শিশুর হাম : কী করবেন?

ইদানীং শিশুদের খুব হাম হচ্ছে। এর একটি বড় কারণ হলো অনেক অভিভাবক শিশুদের হামের টিকার ক্ষেত্রে এক ডোজ দেওয়ান। দুই ডোজ দেওয়ান না। আবার টিকার কোনো গলদ বা দেওয়ার সময় পদ্ধতিগত ভুলের কারণেও এমনটি হতে পারে।

হামের র‌্যাশ ওঠার ৩ দিন আগে এবং র‌্যাশ দেখা দেওয়ার  ছয়দিন পর পর্যন্ত মূলত হাম ছড়ায়। এই সময়ে কোনো শিশু হামে আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি আসলে তারও হাম হতে পারে। তবে কাছাকাছি যে আসতেই হবে, তাও নয়। কারণ, হাম হয়ছে এমন ব্যক্তি কোনো স্থান ছেড়ে চলে গেলেও বাতাসে হামের জীবাণু প্রায় এক ঘণ্টা পর্যন্ত সক্রিয় থাকে। এ কারণেই সময় মতো অর্থাৎ শিশুর নয় মাস পূর্ণ হলে এবং ১৫ মাসে হামের টিকা দেওয়া জরুরি। আগে একবার হামের টিকা দেওয়া হতো। কিন্তু একবার টিকা দিলে প্রায় ৯৩% সফলতার সম্ভাবনা থাকে। তবে  দুই ডোজ দিলে এটি বৃদ্ধি পেয়ে  ৯৭ % হয়। তাই দুই ডোজ টিকা দেওয়া জরুরি।

আবার টিকা দেওয়ার পদ্ধতিতে ভুল থাকলে কিংবা সরকারি অনুমোদনহীন কোনো হাসপাতাল থেকে টিকা দিলেও এর কার্যকারিতা নষ্ট হতে পারে। তবে টিকা দেওয়ার পরও হাম হয়ে গেলে এ নিয়ে খুব চিন্তিত হবেন না। এর চিকিৎসা বা জটিলতা সাধারণ হামের মতোই।

হাম হলে জ্বর হয়। সঙ্গে থাকে কাশি। এ ছাড়া নাক ও চোখ দিয়ে পানি পড়তে পারে। তিনদিন পর জ্বর সামান্য কমতে থাকে। আর তখনই দেখা দেয়  র‌্যাশ। মাথার পেছনে ও মুখ থেকে এই র‍্যাশ শুরু হয়ে শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। নির্দিষ্ট চিকিৎসা না থাকলেও এই রোগে প্রচুর পানি পান করাতে হবে। দুই বছরের কম বয়সীদের ঘন ঘন বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। এর সঙ্গে জ্বরের জন্য পেরাসিটামল দিলেই হলো। তবে হাম হওয়ার পরে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা  কমে যায়। তখন নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ইত্যাদি হতে পারে। এ দিকটা বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। হামে আক্রান্ত শিশুদের ভিটামিন ‘ এ ’- এর অভাব হয়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শে  ভিটামিন এ  খাওয়াতে হবে ।

লেখক : শিশু বিশেষজ্ঞ  ও কনসালটেন্ট, ঢাকা মেডিকেল ও মগবাজার ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতাল

Sharing is caring!

Comments are closed.