চকলেট, চিপস শিশুর জন্য কতটা অপকারী? ডাঃ আবু সাঈদ শিমুল – ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শিশু বিভাগ

চকলেট, চিপস, আচার, চানাচুর, ফাস্টফুড ইত্যাদি বাইরের খাবার শিশুর খাবারের রুচিকে অনেকটাই নষ্ট করে দেয়। তাই এ ধরনের খাবার শিশুকে খাওয়ানো থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৯১২তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. আবু সাঈদ শিমুল। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

প্রশ্ন : চকোলেট, চিপস এসব খাবারের কারণে কি শিশুর রুচি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে? এই বাইরের খাবার কতটুকু ভূমিকা পালন করে শিশুর খাবার খাওয়ার রুচি কমাতে?

উত্তর : দেখা যায়, অভিভাবকরা শিশুকে আদর করে চিপস দিয়ে দিচ্ছে। এসব চিপসে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যেগুলো খেলে বাচ্চারা অনেকক্ষণ পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে পারে। একটি নেশাও হয়ে যায়। এই চিপসের মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলোর কারণে তার আরো চিপস খেতে ই্চ্ছে করে। ধরেন, আমি যদি ১২টায় চিপস খাই, ১টা-১টা ৩০ মিনিটের দিকে ভাত আর খাব না। সুতরাং মায়েদের অবশ্যই আচার, চকোলেট, চিপস, জুস, চানাচুর, বাইরের শিঙ্গাড়া, ফাস্টফুড ইত্যাদি এড়িয়ে যেতে হবে। তাহলে আমার মনে হয় শিশু ঘরের খাবার খাবে।

আরেকটি বিষয় রয়েছে। দুধ নিয়ে কিছু প্রশ্ন থাকে। অনেকে জিজ্ঞেস করেন, কোন দুধ খাওয়াবেন? একটি বিষয় তৈরি হয়েছে, অনেকে ভাবেন দুধের মধ্যেই বোধ হয় পৃথিবীর সব ভিটামিন রয়েছে। আমরা বলি, দুধ হলো ঘরে দেওয়া রঙের মতো। আপনি খুব দামি রং নিয়ে আসলেন, তবে ঘর হলো বেড়ার। তো সেই বেড়ার ঘরে তো আর দামি রং দিয়ে লাভ নেই।

একটি ঘরের জন্য কী দরকার? ইট, বালু, সিমেন্ট, রড। এগুলো কী? এগুলো হলো ভাত, মাছ, মাংস, সবজি। আমরা যদি একটু তাকাই দেখব যে যেসব মানুষ রিকশা চালায়, তারা তো প্রতিদিন দুধ খায় না, তাদেরও তো শক্তি রয়েছে। কারণ ভাত, সবজি এগুলো খাচ্ছে। তাই এগুলো আগে দিনে দুই বা তিনবার খাওয়াতে হবে। এরপর আপনি দিনে যেকোনো সময় এক গ্লাস দুধ খাওয়ান। এক বেলা এক গ্লাস দুধ খাওয়ালে যথেষ্ট। দেশীয় যে খাবার, ভাত, মাছ সেগুলো খাওয়াতে হবে।

আরেকটি প্রবণতা তৈরি হয়েছে কোয়েকার্স খাওয়াবে। কোয়েলের ডিম খাওয়াতে হবে। এর কোনো প্রয়োজন নেই। ব্রকলির চেয়ে ফুলকপির পুষ্টিগুণ কম নয়। আমাদের যে দেশীয় খাবার, সহজ ভাষায় যাকে বলি ‘বাড়ির হাঁড়ির খাবার’, সে খাবার একটু নরম করে খাওয়াতে হবে।

একেবারে ব্লেন্ডারে দেবেন না। বাচ্চা তো বড় হয়, তার মাড়ি শক্ত হয়, দাঁত ওঠে- এসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। তাকে অবশ্যই একটু শক্ত খাবার দিতে হবে।

চিবানো বলে একটি প্রক্রিয়া রয়েছে, বাচ্চাকে এটি শেখাতে হবে। সাত-আট মাস পর থেকে যদি এভাবে না শেখানো হয়, তাহলে বাচ্চা আর খেতে চাইবে না।

source: ntv

Sharing is caring!

Comments are closed.