বেশি শীতে শিশুকে গোসল নয়

মাঘের শীতে নাকি বাঘ পালায়! বাঘ পালানোর মতোই শীত পড়েছে এবার। তীব্র এই শীতে শিশুদের অবস্থা খুবই নাজুক, কারণ এমন আবহাওয়ায় সহজেই তারা আক্রান্ত হয় সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়ায়। তাই এই সময় নিতে হবে বাড়তি সতর্কতা।

বেশি শীতে বাড়ির বাইরে বের না হওয়াই ভালো। এমনিতে বাচ্চাকে একদিন পরপর গোসল করান। খুব বেশি  ঠান্ডয় গোসল না করিয়ে গরম পানিতে পাতলা কাপড় ভিজিয়ে সারা শরীর মুছিয়ে দিতে পারেন। বিশেষ করে মুখ, বগল, কুচকি, মলদার ও প্রস্রাবের রাস্তার চারপাশটা দ্রুত মুছে দিতে পারেন।

একটু বড় বাচ্চাদের ঠান্ডা থেকে বাঁচাতে খুব মোটা কাপড় না পরিয়ে কয়েক স্তরের কাপড় পরান। বাইরে বের হলে হাতমোজা, কানটুপি তো পরাবেনই, আর বাসাতেও স্যান্ডেল পরান।

তীব্র শীতে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রাখুন। নবজাতকের শরীরে কাঁথা দিলে খেয়াল রাখবেন মুখ, নাক ঢেকে শ্বাস যেন বন্ধ না হয়ে যায়। আমরা সবসময় বলি, বাচ্চা ঘুমিয়ে থাকলেও তাকে একা রাখা যাবে না। ঠান্ডা থেকে বাচ্চাকে বাঁচাতে রুম হিটারও ব্যবহার করতে পারেন। হিটার কিন্তু বাচ্চার কাছাকাছি রাখবেন না। এতে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। রুম হিটার কিনলে এবং তা বেশি চালালে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসতে পারে। তাই  ঠান্ডা  থেকে বাঁচার  সব চেয়ে ভালো ও সাশ্রয়ী  উপায় হলো নবজাতকের জামা খুলে  মায়ের  বুকের কাছে কাপড়ের নিচে তাকে ঢুকিয়ে দেওয়া। কেঙ্গারু মাদার কেয়ার নামের এই পদ্ধতি  নবজাতকের  শরীর উষ্ণ রাখতে খুবই  উপযোগী।

বড়রা বাইরে থেকে এসেই বাচ্চাকে কোলে না নিয়ে আগে কাপড় পাল্টে পরিষ্কার হয়ে তারপর বাচ্চার কাছে যান। সাবান দিয়ে হাত ধোয়াটাও জরুরি। প্রচণ্ড শীতে বাচ্চার ত্বকে লোশন ব্যবহার না করে ভেসলিন বা ক্রিম লাগান, মুখ ছাড়া অন্যত্র অলিভ অয়েলও  লাগাতে পারেন।

ঠান্ডা আবহাওয়ায় বাচ্চাদের জ্বর ও কাশির বেশির ভাগই ভাইরাসজনিত। জ্বরের জন্য পেরাসিটামল, কাশির জন্য নরসল নাকের ড্রপ  দিলে, আর  নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়ালে বেশির ভাগ রোগই  ভালো হয়ে যায়। জটিলতা হলে নিজে ওষুধ না কিনে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের কাছে যান।

কখন ডাক্তার দেখাবেন 
• খুব বেশি জ্বর বা শ্বাস কষ্ট হলে।

• খিচুনি বা অজ্ঞান হয়ে গেলে ।

• বারবার বমি হলে বা কিছুই খেতে না পারলে।

• এক মাসের নিচের বাচ্চাদের সামান্য কাশি বা জ্বর হলেও ডাক্তার দেখাতে হবে।

লেখক : রেজিস্ট্রার, শিশু বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

collect:ntv health every day program

Sharing is caring!

Comments are closed.