ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুর ঠান্ডা লাগলে কি স্যালাইন খাওয়ানো নিষেধ নাকি খাওয়ানো যেতে পারে?

স্বাভাবিকের চেয়ে ঘনঘন পাতলা পায়খানা হওয়াকে ডায়রিয়া বলে। ডায়রিয়া সাধারণত একটি ভাইরাসজনিত রোগ। ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে পানি ও লবণ জাতীয় পদার্থ বেরিয়ে গিয়ে পানি স্বল্পতা দেখা দেয়। ডায়রিয়ার সঙ্গে কখনো কখনো জ্বর, বমি কিংবা পেটের ব্যথাও হতে পারে।

শিশুকে স্যালাইন খাওয়াতে যে ভুল গুলো করা হয়:

ঠান্ডা লাগলে স্যালাইন খাওয়ানো নিষেধ কিনা?
অনেকের ধারণা, ঠান্ডা লাগলে বাচ্চাকে স্যালাইন খাওয়ানো যাবে না কিংবা স্যালাইন খাওয়ালে বাচ্চার কাশি হবে। এটাও সত্য নয়। স্যালাইন খাওয়ালে বাচ্চার ঠান্ডা লাগার কোনো সম্ভাবনা নেই। কেউ কেউ ঠান্ডা লাগার ভয়ে গরম পানিতে স্যালাইন বানান। গরম পানিতে স্যালাইনের উপাদানগুলোর গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়।

স্যালাই আক্রান্ত শিশুর মা খেলেই হবে?
ছোট শিশুর ডায়রিয়া হলে স্তন্যদানকারিণী মা নিজেই স্যালাইন খান, ভাবেন এতেই হবে। মা স্যালাইন খেলে শিশুর কোনোই লাভ হয় না। বাচ্চার ডায়রিয়া হলে তাকেই স্যালাইন দিতে হবে। শিশুর বয়স ৬ মাসের কম হলেও স্যালাইন খাওয়াতে বাধা নেই।

স্যালাইন ফিডারে ঢেলে খাওয়াবেন?
স্যালাইন তৈরি করে ফিডারে ঢেলে খাওয়ানো যাবে না। যত ছোট শিশুই হোক, বারবার পরিষ্কার চামচ দিয়ে খাওয়াতে হবে।

স্যালাইন কম মেশাতে হবে?
অনেকেরই বিশ্বাস, বাচ্চা ছোট বলে স্যালাইনের প্যাকেট পুরোটা না মিশিয়ে সামান্য পাউডার নিয়ে অল্প পানি দিয়ে বানানো যাবে। আাসলে স্যালাইনের প্যাকেটে যে উপাদান আছে, তা কাজ করতে হলে পুরো আধা লিটার পানি দিয়েই দ্রবণ তৈরি করতে হবে। পানি কিংবা স্যালাইন কোনোটাই কম-বেশি করে মেশানো যাবে না। বরং অল্প পানিতে বেশি স্যালাইনের গুঁড়া দিলে কাজ তো হবেই না, বরং কিডনির সমস্যা হতে পারে।

কী করবেন?
স্যালাইন বানানোর আগে সাবান দিয়ে হাত ধুতে ভুলবেন না। না খাওয়ানো স্যালাইন পরিষ্কার পাত্রে ঢেকে রাখবেন ও ১২ ঘণ্টা পর ফেলে দেবেন।

শিশুর ডায়রিয়া হলে ঘরে বসে বিশেষ যত্ন নিতে হবে। যেমন:

১. বার বার খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে।
২. বেশি করে তরল খাবার যেমন-ভাতের মাড়, চিড়ার পানি ডাবের পানি খাওয়াতে হবে।
৩. শিশুকে স্বাভাবিক খাবার খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে। অল্প অল্প করে বার বার খাওয়াতে হবে।
৪. যে সব শিশু মায়ের দুধ খায় তাদের ঘনঘন মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে।
৫. স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শ মোতাবেক জিন্ক খাওয়াতে হবে।

কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে:

১. যদি শিশু নেতিয়ে পড়ে বা অজ্ঞান হয়ে যায়।
২. যদি খিঁচুনী হয়।
৩. যদি শিশুর বেশী বেশী পায়খানা বা বমি হয়।
৪. যদি শিশু খাবার খেতে না পারে।
৫. শিশুর যদি চোখ বসে যায়।
৬. শিশুর পাতলা পায়খানায় যদি রক্ত থাকে।

Sharing is caring!

Comments are closed.