ব্রেন স্ট্রোক থেকে সাবধান! (সবার জন্য গুরত্বপূর্ন আর্টিকেল জেনে রাখুন)

আমাদের দেশেটা যেন দিনে দিনে সব ধরনের মারণ রোগের আঁতুড় ঘর হয়ে উঠেছে। একটাও “কিলার ডিজিজ” বাদ নেই। সব এসে ঘর বেঁধেছে এদেশে। এদিকে ডায়াবেটিস কোপ মারছে, তো অন্যদিকে উচ্চ রক্তচাপ বাড়াচ্ছে স্ট্রোকের আশঙ্কা। এমন পরিস্থিতিতে বাঁচার উপায় কী আছে কেউ বলতে পারেন! “নলেজ ইজ পাওয়ার”। তাই স্ট্রোকের মতো রোগকে যদি হারাতেই হয়, তাহলে এই রোগের সম্পর্কে সব রকমের তথ্য আপনার কাছে থাকা উচিত, তবেই কিন্তু এই মারণ রোগকে ধোপি পাছার দেওয়া সম্ভব হবে, না হলে নিজেই হবেন হসপিটাল বন্দি! কী সেই তথ্য, যা স্ট্রোকের খপ্পর থেকে আমাদের বাঁচাতে পারবে? এক্ষেত্রে প্রথমেই জানতে হবে জীবনযাত্রায় কী কী পরিবর্তন আনলে এমন সব রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারবে না। একবার যদি এ সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন, তাহলেই কেল্লাফতে! প্রসঙ্গত, হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের মতে কতগুলি নিয়ম মেনে চললে স্ট্রোকের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে তলানিতে এসে দাঁড়ায়। এক্ষেত্রে যে যে নিয়মগুলি মেনে চলা জরুরি, সেগুলি হল…

১. ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে: স্ট্রোক এবং ব্লাড প্রেসার হল একে অপরের সোল সিস্টার। তাই তো একবার যদি শরীরে হাই প্রেসারের মতো রোগ এসে বাসা বাঁধে, তাহলেই কেলো! কারণ সেক্ষেত্রে ব্রেনে রক্ত সরবরাহকারী শিরা-উপশিরায় চাপ বাড়াতে থাকার কারণে স্ট্রোকের সম্ভাবনাও বারে। তাই খেয়াল রাখবেন রক্তচাপ যেন কখনও ১২০/৮০ এর উপর না যায়। এর উপর গেলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না যেন!

২. ওজন কমাতে হবে: একাধিক গবেষণায় একথা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়ে গেছে যে ওজন বাড়তে থাকলে নানা কারণে রক্তচাপে ওটা-নামা করা শুরু করে। সেই সঙ্গে আরও সব লাইফস্টাইল ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। আর একবার যদি কোনও লাইফ স্টাইল ডিজিজ শরীরে এসে বাসা বাঁধে, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই স্ট্রোকের আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।

৩. মদ্যপান একেবারে বাদ দিতে হবে: বেশ কিছু গবেষণা অনুসারে  মদ্যপান করলে  অনেক বেশি ক্ষতি আর এমনটা হলে স্বাভাবিকভাবেই ব্রেন স্ট্রোকের আশঙ্কাও বাড়তে শুরু করে। তাই কম বয়সে পঙ্গু হতে না চাইলে মদ্যপান করা বাদ দিতে হবে। সেই সঙ্গে ধূমপানের ঝোঁক থাকলে সে বিষয়েও লাগাম টানতে হবে। এমনটা করলে দেখবেন সুস্থ জীবনের পথ প্রশস্থ হবে।

৪. আর্টারিয়াল ফাইব্রিলিয়েশন যেন না হয়: নানা কারণে হার্ট বিট ওটা নামা করলে ছোট ছোট ব্লাড কল্ট তৈরি হয়। সেই ক্লট মস্তিষ্কেকে পৌঁছে গেলে ব্রেনে রক্ত সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটে। ফলে স্ট্রোকের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই অনেকদিন ধরে যদি মাথা ঘোরা, ক্লান্ত লাগা, অল্পতেই হাঁপিয়ে পরা এবং বুকে যন্ত্রণা হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

৫. ডায়াবেটিসের চিকিৎসা জরুরি: দীর্ঘদিন ধরে রক্তে সুগারের মাত্রা বেশি থাকলে ধীরে ধীরে রক্ত সরবরাহকারী ধমনিদের কর্মক্ষমতা কমে যেতে শুরু করে। ফলে রক্ত সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটতে থাকে। এমনটা যদি মস্তিষ্কের অন্দরে হয়, তাহলে শিরার মধ্যে ব্লাড ক্লট তৈরি হতে থাকে। আর এমনটা হওয়ার মানেই স্ট্রেকের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাওয়া। তাই ভুলেও ডায়াবেটিসকে হালকা ভাবে নেবেন না।

৬. রসুন খেতে হবে প্রতিদিন: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে এই প্রকৃতিক উপাদানটির অন্দরে এত সব উপকারি উপাদান আছে, যা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর পাশপাশি উপকারি কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্ট্রোকের আশঙ্কা কমে। প্রসঙ্গত, প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে, খালি পেটে এক কোয়া করে রসুন খাওয়া যদি শুরু করতে পারেন, তাহলে কিন্তু দারুন উপকার মেলে।

স্ট্রোকের লক্ষণ: ন্যাশনাল স্ট্রোকের অ্যাসোসিয়েশনের বিশেষজ্ঞদের মতে মস্তিষ্কের অন্দরে ছোট ছোট স্ট্রোক হতে থাকলে সাধারণত যে যে লক্ষণগুলি প্রকাশ পেতে থাকে, সেগুলি হল- শরীরের একদিকে দুর্বল লাগা, মুখে অসাড় হয়ে যাওয়া, প্রচন্ড মাথা যন্ত্রণা হওয়া, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, হাঁটতে কষ্ট হওয়া প্রভৃতি। এমন কোনও লক্ষণ দেখা গেলে যত শীঘ্র সম্ভব হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ করবেন। কারণ এই রোগের ক্ষেত্রে প্রতিটি মিনিট কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ।

স্ট্রোকের কারণ: ব্রেনে ঠিক মতো রক্ত পোঁছতে না পরলে মস্তিষ্কের অন্দরে পুষ্টির অভাব ঘটতে শুরু করে। আর এমনটা দীর্ঘ সময় ধরে হতে থাকলে স্ট্রোকের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, আরও নানা কারণে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেমন-ঠিক মতো খাওয়া-দওয়া না করা, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান, ডায়াবেটিস, ওবেসিটি, ইরেগুলার হার্টবিট, হার্টের ভাল্বে ক্ষত, ব্লাড ক্লট প্রভৃতি।

Source:boldsky

Sharing is caring!

Comments are closed.