমান সামগ্রিক পরিস্থিতির কথা। বিষয়টি সম্পর্কে বাচ্চাকে অবগত করান। এতে সন্তান কিছুটা হলেও বদলাতে পারে। ২) একটি রুটিন ঠিক করুন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এবং রাত্রে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত কোন সময় কী কী করবে তার একটি রুটিন তৈরি করুন। কতক্ষণ ঘুমাবে, কখন ঘুম থেকে উঠবে, কতক্ষণ পড়বে, কতক্ষণ টিভি দেখবে, কতক্ষণ খেলবে, কোন টাইমে ব্যায়াম করবে, কখন ঘুমাতে যাবে ইত্যাদির সময় নির্ধারণ করুন। এতে সন্তান নিজের দায়িত্ব নিতে ও নিয়মানুবর্তিতা মেনে চলতে শিখবে।

নজর রাখুন যাতে সে রুটিনটা মেনে চলে। করোনা ভাইরাস লকডাউন : এইসময় পিতা-মাতার ভূমিকা সঠিকভাবে পালন করুন, দেখে নিন কিছু টিপস্ ৩) মতামত নিন বাড়িতে যা কিছুই করবেন তাতে বাড়ির অন্যান্য সদস্যের পাশাপাশি আপনার সন্তানেরও মত নিন এবং বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করুন। যদি সন্তানের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেন, তবে তা নেওয়ার আগে কিছুটা তাদের মতামত গ্রহণ করুন। একেবারে অগ্রাহ্য করবেন না বা আপনার মত তাদের উপরে চাপিয়ে দেবেন না। এটি করলে আপনাদের প্রতি সন্তানের ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে। এই কঠিন সময়ে সন্তানও আপনাদের সাহায্য করবে।

৪) পুরস্কার ও তিরস্কার সন্তানকে বোঝান যে, কোন কাজটি করলে পুরস্কার পাওয়া যায় এবং কোনটি করলে কপালে তিরস্কার জোটে। যদি সে নিয়ম মেনে সমস্ত কিছু সঠিকভাবে করে নেয়, তবে পুরস্কার স্বরূপ তার পছন্দের খাবারটি বানিয়ে খাওয়াতে পারেন, কিংবা আধঘন্টার বেশি খেলা বা টিভি দেখার সুযোগ দিতে পারেন। এর ফলে দেখবেন, পরেরদিন থেকে সে নিজেই সবকিছু মেনে চলছে, আপনাকে বিরক্ত করছে না।

৫) অবসর সময় একসঙ্গে কাটান নিজের কাজ হয়ে যাওয়ার পর বাচ্চাকে নিয়ে নিজের মতো করে অবসর সময় কাটান। মোবাইল, গেম, টিভি ইত্যাদি থেকে দূরে রেখে নিজে কিছু গল্প পড়ে বা বলে শোনান। নিজের কিছু স্মৃতি সন্তানের সঙ্গে ভাগ করে নিন। ৬) একসঙ্গে ব্যায়াম করুন যখন সন্তানের ব্যায়াম করার সময়, সেই সময়টি আপনি ফ্রি থাকুন। সন্তান এবং আপনি একসঙ্গে শারীরিক ব্যায়াম করুন। এই সময় তাকে কখনোই একা হতে দেবেন না।

এতে বিপদ বাড়তে পারে। ৭) অন্যের সঙ্গে তুলনা অন্য বন্ধুদের সঙ্গে কখনোই নিজের সন্তানকে তুলনা করবেন না। এতে সন্তান মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। কোন বন্ধু ভালো করে পড়ছে, দুষ্টুমি করছে না, কাজে সাহায্য করছে, কিন্তু সে এগুলো কিছুই করছে না এমন কথা সন্তানকে বলবেন না।

নিন্দার পরিবর্তে কাজগুলি করার জন্য ইন্সপায়ার করুন। ৮) শাসন করবেন না এই খারাপ সময়ে সন্তানরা মানসিকভাবে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে। কারণ কবে স্কুল খুলবে, আবার কবে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে দেখা হবে, টিফিন ভাগ করে খাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া, এই সকল জিনিস তারা মন থেকে খুব মিস করছে। সুতরাং অল্প কিছুতেই কড়া শাসন বা বকা দেওয়ার পরিবর্তে তাদের ভালোবেসে বোঝান।
boldsky

Sharing is caring!

Comments are closed.