শিশুর কানে ইনফেকশন? ডা. মুজাহিদুল ইসলাম l

শিশুদের কানে ইনফেকশন বেশি হয়। এর বড় কারণ, শিশুরা যখন কানে অসুবিধা বোধ করে তখন বড়দের তা বলতে পারে না বা বোঝাতে পারে না। ফলে রোগ অল্প থাকা অবস্থায়ই চিকিৎস শুরু সম্ভব হয় না। বিশেষ করে তিন বছরের ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা বেশি হয়। যখন কান দিয়ে পুঁজ বা পানির মতো আসে তখন সাধারণত শিশুকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে আসেন

দুই ধরনের ইনফেকশন বেশি হয়—

অটাইটিস এক্সটার্না

সাধারণত পানি ঢুকে এ ইনফেকশন হয়। গোসলের সময় বা সাতার কাটার সময় পানি কানে ঢোকে। সুইমিং পুল থেকেও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওই পানিতে ক্লোরিন থাকে বলে ইনফেকশনের মাত্রা বেশি হতে পারে। পানি ঢোকার কয়েক দিনের মধ্যে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়ে ইনফেকশন হয়।

অটাইটিস মিডিয়া

মূলত এটি মধ্যকর্ণের ইনফেকশন। সাধারণত এই ইনফেকশন কানের পর্দার পেছনে হয়। ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস উভয়টি দিয়েই এই ইনফেকশন হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অটাইটিস মিডিয়া হলে শিশুর শরীরে জ্বর থাকে। অনেক সময় কান থেকে পানি বা পুঁজও পড়ে।

বয়স তিন বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই সাধারণভাবে প্রতি ছয়টি শিশুর পাঁচটিই কোনো না কোনো ধরনের কানের ইনফেকশনের শিকার হয়।

লক্ষন

  • মধ্যম থেকে তীব্র মাত্রার কান ব্যথা
  • জ্বর
  • অস্থিরতা ও বিরক্তিভাব
  • মাথা ঘোরা
  • কান থেকে তরলের মতো কিছু নির্গত হওয়া
  • কম শোনা।

রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা

সাধারণত লক্ষন ও বর্ণনা শুনেই রোগটি সম্পর্কে চিকিৎসক নিশ্চিত হতে পারেন। কিছু ক্ষেত্রে কান থেকে বের হওয়া তরলের কালচার পরীক্ষা করে সংক্রমণকারী জীবাণু সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

অটাইটিস মিডিয়া সাধারণত ভাইরাস দিয়ে বেশি হয়। তাই আলাদা করে চিকিৎস করার সুযোগ নেই। শুধু ব্যথা ও জ্বরনাশক হিসেবে প্যারাসিটামল এবং আইবুপ্রফেন প্রয়োগ করতে হয়।

আর যদি তিন দিনের বেশি সময় ধরে প্যারাসিটামল ও আইবুপ্রফেন দেওয়ার পরও উপসর্গ না কমে তখন অনুমান করা হয় ব্যাকটেরিয়া দিয়ে ইনফেকশন হয়েছে। সে ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করতে হয়।

রোগ প্রতিরোধ

  • ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঠেকাতে সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করা উচিত।
  • সর্দিকাশি বা ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে শিশুকে দূরে রাখা।
  • গোসলের সময় ইয়ার প্লাক বা কানে পানি প্রবেশে বাধা দেয় এমন কিছু ব্যবহার করা।
  • শিশু কানে ব্যথা বা কোনো সমস্যার কথা বললে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ।

গ্রন্থনা : ডা. মুজাহিদুল ইসলাম

Sharing is caring!

Comments are closed.