সন্তানকে ডিপ্রেশন থেকে বাঁচাতে বাবা-মা হিসেবে কী কী করবেন?

অবাক লাগলো কথাটা সত্যি প্রতি পাঁচজনের একজন কিশোর-কিশোরী অবসাদ বা ডিপ্রেশনে ভোগে। বিশেষত বয়ঃসন্ধির সময় তাদের মধ্যে এই সমস্যাগুলো গুরুতর আকার নেয়। এই সময় তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারেন তাদের বাবা-মায়েরাই।

এক কিশোর বা কিশোরীকে তার অবসাদ থেকে মুক্ত করার জন্য বাবা-মা হিসেবে আপনি কী কী করতে পারেন তারই কয়েকটি সহজ রাস্তা দেওয়া হল:

১। শখ পূরণে উৎসাহ দিন আপনার সন্তান কি গান গাইতে ভালোবাসে, বা ছবি আঁকতে? তাহলে তার শখ পূরণ করতে তাকে সাহায্য করুন। এতে পজিটিভ এনার্জি পরিমাণ বাড়বে। মন ভালো হবে। পছন্দের বিষয় নিয়ে সে যত ব্যস্ত থাকবে, তার মনের অবসাদ ততই কমবে। যদি আপাত ভাবে তার কোনও শখ না-ও থাকে, তাহলে কোনও শখ বা হবি তৈরি করতে সাহায্য করুন এবং নিরন্তর উৎসাহ দিন।

২। দরকার সঠিক ঘুম আপনার কি মনে হচ্ছে আপনার সন্তান অবসাদে ভুগছে? তাহলে ভালো করে লক্ষ্য করুন রাতে তার ঠিকঠাক ঘুম হচ্ছে কি না? ঘুম ভালো না হলে অবসাদ বাড়বে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাঁরা রাতে কম জাগেন, তাঁদের মধ্যে অবসাদের পরিমাণ কম হয়। তাই বাবা-মা হিসেবে চেষ্টা করুন সন্তানকে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে বাধ্য করতে। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানো এবং সকালে তাড়াতাড়ি ওঠা- অবসাদ কমানোর অন্যতম রাস্তা। পরিসংখ্যান বলছে, যাঁরা রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যান এবং সকালে তাড়াতাড়ি উঠে পড়েন, তাঁদের মধ্যে পজিটিভ এনার্জির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। মন খারাপকে তাঁরা অনেক সহজে কাটিয়ে উঠতে পারেন।

৩। দরকার স্বাস্থ্যচর্চা আপনার সন্তান কি আদৌ স্বাস্থ্যসচেতন? তা যদি না হয়, তাহলে তাকে বাধ্য করুন স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে উঠতে। নিয়মিত এক্সারসাইজ বা ব্যয়াম করার জন্য সময় বেঁধে দিন। যারা নিয়মিত যোগাসন বা এক্সারসাইজ করেন, তাঁদের শরীরে সেই সমস্ত হরমোনের ক্ষরণ অনেক বেশি হয়, যেসব হরমোন মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। বলাই বাহুল্য এতে অবসাদ বা ডিপ্রেশনের পরিমাণ কমে।

৪। ভালো ঘটনাই মনে রাখুক প্রতিদিনই এমন অনেক ঘটনা ঘটে, যার অনেকগুলো মানুষের মনের ওপর ভালো প্রভাব ফেলে, অনেকগুলো খারাপ অনুভূতি দেয়। বাবা-মা হিসেবে আপনি সন্তানকে পরামর্শ দিন, যাতে সে ভালো অনুভূতির কথাগুলো শুধু মনে রাখবে। খারাপগুলো ভুলে যেতে পারবে। এতে তার মধ্যে পজিটিভ এনার্জি সঞ্চার অনেক বেশি হবে। তার ফলে অবসাদ বা ডিপ্রেশনের পরিমাণ অনেকটাই কমবে।

৫। নিজের ওপর বিশ্বাস থাকুক প্রত্যেক মানুষের মধ্যে কিছু না কিছু সহজাত ক্ষমতা থাকে। যে ক্ষমতাগুলোর ব্যবহার করে তাঁরা হয়ে উঠতে পারেন নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল। আপনার সন্তানের মধ্যে তেমনই অনেক ক্ষমতা আছে। সে হয়তো এখনও সেগুলো আবিষ্কার করে উঠতে পারেনি। বাবা-মা হিসেবে আপনার কর্তব্য সেই কিশোর বা কিশোরী পাশে দাঁড়ানো। তার ক্ষমতাগুলো তাকে চিনতে সাহায্য করা। সেই সঙ্গে নিজের ভবিষ্যৎ আরও সুন্দর করে সাজিয়ে তোলার পরামর্শও দিন তাকে। তাহলেই হয়তো কমে যাবে তার মনের অনেকখানি অবসাদ।

boldsky

Sharing is caring!

Comments are closed.