গর্ভধারণের পূর্ব প্রস্তুতির ১০ অত্যাবশ্যকীয় কাজ

আপনি নিশ্চয় যেকোন কাজ করার আগে দশবার ভেবে দেখেন। কোনটা ভালো? কেমন? কাজটা ঠিক হবে কিনা। এমন হওয়া আর করাটাই স্বাভাবিক এবং সঠিক। কিন্তু যখন কথা আসে আপনার জীবনের অন্যতম বড় সিদ্ধান্ত নেয়ার তখন কেন কোণ প্রস্তুতি নেই? আজ বিডি রমণী নিয়ে এলো গর্ভধারণের পূর্ব প্রস্তুতির ১০ অত্যাবশ্যকীয় কাজ। তাহলে জেনে নিন কাজগুলো।

আমাদের দেশে সন্তান নেয়ার আগে প্রস্তুতি গ্রহণের বলতে গেলে কোন নিয়ম নেই। যার কারণে বেশিরভাগ নারীরই সমস্যা হয়ে থাকে গর্ভধারণ করতে বা গর্ভ ধারণ করলেও অসুস্থ শিশুর জন্ম হয়। গর্ভধারণ কাল ও ডেলিভারি পর্যন্ত এবং একজন সুস্থ শিশুকে জন্ম দেয়া পর্যন্ত কিছু কাজ আপনাকে করতেই হবে। এছাড়াও নিজের মনে মনে সন্তানের জন্য প্রস্তুতি নিন। সন্তানের জন্য সঞ্চয় শুরু করুন, মনে মনে সন্তানের কল্পনা করুন। এগুলো আপনার মনকে প্রফুল্ল রাখবে। সন্তান গ্রহনের চেষ্টার সময় একটা মিনি হানিমুনও সেরে আসতে পারেন দুজনে। এটাও আপনাদের দাম্পত্য সম্পর্ক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হবে।

আপনার শরীরকে একটি সন্তানের জন্য প্রস্তুত করে তুলতে, সন্তানকে জন্ম দেয়ার ব্যাপারটিকে অনেক সহজ করে দিতে এবং আপনার শিশুটি যেন সুস্থ সবল ভাবেই পৃথিবীতে আসে সেটি নিশ্চিত করতে আপপ্নার ১০ টি কাজ করতে হবে।

আসুন জেনে নেই গর্ভধারণ প্রস্তুতির আগের ১০ টি কাজ কি কি –

১। আপনার ওজন যতই হোক দিনে অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করার অভ্যাস করে তুলুন। এই অভ্যাস আপনার শরীরকে ঝরঝরে ও সুস্থ সবল রাখবে, আপনি থাকবেন নীরোগ, সন্তান ধারণ ও ডেলিভারিকে অনেকটাই সহজ করে দেবে।

২। খাদ্যাভ্যাসকে একেবারে শুধরে ফেলে সঠিক খাদ্যাভ্যাস করুন যা আপনার উর্বরতা বাড়াতে সাহায্য করবে। ভাজা পোড়া ও অতিরিক্ত লবণ, রঙ, ফ্লেভার যুক্ত খাবার বাদ দিয়ে প্রচুর সবজি ও ফল খাবার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এখন আপনার প্রচুর প্রোটিন, ক্যালসিয়াম , মিনারেল, ফলিক এসিড ইত্যাদি প্রয়োজন।

৩। গর্ভধারণ করতে চাইলে আপনার দিনে ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক এসিড গ্রহণ করা প্রয়োজন। ফলিক এসিড নিয়মিত গ্রহণ করুন। এই ভিটামিনটি শিশুর অনেকগুলো জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধ করে থাকে। সবুজ শাক পাতা, টক জাতীয় ফলে প্রচুর ফলিক এসিড পাওয়া যায়।
তবে বেশিরভাগ নারীর ক্ষেত্রেই ট্যাবলেট খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। ডাক্তারের পরামর্শে মাল্টি ভিটামিন গ্রন করতে পারেন।

৪। ওজনের দিকে লক্ষ করুন। বেশী রোগা হলে বা বেশি মোটা হলে গর্ভধারণ করতে মারাত্মক সমস্যা হতে পারে। ওজন সঠিক হলে গর্ভ ধারণের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে। সাথে বাড়বে সহজে ডেলিভারি হবার সুযোগ। তাই নিজেকে সুন্দর একটি আকৃতি ও ভার দিন।

৫। আপনার কোন শারীরিক সমস্যা থাকলে চিকিৎসা করান, কারণ বাচ্চা পেটে আসার পর অনেক ধরণের ওষুধই আপনি আর গ্রহণ করতে পারবেন না। অন্যদিকে গর্ভধারণের পূর্বে আপনাকে কোন ভ্যাক্সিন নিতে হবে কিনা বা আরও কিছু করতে হবে কিনা সেটাও ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিন।

৬। দাঁতে কোন রকম সমস্যা থাকলে কনসিভ করার আগেই চিকিৎসা করিয়ে ফেলুন। কারণ গর্ভাবস্থায় দাঁতের চিকিৎসা করানো যায় না।

৭। মাছ মাংস খাওয়ার ব্যাপারে প্রচণ্ড সতর্ক থাকুন। খেয়াল রাখুন আপনার খাওয়া মাছ বা মাংস যেন খুব ভালো করে রান্না করা হয়। একই সাথে যেসব বড় মাছ অন্য ছোট মাছকে খায়, সেগুলো খাওয়া হতে বিরত থাকুন। কারণ এগুলোতে উচ্চ মাত্রায় মারকারি থাকতে পাড়ে, যা বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর।
তৃণভোজী ছোট মাছ খাবেন। আর ইয়া, টুনা ফিস জাতীয় মাচ খাবেন না একেবারেই!

৮। সন্তান গ্রহণ কুরতে চাইলে কনসিভ করার আগে ও পরে চা-কফি ও কোমল পানীয় পান করা ছেড়ে দিন বা একেবারেই কমিয়ে ফেলুন। আপনি ১২ আউন্সের এক কাপ কফি বা ৮ আউন্সের এক কাপ চা গ্রহণ করতে পারবেন দৈনিক, এর বেশি নয়। সম্ভব হলে ক্যাফেইন বিহীন চা কফি পান করুন বা দুধ সহযোগে পান করুন। লাল চা বা কালো কফি এই অবস্থায় ভালো নয়।

৯। ধূমপান ত্যাগ করুন অতি অবশ্যই।

১০। কোন প্রকার মাদক ও মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে ত্যাগ করুন।

Sharing is caring!

Comments are closed.