চঞ্চল শিশুর খাবারদাবার

চঞ্চলতা শিশুর স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। তবে কখনো কখনো তা মাত্রা ছাড়িয়ে যায়, সামলে রাখা মুশকিল হয়ে পড়ে। ঘরে-বাইরে নানা বিব্রতকর ও বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পড়তে হয় কোনো কোনো শিশুকে নিয়ে। এ ধরনের শিশুদের হাইপার অ্যাকটিভ শিশু বলে অভিহিত করা হয় আজকাল। আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়, একটু বেশি দুষ্টুমি করলেও এসব হয়তো বড় কোনো সমস্যা নয়, বড় হলে সব ঠিক হয়ে যাবে।

কিন্তু দেখা গেছে, এ ধরনের শিশুদের কিছু অভিন্ন সমস্যা থাকে। এদের কথা প্রায়ই অস্পষ্ট। এরা লবণ খেতে ভালোবাসে। যকৃৎ ও কিডনির সমস্যা থাকা বিচিত্র নয়। রক্তে অ্যামোনিয়া ও ল্যাকটিক অ্যাসিড পরীক্ষা করলে অস্বাভাবিকতা পাওয়া যায়। তাই ধারণা করা হয়, এই অতি অমনোযোগ ও চঞ্চলতার পেছনে জৈব রাসায়নিক উপাদানগুলোর কোনো ভূমিকা থাকতে পারে।

তাই বিজ্ঞানীরা আজকাল বলছেন, এ ধরনের শিশুদের ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনলে ফল পাওয়া যায়। যেসব শিশুর রক্তে অ্যামোনিয়া বেশি, তারা ক্ষারধর্মী খাবার এড়িয়ে চলবে। আবার যাদের ল্যাকটিক অ্যাসিড বেশি, তারা দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার কম খেলেই ভালো। ক্ষারধর্মী খাবার হলো সব ধরনের ডাল, শাক, কিছু ফল (জাম্বুরা, আমড়া, লেবু, কমলা ও মাল্টা), শুঁটকি মাছ, চিংড়ি মাছ, বাদাম, অতিরিক্ত লবণ, সয়াসস, টমেটো সস, আচার, নারকেল ইত্যাদি। এ ছাড়া কোমল পানীয়, চকলেট এদের উপসর্গ বাড়িয়ে দিতে পারে। হাইপার অ্যাকটিভ শিশুদের পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। কড লিভার অয়েল এদের ক্ষেত্রে উপকারী প্রমাণিত হয়েছে।

শিশুর আচার-আচরণ ও মনোজগতের ওপর খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব অনেক। এ নিয়ে আরও গবেষণা চলছে। সুষম, স্বাস্থ্যকর ও সুশৃঙ্খল খাদ্যাভ্যাস দেহের মতো শিশুর মনের জন্যও যে দরকার, তা এখন প্রমাণিত সত্য।

Source: prothom alo

Sharing is caring!

Comments are closed.