শিশুর কোথাও কে’টে গেলে প্রাথমিক অবস্থায় কী করবেন?
প্রতিটি শিশুই কমবেশি কা’টা বা আঁ’চড় লাগার সমস্যায় পড়ে।
কাটা বা আঁচড় লাগা শুধু চামড়ার স্তর থেকে গভীরে হতে পারে। শিশুর কোথাও কেটে গেলে প্রাথমিকভাবে কী করতে হবে, আসুন জানি।
কাটা স্থান থেকে যখন রক্তক্ষরণ হতে থাকে, তখন সেই স্থানে জোরে চাপ প্রয়োগ করলেই অনেক সময় সেটি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এ ক্ষেত্রে চাপ প্রয়োগ করার জন্য পরিষ্কার কাপড় অথবা গজপ্যাড দিয়ে শক্ত করে বেঁধে দিতে হবে। আর যদি মাঝে কোনো কাপড় বা ব্যান্ডেজ না থাকে, তাহলে সরাসরি হাত দিয়েই চাপ প্রয়োগ করতে হবে। এভাবে র’ক্ত পড়া বন্ধ না হলে জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থা শুরু করতে হবে।
তবে মনে রাখতে হবে, এ ক্ষেত্রে ‘টুর্নিকেট’ ব্যবহার করা যাবে না। কেননা, ‘টুর্নিকেট’ হাত বা পা যেখানেই বাঁধা হোক না কেন, সেখানকার রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়ে সমস্যা সমাধানের বদলে আরো বেশি সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। উল্লেখ্য, টুর্নিকেট হচ্ছে সাধারণ শরীরের হাত-পা বাঁধার বিশেষ উপকরণ।
আঘাতপ্রাপ্ত স্থান পরিষ্কার করে ব্যান্ডেজ বাঁধতে হবে। প্রথমে কাটা জায়গাটি সাবান ও পানি দিয়ে খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। তারপর পুরো কাটা জায়গাটি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর বা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ক্রিম দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। কাটা যদি খুব বেশি গভীর না হয়, তাহলে সেখানে ‘বাটারফ্লাই ব্যান্ডেজ’ লাগিয়ে দেওয়া যায়। বাটারফ্লাই ব্যান্ডেজ হলো প্রজাপতি আকৃতির আঠাযুক্ত ব্যান্ডেজ। এটি কাটা চামড়ার দুই প্রান্ত কাছাকাছি নিয়ে আসে। এতে কাটাস্থান খুব সহজেই শুকিয়ে যায় এবং ক্ষতচিহ্নটি খুব চিকন ও সোজা হয়।
বাটারফ্লাই ব্যান্ডেজ লাগানোর পর কমপক্ষে দুদিন তাতে হাত দেওয়া উচিত নয়। কারণ, কাটা চামড়া একসঙ্গে লাগতে ও শুকাতে কমপক্ষে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগে।
তাই এ সময়ের মধ্যে ব্যান্ডেজ খুলতে গেলে আঘাত শুকানোর প্রক্রিয়াই উল্টো বিঘ্নিত হবে। শিশুকে ‘টিটেনাস বা ধনুষ্টংকারের প্রতিষেধক ঠিকমতো দেওয়া আছে কি না, খেয়াল রাখতে হবে। যদি শিশু টিটেনাসের বিরুদ্ধে টিকা নেওয়া সম্পন্ন না হয়ে থাকে, তাহলে শিশুকে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে বুস্টার ডোজ দেওয়াতে হবে।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ।
source: ntv