মায়েদের হাঁটুব্যথা ও প্রতিকার

চল্লিশ বছরের বেশি বয়সী অনেকের হাঁটুব্যথা করে। বিশেষ করে সকালে টয়লেটে বসলে অথবা হাঁটু ভেঙে নামাজ পড়লে বেশিরভাগ নারীর (মাসিক যাদের বন্ধ হয়েছে) হাঁটুব্যথা শুরু হয়। সাধারণত হাড়ক্ষয়জনিত সমস্যায় এমন হয়ে থাকে। এটি এক ধরনের বাতরোগ বা অস্টিওআর্থ্রাইটিস। এটি এমন এক চলমান রোগ যা মাঝে মধ্যেই দেখা দেয়। রোগী যখন প্রথম প্রথম ব্যথা অনুভব করেন, তখন হাঁটার সময় পায়ের ভারসাম্য এদিক-সেদিক করে ফেলেন। এতে হাঁটুর সংযোগস্থলের একটা পজিশনাল ফল্ট বা অল্প ডিসপ্লেসমেন্ট দেখা দেয়। এতে রোগী হাঁটু ভাঁজ করে বসতে পারেন না, সিঁড়ি বা উঁচু-নিচুতে উঠতে-বসতে কষ্ট হয়। অনেক সময় হাঁটুতে কটকট শব্দ বা টান অনুভূব হয়। এ জন্য দরকার সঠিক ম্যানুয়াল ও ম্যানুপুলেশন ফিজিওথেরাপি। তা রোগীকে হাঁটু ভেঙে বসতে সাহায্য করবে।

হাঁটুব্যথার কারণ : আর্থ্রাইটিসজনিত সমস্যা, আঘাতজনিত সমস্যায় স্পোর্টস ইনজুরি লিগামেন্ট বা টেন্ডন ইনজুরি, মিনিস্কাস ইনজুরি, প্যাটেলা ইত্যাদি। অনেক সময় কোমরের নার্ভ বা স্নায়ুর কারণে হাঁটুব্যথা হয়। টিউমার বা ক্যানসারজনিত কারণেও হাঁটুব্যথা হতে পারে।

ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা : ম্যানুয়াল থেরাপি যা রোগীকে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ভালো করে। জয়েন্ট জোড়া সঠিক অবস্থানে আনা। এর আরেক নাম মোবালাইজেশন উইথ মুভমেন্ট চিকিৎসা। ম্যানুপুলেশন থেরাাপি ডিপ ফ্রিকশন ও মায়োফেসিয়াল রিলিজ টেকনিক। এটি হাঁটুর উপর ও নিচের মাংসপেশি এবং লিগামেন্ট নরম করে। ফলে হাঁটুব্যথা কমে জয়েন্ট পাতলা অনুভূব হয়। আইসোমেট্রিক বা স্ট্রেনথেনিং এক্সারসাইজ ও স্ট্রেসিং এক্সারসাইজ যা হাঁটুর শক্তি এবং রেঞ্জ অব মুভমেন্ট বৃদ্ধি করে। ড্রাই নিডিলিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হাঁটুর শক্ত মাংসপেশি নরম করা হয়। তাই রোগী সহজে হাঁটু ভাঁজ করতে পারেন, হাঁটু ভেঙে টয়লেটে বসতে ও নিচু হয়ে বসে নামাজ পড়তে পারেন।

হাঁটুব্যথায় করণীয় : হাঁটুর তাপমাত্রা যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে বরফ বা ঠা-া সেঁক দেবেন। হাঁটুর তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকলে গরম সেঁক দিতে হবে। হাঁটু ফোলা থাকলে হাঁটাহাঁটি কম করে পায়ের নিচে বালিশ দিয়ে উঁচু করে রাখতে হবে। প্রয়োজনে নিকেপ ব্যবহার করতে হবে। হঠাৎ ব্যথা হলে পূর্ণ বিশ্রামে থাকুন ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

লেখক : ডা. সাপিয়া আকতার (পিটি)
কনসালট্যান্ট
ম্যানুয়াল অ্যান্ড থেরাপি ম্যানুপুলেশন থেরাপি সেন্টার।

Sharing is caring!

Comments are closed.