আপনার শিশুর র’ক্তচাপ জানা আছে তো?

র’ক্তচাপের ব্যাপারে আমরা সবাই আজকাল কমবেশী সচেতন। বয়স চল্লিশ পেরোলে বা একটু মাথাব্য’থা, ঘাড়ব্য’থা করলে নিয়ম করে প্রেশারটা মাপিয়ে নেই। কিন্তু পরিবারের ছোট ছোট সদস্যদের র’ক্তচাপ মাপার কথাটা কি মাথায় এসেছে কখনো?

অনেকটা অবচেতন মনেই আমরা কিছু রোগবালাইকে বয়স অনুযায়ী ভাগ করে ফেলি। জ্বর, সর্দিকাশি,

ডায়রিয়া – এগুলো ছোটদের আর ডায়াবেটিস, হাই প্রেশার এসব বড়দের অসুখ। কিন্তু না, শিশুদেরও র’ক্তচাপজনিত সমস্যা থাকতে পারে এবং বড়দের মত তাদেরও নিয়মিত র’ক্তচাপ মাপা প্রয়োজন।

বিশেষ করে যদি পরিবারে উচ্চ র’ক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা হৃদরোগের ইতিহাস থেকে থাকে তবে ছোটবেলা থেকেই র’ক্তচাপ মাপার অভ্যাস করতে হবে।

সচেতন ব্যক্তি মাত্রই জানেন যে রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী বা কম হওয়া দু’টোই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তবে উচ্চ র’ক্তচাপ তুলনামূলক বেশী বিপদজনক এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হৃদরোগের সাথে সম্পর্কিত। তাই শরীরের যে কোন অঙ্গের সমস্যা দেখা দিলেই, হোক তা কিডনী, চোখ বা হৃ’দপি’ণ্ড, র’ক্তচাপ নিরাপদ ও স্বাভাবিক মাত্রায় আছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে। এটি প্রাপ্তবয়স্কদের বেলায় যেমন প্রযোজ্য, তেমনি শিশুদের ক্ষেত্রেও।

শিশুদের স্বাভাবিক রক্তচাপ পূর্ণবয়স্কদের তুলনায় কিছুটা কম। তবে খেলাধুলা বা দৌড়াদৌড়ি বেশী করে বলে ছোটদের প্রেশার ওঠানামাও করে অনেক বেশী। তাদের র’ক্তচাপ মাপা বা পর্যবেক্ষণের সময় এ ব্যাপারটি মাথায় রাখতে হবে। অসাবধানতাবশত যদি শিশুর উচ্চ র’ক্তচাপ যথাসময়ে নির্ণয় না হয় তবে তার কিডনী, চোখ এবং হৃ’দপিণ্ডে’র উপর ক্ষ’তিকর প্রভাব হবে দীর্ঘমেয়াদী। তাই আপনার সন্তানের খেলাধুলা বা রোজকার ছুটোছুটিতে কোন পরিবর্তন হচ্ছে কিনা খেয়াল রাখুন। শ্বাসকষ্ট বা ওজন কমে যাওয়া এসব চোখে পড়লে সতর্ক হোন। সময়মত রোগ ধরা পড়লে জীবনযাত্রার একটু অভ্যাস বদলে বা যথাযথ চিকিৎসায় অনেক জটিলতা এড়ানো সম্ভব।

শিশুর র’ক্তচাপ মাপার বিষয়ে যে কথাগুলো মনে রাখতে হবে –

তিন বছর বা তার বেশী বয়সী প্রত্যেক বাচ্চার নিয়মিত র’ক্তচাপ মাপা প্রয়োজন। সাধারণ চেক-আপ বা টিকা দেয়ার জন্য ডাক্তারের কাছে গেলে মাপিয়ে নিতে পারেন।

দৌড়ঝাঁপ করতে থাকা শিশুকে ধরে এনে প্রেশার মাপলে সঠিক ফল আসবে না। আগে শান্ত করুন, তারপর মাপুন।

র’ক্তচাপজনিত সমস্যা পরিবারে আর কারো থাকলে আরো ছোট বয়স থেকে সাবধান হতে হবে।

শিশুর উচ্চ র’ক্তচাপ পাওয়া গেলে শুরু থেকেই ভালো লাইফস্টাইলে অভ্যস্ত করুন। ঘরে তৈরী স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার উপর জোর দিন। ওজন যাতে না বাড়ে সেজন্য ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রমে উৎসাহ জোগান।

র’ক্তচাপ মাপতে যেন বাচ্চা ভয় না পায় সেদিকে খেয়াল রাখুন। প্রেশার মাপুন খেলার ছলে।

মনে রাখতে হবে, শিশুর শারীরিক অবসাদ বা দুর্বলতাকে অবহেলা করা চলবে না। প্রয়োজনে শিশু বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন এবং সন্তানের নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করুন।
mytonic

Sharing is caring!

Comments are closed.