নবজাতকের বুক থেকে দুধ নিঃসরণ বা ডাইনীর দুধ (What Is Witch’s Milk?)
এই ঘটনাটি ছেলে কিংবা মেয়ে শিশু উভয়ের বেলায়ই হতে পারে। এদের মধ্যে কারো কারো স্তন থেকে আবার এই দুধ-সদৃশ তরল নিঃসরিতও হতে পারে। বিশ্বের কিছু কিছু অঞ্চলের সংস্কৃতিতে এই স্ফীত স্তন ও জমে থাকা কিংবা নিঃসৃত দুধকে ডাইনীর দুধ (Witch’s Milk)বলা হত। এর পিছনে বিভিন্ন লোকগাথাও প্রচলিত ছিলো, যেমনঃ বাবা মায়ের চোখের আড়ালে এসব বাচ্চার কাছ থেকে অপদেবতা কিংবা ডাইনিরা দুধ চুরি করে খেয়ে নিতো বলেই স্তনে দুধ জমে থাকে। এগুলো নিতান্তই গল্প-গাথা।
ক্লিনিকাল পরিভাষায় একে নবজাতকের গ্যালাক্টরিয়া (Galactorrhea of newborn)বলা হয়। মায়ের শরীরের কিছু হরমোনের আধিক্যের কারণে, তা মায়ের কাছ থেকে বাচ্চার শরিরে আসতে পারে, যার কারণে যে দুধটি শিশু পান করছে, তার কিছুটা তার বুকেও জমতে পারে। সাধারণত, নিয়মিত মায়ের দুধ পান করা এবং পুর্ন মেয়াদে জন্ম নেয়া বাচ্চাদের মধ্যে এটি দেখা যায়, এবং প্রি-ম্যাচিওর বাচ্চার মধ্যে এই সমস্যাটি লক্ষ্য করা যায় না। অনেক সময় এটি এক দুই মাস থাকে, তারপর চলে চলে যায়। এর জন্য কোন ওষুধ কিংবা ট্রিটমেন্টের প্রয়োজন নেই, যদি না অন্য কোন অস্বাভাবিকতা দেখা যায়- যেমন, লাল হয়ে ফুলে যাওয়া , র্যাশ কিংবা ঘা হয়ে যাওয়া অথবা পুঁজ বা রক্ত জমা/বের হওয়া। এসব ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হয়ে প্রয়োজনীয় পরিক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে।
পরিশেষে বলছি, স্ফীত নিপল এবং সেখান থেকে দুধ নিঃসরণ কিংবা জমে থাকা নিতান্তই স্বাভাবিক ঘটনা। তবে, নিশ্চিন্ত হবার জন্য এ ধরণের কিছু লক্ষ্য করলে বাচ্চার পেডিট্রিশিয়ানকে দিয়ে চেক করিয়ে নিতে ভুলবেন না। এসব ক্ষেত্রে কোনোভাবেই পুঁজ –গালা কিংবা চাপ দিয়ে কিছু বের করার চেষ্টা করা একেবারেই অনুচিত। এর ফলে প্রচণ্ড ব্যাথা পাওয়া থেকে শুরু করে মারাত্মক পর্যায়ের ইনফেকশান হয়ে যাতে পারে। এ বিষয়টি অবশ্যই আপনার বাড়ির অন্যান্য সদস্য, বয়স্ক–ব্যাক্তি এবং বাচ্চা দেখাশোনা কিংবা কাজের লোকদের ডাক্তারের রেফারেন্স দিয়ে ভালোভাবে বুঝিয়ে বলুন-যেন কোনভাবেই কেউ এ ধরনের কাজ না করে।
Source: fairy land